আজ শুক্রবার কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। এই পর্বে অংশ নিয়েছেন মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিরোধী হিসেবে পরিচিত মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা।এ পর্যন্ত তিন মুসল্লির মৃত্যু
ভোরে ফজরের নামাজের পর পাকিস্তানের মাওলানা খোরশেদ আলমের আমবয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় এই পর্বের ইজতেমা। বেলা দেড়টায় জুমার নামাজ পড়াবেন মাওলানা জুবায়ের। ইজতেমায় যোগ দিতে এসে এ পর্যন্ত তিনজন মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। ইজতেমাকে ঘিরে দুই দিন আগে থেকেই মুসল্লিরা আসতে থাকেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুসল্লি আসেন গতকাল বৃহস্পতিবার।
প্রথম পর্বের ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়কারী জহির ইবনে মুসলিম বলেন, মুসল্লিরা বেশি থাকার কারণে গতকাল বৃহস্পতিবার বাদ আসর থেকেই বয়ান শুরু হয়। তিনি বলেন, আগামী রোববার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে প্রথম পর্বের ইজতেমা শেষ হবে।
তিন মুসল্লির মৃত্যু
এবারের ইজতেমায় এ পর্যন্ত তিনজন মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনে ও রাতে দুজন মুসল্লি ও আজ একজন মুসল্লির মৃত্যু হয়। তাঁরা হলেন মো. ইয়াকুব শিকদার (৭৫), মোহাম্মদ আলী (৭০), মোহাম্মদ খোকা মিয়া (৬০)। এর মধ্যে ইয়াকুব আলীর বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়, মোহাম্মদ আলীর চট্টগ্রাম ও খোকা মিয়ার বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায়। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, তিনজনই বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছেন।
মুসল্লিদের নিরাপত্তাব্যবস্থা
ইজতেমাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সাত স্তরে কাজ করবেন পুলিশের প্রায় ৮ হাজার সদস্য। পুরো ইজতেমার মাঠ ঘিরে থাকবেন র্যাব, বিজিবি ও আনসার সদস্যরা। পুলিশের নিজস্ব ১৬টি ওয়াচ টাওয়ারসহ র্যাবের নিজস্ব ওয়াচ টাওয়ার থেকে পুরো ইজতেমা পর্যবেক্ষণ করা হবে। এ ছাড়াও ইজতেমা মাঠের চারপাশে রয়েছে অসংখ্য সিসিটিভি ক্যামেরা। থাকবে পুলিশের হোন্ডা টিমসহ সাদাপোশাকের পুলিশ। তুরাগ নদেরও কয়েক জায়গায় অবস্থান করবেন পুলিশের সদস্যরা।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘যেহেতু দুটি পক্ষের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে, সেহেতু আমরা আগে থেকেই সব প্রস্তুতি নিয়েছি। এখন পর্যন্ত সার্বিক অবস্থা ভালো। আশা করছি বাকি ইজতেমাটুকুও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হবে।’
ইজতেমা ঘিরে প্রস্তুতি
গাজীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এবার পুরো ইজতেমায় কাজ করবে জেলা প্রশাসনের ৩০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত। মুসল্লিদের ব্যবহারের জন্য ৩১টি ভবনে রয়েছে ৮ হাজার ৩৩১টি শৌচাগার। ১৭টি গভীর নলকূপ দিয়ে পানি সরবরাহ করা হবে মুসল্লিদের। তিনটি গ্রিড থেকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। ৪টি শক্তিশালী জেনারেটর প্রস্তুত থাকবে। মুসল্লিদের পারাপারের জন্য ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীর ৭টি ভাসমান সেতু প্রস্তুত করা হয়েছে। মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ১০টি বিশেষ ট্রেন চালু করা হবে এবং সব ট্রেনের টঙ্গী রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতি দেওয়ার কথা রয়েছে। আর এবার পুরো ইজতেমাকে ৯১টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৪ জেলার লোকজন খিত্তা অনুসারে বসবেন। জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান করছি। আশা করছি, মুসল্লিদের কোনো কিছুতেই সমস্যা হবে না।’
স্টাফ করেসপন্ডেট