Home / সারাদেশ / বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে হোটেলে ৭দিন ধরে তরুণী ধর্ষণ
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে হোটেলে ৭দিন ধরে তরুণী ধর্ষণ

বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে হোটেলে ৭দিন ধরে তরুণী ধর্ষণ

কক্সবাজার প্রতিনিধি|| আপডেট: ০২:৫৯ অপরাহ্ন, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫, শুক্রবার

উখিয়ার স্কুল ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে হোটেলে ৭দিন ধরে ধর্ষণ করার অভিযোগে আনোয়ার হোসেন নামক এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত যুবক লামা উপজেলার মোহাম্মদ হোছনের পুত্র। থানার তদন্তকারী অফিসার এস.আই সেলিম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন ছাত্রীর দায়েরকৃত মামলার অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তারপূর্বক গত মঙ্গলবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। যার মামলা নং ১১।

ধারা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশোধিত ২০০৩ এর ৭/৯ (১) তৎসহ ৩৭৯ দন্ডবিধি ধর্ষণের অভিযোগ। ধর্ষিতা স্কুল ছাত্রী মাহির মেডিকেল পরীক্ষার জন্য কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসে পাঠানো হবে বলে থানার অফিসার ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম খাঁন নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায় উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের পাইন্যাশিয়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী ফরিদ আলমের কন্যা ও পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীর সাথে মোবাইলে সম্পর্ক হয় লামা উপজেলার আনোয়ার হোসনের মধ্যে। ওই ছাত্রী জানান নিজেকে সেনাবাহিনীর অফিসার পরিচয় দিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে তার সাথে।

বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে কক্সবাজার কলাতলীস্থ ওশান ভিউ নামক একটি আবাসিক হোটেলে তুলে। ১২ নভেম্বর পর্যন্ত ৭দিন একটানা হোটেলে তাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে প্রতারক আনোয়ার। এক পর্যায়ে বিবাহ না করে মাহিকে বাড়ীতে তাড়িয়ে দেয়।

ওই ছাত্রী আরও বলেন এ অনাকাংখিত ঘটনার জন্য তিনি এস.এস.সি পরীক্ষায় মানষিক যন্ত্রণার কারনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। শিক্ষা জীবন নষ্ট ও হোটেলে আটকিয়ে রেখে সতীত্ব হরণ করায় আমি এখন এক অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ পার করছি।

এদিকে মেয়ের পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রতারক প্রেমিক আনোয়ার জালের ফাঁন্দে ফেলিয়ে ধর্ষিতা ফাতেমা ফারহানা মাহির বাড়ীতে এনে গত কয়েকদিন ধরে আটকিয়ে রাখে।

আটকিয়ে রাখার ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে র‌্যাব-৭ কক্সবাজার অফিসে অভিযোগ দায়ের করে ছেলের পক্ষের লোকজন। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে গত সোমবার সন্ধ্যায় র‌্যাব সদস্যরা কোটবাজার ষ্টেশন হতে সন্দেহজনক ভাবে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ছোট ভাই ব্যবসায়ী জয়নাল, ধর্ষিতার ভাই খালেক, সোহেল ও সাইফুলকে আটক করে নিয়ে যায়।

রাত সাড়ে ৯টার দিকে র‌্যাব সদস্যরা ২য় বার অভিযান চালিয়ে ধর্ষিতা ছাত্রীর বাড়ী হতে আটকে থাকা আনোয়ারকে উদ্ধার করে। একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, র‌্যাব সদস্যরা উদ্ধারকালে ওই যুবক প্রতারক হিসেবে জানতে পারে। এ সময় ওই ছাত্রী র‌্যাব সদস্যদেরকে বিয়ের নামে প্রতারণা ও ধর্ষণের ঘটনাটি খুলে বললে আসল ঘটনা উৎঘাটন হয়।

শুধু তাই নয় সেনাবাহিনীর অফিসার পরিচয় দিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলা ওই ব্যক্তি বিবাহিত এবং ৪ ছেলে-মেয়ের জনক। মূলত র‌্যাব সদস্যরা আটক প্রতারক যুবককে উদ্ধার করতে এসেই আসল ঘটনা ফাঁস হয়েছে বলে সচেতন এলাকাবাসীর অভিমত।

কক্সবাজার র‌্যাব ক্যাম্পে যোগাযোগ করা হলে জানান আটককৃতদেরকে রাতেই উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) হাবিবুর রহমান বলেন রাতে র‌্যাব সদস্য কর্তৃক আটক হওয়া যুবকগণ নিরাপরাধ হওয়ায় গতকাল দুপুরে জয়নাল, সোহেল, খালেক ও সাইফুলকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অপর দিকে স্কুল ছাত্রী বাদী হয়ে ধর্ষণ ও প্রতারণার মামলা দায়ের করায় আটক লামা উপজেলার আনোয়ার হোসেনকে গতকাল বুধবার জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

চাঁদপুর টাইমস/এমআরআর