বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম একটি আরবী বাক্যবন্ধ, যার অর্থ পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। সংক্ষেপে বলা হয় বিসমিল্লাহ্। পবিত্র কুরআন শরীফের ১১৪টি সূরার মধ্যে সূরা তওবা ব্যতিরেকে বাকি ১১৩টি সূরা শুরু করা হয়েছে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম” দিয়ে।
এছাড়া হাদীস থেকে জানা যায়, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) প্রতিটি কাজ শুরু করার আগে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম” বলে শুরু করতেন।
এ জন্য আল্লাহর নাম অর্থাৎ বিসমিল্লাহ বলেই সব কাজ শুরু করা উচিত। আল্লাহর অনুগ্রহ ছাড়া আমাদের কিছুই করার ক্ষমতা নেই। তার অনুগ্রহ-অনুকম্পা পেয়েই আমরা বেঁচে আছি। আর এই অনুগ্রহ-অনুকম্পা লাভের জন্য তিনি দিয়েছেন একটি বাণী, ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’।
তাফসির-ই-ইবনে আবি হাতিমে রয়েছে, ‘উসমান বিন আফফান (রা:) রাসূলুল্লাহ (সা:)কে ‘বিসমিল্লাহ’ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। তিনি উত্তরে বলেছিলেন, এতো আল্লাহ তায়ালার নাম।
আল্লাহর বড় নাম এবং এই বিসমিল্লাহর মধ্যে এতদূর নৈকট্য রয়েছে যেমন রয়েছে চুল কালো অংশ ও সাদা অংশের মধ্যে। ইবনে মরদুওয়াইর তাফসিরে রয়েছে, ‘রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, আমার ওপর এমন একটি আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে যার মতো আয়াত হজরত সুলাইমান ছাড়া অন্য কোনো নবীর ওপর অবতীর্ণ হয়নি। আয়াতটি হলো, ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’।
হজরত জাবির (রা:) বর্ণনা করেন, যখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয় তখন পূর্ব দিকে বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যায়, বায়ুমণ্ডল স্তব্ধ হয়ে যায়, তরঙ্গ বিক্ষুব্ধ সমুদ্র প্রশান্ত হয়ে যায়, জন্তুগুলো কান নাড়িয়ে শয়তানকে বিতাড়ন করে এবং বিশ্বপ্রভু স্বীয় সম্মান ও মর্যাদার কসম করে বলেন, ‘যে জিনিসের ওপর আমার এ নাম নেয়া যাবে তাতে অবশ্যই বরকত হবে। (তাফসির ইবনে কাসির)
বিসমিল্লাহ দিয়েই সব কাজ শুরু করতে হয়। কাজ ও কথার শুরুতেই বিসমিল্লাহ বলা মুস্তাহাব। হাদিসে এসেছে, যে কাজ বিসমিল্লাহ দ্বারা শুরু করা না হয় তা কল্যাণহীন ও বরকতশূন্য হয়। বিসমিল্লাহ দিয়ে শুরু করলে আল্লাহ তাকে করুণা করেন, হেফাজতে রাখেন ও কাজে বরকত দান করেন। এ বাক্যের মাধ্যমে কর্ম শুরু করলে শয়তানের অসওয়াসা থেকে মুক্ত থাকা যায়। এ জন্য আমাদের সকলের জন্য বিসমিল্লাহ হোক সব কাজের সূচনাধ্বনি।
।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ৬ :৪২ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০১৬, বুধবার
এইউ