চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে কৃষক না হয়েও প্রদর্শনীভুক্ত কৃষকদলের প্রধান হিসাবে বীজ, যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া যায়।
ইউনিয়ন কৃষি ব্লকের ১৫ সদস্যর মধ্যে প্রধান হিসাবে নিজ পরিবারের ৬ সদস্য নাম অন্তভুক্ত করে অর্থ আত্মসাৎ করে কথিত কৃষক জহিরুল ইসলাম। আর তার সাথে আতাত করে সুযোগ গ্রহন করছে ইউনিয়নের কর্মরত (এসএএও) কামাল হোসেন পাটোওয়ারী।
সরেজমিনে গিয়ে এমন অনিয়মের চিত্র পাওয়া যায়, উপজেলার ১১ নং হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের প্রদর্শনীভুক্ত বীজ উৎপাদনের প্রাথমিক প্রতিবেদনে।
দেখা যায়, ইউনিয়নের পাতানিশ ব্লকের ১৫ সদস্য নিয়ে কৃষকদল গঠন করা হয়। কৃষক দলের প্রধান হচ্ছে পাতানিশ গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে মো. জহিরুল ইসলাম। তিনি তার স্ত্রী সামছুন্নাহার, ভাইয়ের বউ ফাতেমা বেগম, রোকেয়া বেগম, জেসমিন আক্তার ও আলেয়া বেগমসহ এই ৬ জনের নাম কৃষি ব্লকে অন্তভুক্ত করেছেন।
পাতানিশ গ্রামের প্রকৃত কৃষক রুহুল আমিন, চাঁদ মিয়াসহ ১২-০/১২ জন অভিযোগ করে বলেন, আমাদের এ কৃষি ব্লকের প্রধান জহিরুল ইসলামের কোন কৃষি জমি বা চাষাবাদ নেই। অথচ তিনি ব্লকের প্রধান হিসাবে নিজ পরিবারের ৬ জন ও তার খান বাড়ীর বাকী লোক দিয়ে ১৫ সদস্যের ব্লকের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।
সরকারি কৃষি যন্ত্রপাতি তার ঘরে। বীজ, কীটনাশক, ওষুধ, প্রশিক্ষণ ভাতাসহ সরকারি সকল সুযোগ সুবিদা তিনি ইউনিয়ন কৃষি উপ-কর্মকর্তা কামাল হোসেনের সাথে আতাত করে আতসাৎ করে আসছেন।
পাতানিশ কৃষি ব্লকের সদস্য কৃষক জলিল ও মোবারক এবং আলেয়া বেগম বলেন, শুনেছি আমাদেরকে সরকার প্রশিক্ষণ ভাতা, বীজ, কৃষি যন্ত্রপাতি এবং ফসল প্রদর্শনীর জন্য নগদ অর্থ দেয় কিন্তু আমরা কোন কিছুই চোঁখে আজ পর্যন্ত দেখিনা। ইউনিয়ন পরিষদের সামনে আমাদের ব্লকের প্রধান জহির মিয়ার দোকান, আর সেই দোকান থেকে আমরা বীজ, সার, কীটনাশক ক্রয় করে নিতে হয়।
পাতানিশ কৃষি ব্লকের প্রধান জহিরুল ইসলাম বলেন, আমার নিজের কোন জমিজমা নেই। ইউনিয়ন পরিষদের সামনে কৃষি কর্মকর্তা কামাল হোসেন আমার দোকানে বীজ উঠানোর অনুমতি দেওয়ায় কৃষকদের মাঝে তা বিক্রি করি।
পরিবারের লোকজনকে অন্তভুক্ত করার অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, ব্লকে নাম পুরানোর জন্য তাদেরকে অন্তভুক্ত করেছি এবং সবাই নিয়মিত প্রশিক্ষনে অংশগ্রহন করছে।
হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের কর্মরত (এসএএও) কামাল হোসেন পাটোওয়ারী বলেন, বছরে কয়টা প্রশিক্ষণ ও মিটিং হয়, সেখানে ১০ জন পুরুষ ও ৫ জন মহিলা নিয়ে ১৫ সদস্য দলভুক্ত কৃষি ব্লক গঠন করা হয়। মহিলার উপস্থিতির কারণে হয়তো ব্লক প্রধান নিজ পরিবারের লোক অন্তভুক্ত করেছেন। এখানে অর্থনীতিক সকল লেনদেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রদান করা হয়।
হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাজেদুর রহমান বলেন, ধান, পাট, গমের জন্য প্রদর্শনী দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে, সেখানে ব্লকের প্রধান জহিরুল ইসলাম যদি প্রকৃত কৃষক না হয়, সেই ক্ষেতে অবস্যই অনিয়ম হয়েছে। বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার বলেন, বিষয়টি আমলে নিয়ে যেন প্রকৃত কৃষক দিয়ে ব্লক গঠন করা হয় সেই ক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই দৃষ্টি দেব।
প্রতিবেদকঃজহিরুল ইসলাম জয়