আজ ২৩ মে বিশ্ব ফিস্টুলা সচেতন দিবস্ । দেশে প্রতি ৩ হাজার বিবাহিত মহিলার মধ্যে ৫ জন প্রসবজনিত ফিস্টুলায় ভোগছেন। এক রিপোর্ট মতে, বাংলাদেশে প্রতিবছর ২ হাজার নারী এ রোগে আক্রান্ত হচেছ।
চিকিৎসকদের মতে, জীবনভরই যন্ত্রণা ভোগ করে প্রসবজনিত ফিস্টুলা আক্রান্তরা। এ রোগীর সংখ্যা খুব বেশি না হওয়ায় সারাদেশে চিকিৎসাও সহজলভ্য নয়।
গ্রামাঞ্চলের অনেক মহিলা জানেও না চিকিৎসার মাধ্যমে এ যন্ত্রণাদায়ক রোগ থেকে মুক্তি সম্ভব। প্রসবজনিত ফিস্টুলা রোগ সম্পর্কে জনসচেতনা বৃদ্ধির জন্য সারাবিশ্বে প্রতিবছর ২৩ মে পালিত হয় ‘ফিস্টুলা সচেতনা দিবস’। বাংলাদেশেও এ দিবসটি পালিত হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ,বিশ্বে প্রায় ২০ লাখ নারী ফিস্টুলা রোগে আক্রান্ত । প্রতিবছর নতুন ভাবে প্রায় ১ লাখ নারী আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশসহ
দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলিতে এর হার বেশি।
গাইনী চিকিৎসকরা বলেন , মহিলাদের প্রসব পরবর্তী দীর্ঘমেয়াদি ভয়াবহ ও যন্ত্রণাদায়ক একটি স্বাস্থ্য সমস্যা হচ্ছে ফিস্টুলা। বিলম্বিত ও বাধাগ্রস্থ প্রসবের কারণে মায়ের প্রসব পথে সৃষ্ট ক্ষত বা গর্ত হচ্ছে প্রসবজনিত ফিস্টুলা। প্রসব পথে এ অস্বাভাবিক ক্ষতের কারণে অনবরত প্রস্রাব-পায়খানা বের হতে থাকে। ফলে এ রোগে আক্রান্ত নারীর জীবন হয়ে পড়ে দুর্বিষহ।
দুর্ভাগ্যের বিষয় এই যে-–অনেকে ব্যাক্তিগত লজ্জায় রোগের বিষয়টি গোপন রেখে তারা ডাক্তারের কাছে না গিয়ে বিভিন্ন বনাজী চিকিৎসা গ্রহণ করে । পরে রোগটি মারাত্মক পর্যায়ে চলে যায়। চিকিৎসকদের মতে, এ রোগ থেকে মুক্তির উপায় একমাত্র অপারেশন এবং একাধিকবার রোগীকে অপারেশনের মুখোমুখি হতে হয়।
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিশিষ্ট্য চিকিৎসক ডা. এ .কিউ.এম বদরোদ্দোজা চৌধুরী একটি টেলিভিশন চ্যানেলে ফিস্টুলা সম্পর্কে বলেছিলেন ,‘‘ অপারেশনই হলো ফিস্টুলার প্রধান চিকিৎসা। ’’
বাংলাদেশের ৪০% মানুষ বর্তমানে দারিদ্যসীমার নিচে বসবাস। এ সব পরিবারের মেয়েদের ১৫ বছরের মধ্যেই তাদের অনেকেরই বিয়ে হয় এবং ১৮ বছর পার হতে না হতেই তারা প্রথম সন্তান ধারণ করে থাকে। ্এদের বেশির ভাগই জানে না প্রসবÑপূর্ববর্তী, প্রসবকালীন ও প্রসব-পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলতাগুলি কি ক্ ি। আবার ৯০% প্রসব হচ্ছে তাদের নিজ ঘরেই ।
রোগের প্রাথমিক অবস্থায় শুধু চিকিৎসকদের পরামর্শ মত চলা ও সচেতন হলেই তারা এ থেকে মুক্তি পেতে পারে। অবস ও গাইনি চিকিৎসকদের মতে, ফিস্টুলা একটি নিরাময়যোগ্য শারীরিক সমস্যা।
বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে অদক্ষ দাইয়ের হাতে সন্তান প্রসবের জটিলতার কারণে অসংখ্য মা আক্রান্ত হচ্ছেন যন্ত্রণাদায়ক এ রোগে।তাই এ রোগীর সংখ্যা ক্রমশ:ই বেড়ে চলেছে। দেশে বিশেষায়িত এ রোগের চিকিৎসা খুবই অপ্রতুল। এ রোগের চিকিৎসার জন্য দেশের ১০টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রসবজনিত ফিস্টুলার চিকিৎসা, অপারেশন, পুনর্বাসন সীমিত আকারে করা হয় বলে জানা যায় ।
ডেস্ক থেকে সম্পাদনা- আবদুল গনি
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৪:৪০ এএম, ২৩ মে ২০১৬, সোমবার
ডিএইচ