Home / জাতীয় / রাজনীতি / বিরোধীদল জাপা সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে… !
বিরোধীদল জাপা সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে

বিরোধীদল জাপা সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে… !

প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্যরা পদত্যাগ করে সংসদ থেকে বেরিয়ে গেলে বড় ধরনের চাপে পড়বে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এর ফলে একদিকে সংসদ বিরোধী দলহীন হয়ে যাবে।

অন্যদিকে দেশে-বিদেশে বর্তমান সরকারের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আরেক দফা প্রশ্ন দেখা দেবে। সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এমনটাই মনে করছেন।

তাদের মতে, বিরোধী দলের সদস্যরা পদত্যাগ করলে আপদকালীন সংকট এড়াতে শূন্য আসনে উপনির্বাচন দিয়ে পার পাওয়ার চেষ্টা করতে পারে সরকার। কিন্তু এ চেষ্টা কখনও গ্রহণযোগ্য ও দীর্ঘস্থায়ী হবে না। বরং ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার এবং সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে তাদের আগাম নির্বাচনে যেতে হবে।

তারা বলেন, তাই জাতীয় পার্টিকে ঘিরে রাজনীতির এ অংকে এরশাদকে পক্ষে রাখা ছাড়া সরকারের সামনে বিকল্প নেই। পার্টি চেয়ারম্যান এরশাদ ছাড়া জাতীয় পার্টির অন্য কেউ বা দলটির মধ্যে ভিন্ন কোনো গ্রুপ সৃষ্টির চেষ্টা করলে তা সরকারের জন্য হিতে বিপরীত হবে।

যদিও এ মুহূর্তে সংসদ থেকে পদত্যাগের কথা ভাবছে না প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। তারা আপাতত কার্যকর এবং শক্তিশালী বিরোধী দলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে আসার কথা ভাবছে। পার্টি চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নিজেও তাই চান।

বুধবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘জাতীয় পার্টির রাজনীতি স্পষ্ট করতে আমি মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে আসার কথা বলছি। সংসদ থেকে নয়। আমি চাই সংসদে এবং সংসদের বাইরে জাতীয় পার্টি কার্যকর বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করুক। এ জন্যই দলে এই পরিবর্তন। জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা এ পরিবর্তনে খুশি। এই সিদ্ধান্তে সবার মধ্যে নবজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে।’

জানা গেছে, জিএম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যান নির্বাচন, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে মহাসচিব পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে তার জায়গায় সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে পুনর্বহালসহ গত কয়েকদিনে জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো ভাবিয়ে তুলছে দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিকে।

এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও সার্বিক পরিস্থিতি নজরে রাখছে দুই প্রধান রাজনৈতিক দল। তবে আপাতত মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা বললেও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ এক সময় দলীয় সদস্যদের নিয়ে সংসদ থেকেও বেরিয়ে আসতে পারেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলসহ অনেকের মনে এমন আশংকা ক্রমেই দানা বাঁধছে।

আর সত্যিই যদি সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের নেতৃত্বে বিরোধীদলীয় সদস্যরা একযোগে পদত্যাগ করে সংসদ থেকে কখনও বেরিয়ে আসেন সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে- এমন প্রশ্নের জবাবে বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বুধবার বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বর্তমান সংসদ গঠিত হয়েছে। প্রথম থেকেই এ নির্বাচন এবং সংসদের নৈতিক ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করলে এ সংসদ এবং সরকারের আর কোনো নৈতিক ভিত্তি থাকবে না। সরকারেরও গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। তিনি বলেন, এতে করে সাংবিধানিক সংকট দেখা না দিলেও সৃষ্টি হবে রাজনৈতিক সংকট।

ড. শাহদীন মালিক আরও বলেন, নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল বিএনপি নির্বাচনে না এসে ভুল করেছে। তাদের তো কেউ নির্বাচনে আসতে বারণ করেনি। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখতেই এ নির্বাচন অপরিহার্য ছিল। কিন্তু জাতীয় পার্টি সংসদ থেকে বেরিয়ে গেলে তাদের আর বলার কিছু থাকবে না। তিনি বলেন, সংখ্যায় কম হলেও বিরোধী দল বিরোধী দলই। তারা সংসদে না থাকলে সংসদ বিরোধী দলহীন হয়ে যাবে। বিরোধী দলের সদস্যদের পদত্যাগের কারণে শূন্য হওয়া আসনগুলোতে উপনির্বাচন দিয়ে প্রাথমিক সংকট হয়তো সামাল দেয়া যাবে। কিন্তু এ সংকটের স্থায়ী সমাধান হবে না। সংকট আরও ঘনীভূত হবে।

এ বিষয়ে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ১২টি রাজনৈতিক দল ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নেয়। ফলে প্রথম থেকেই এ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ। এ নির্বাচনে ১৫৩ জন সংসদ সদস্য জয়ী হয়েছে বিনা ভোটে, যা নজিরবিহীন ঘটনা। এ ঘটনায় নির্বাচন আরও বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। তিনি বলেন, বলা হয়ে থাকে দেশে প্রধান দল চারটি- আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি এবং জামায়াত। এর মধ্যে বিএনপি ও জামায়াত নির্বাচনে অংশ নেয়নি। বাকি দুটি প্রধান দলের একটি সরকারি দলে। আরেকটি প্রধান বিরোধী দল। সেই বিরোধী দলও যদি সংসদ থেকে বেরিয়ে যায়, তাহলে সরকার এবং সংসদের বৈধতা, নৈতিকতা, গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সবার মনে প্রশ্ন উঠবে।

যদিও এ মতের বিরোধিতা করে সাবেক আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, ‘বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা সংখ্যায় খুবই সামান্য। তারা সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে সংসদ বিরোধী দলহীন হবে। কিন্তু এতে করে কোনো সাংবিধানিক সংকট দেখা দেবে না। সংবিধান অনুযায়ী শূন্য আসনে উপনির্বাচন হবে। এটাই বিধান। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।’

সংসদ সদস্যদের আসন শূন্য হওয়া সম্পর্কে সংবিধানের ৬৭ অনুচ্ছেদের ১-এর (খ) উপধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো সংসদ সদস্যের আসন শূন্য হইবে, যদি সংসদের অনুমতি না লইয়া তিনি একাধিক্রমে নব্বই বৈঠক-দিবস অনুপস্থিত থাকেন, (গ) সংসদ ভাঙিয়া যায় (ঘ) তিনি সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের (২) দফার অধীনে অযোগ্য হইয়া যান অথবা (ঙ) এই সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে বর্ণিত পরিস্থিতির উদ্ভব হয়।’ সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের (২) দফায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি (ক) কোন উপযুক্ত আদালত তাকে অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষণা করেন, (খ) তিনি দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর দায় হইতে অব্যাহতি লাভ না করিয়া থাকেন।’

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে রাজনৈতিক দল হতে পদত্যাগ বা দলের বিপক্ষে ভোট দেয়ার কারণে আসন শূন্য হওয়ার কথা বলা হয়েছে। এতে উল্লেখ রয়েছে, ‘কোন নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরূপে মনোনীত হইয়া কোন ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইলে তিনি যদি- (ক) উক্ত দল হইতে পদত্যাগ করেন, অথবা (খ) সংসদে উক্ত দলের বিপক্ষে ভোট দান করেন তাহা হইলে সংসদে তাহার আসন শূন্য হইবে।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সংবিধানের ৬৬, ৬৭ এবং ৭০ অনুচ্ছেদের বিধিবিধান ভঙ্গ না করলে কারও সদস্যপদ যাবে না। তবে সংবিধান অনুযায়ীই একজন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর সংসদের মেয়াদকালীন সময়ের যে কোনো সময় স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করার অধিকার রাখেন। সংসদ সদস্য স্বেচ্ছায় না পদত্যাগ করতে না চাইলে সেক্ষেত্রে তিনি যে রাজনৈতিক দল এবং দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছেন, সেই দলের প্রধান চাইলে পদত্যাগ করতে বাধ্য থাকবেন।

সংশ্লিষ্টদের মতে, রওশন এরশাদ বিরোধীদলীয় নেতা হলেও পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তার হাতে ন্যস্ত করা আছে সর্বময় ক্ষমতা। তিনি চাইলে বিরোধীদলীয় নেতাসহ তার দলের সংসদ সদস্যরা সংসদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য থাকবেন। এক্ষেত্রে পার্টি চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করার সুযোগ নেই কোনো সংসদ সদস্যের। কেউ উপেক্ষা করতে চাইলে পার্টি চেয়ারম্যান তাকে দল থেকে বহিষ্কার করতে পারবেন। আর দল থেকে বহিষ্কার করা হলে ওই সদস্যের সংসদ সদস্যের পদ থাকবে না।

এর সর্বশেষ উদাহরণ হচ্ছে, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কার্যনির্বাহী কমিটির সেই সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে অবহিত করেন। পরে স্পিকার বিষয়টি পাঠান নির্বাচন কমিশনারের কাছে। নির্বাচন কমিশন আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর বক্তব্য শোনার জন্য ডাকেন। কিন্তু বিধিবিধান অনুযায়ী সদস্য পদ খোয়া যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত জানার পর তিনি আগেভাগে স্বেচ্ছায় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বুধবার বলেন, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের বিষয়টি এখনও আলোচনায় আসেনি। অদূর ভবিষ্যতে যদি সরকারের ওপর অনাস্থার কারণ দেখিয়ে দলটির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করেন তাহলে সরকারের ইমেজ কিছুটা হলেও প্রশ্নের মুখে পড়বে। আর যদি দলীয় অভ্যন্তরীণ কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন সেটি ভিন্নভাবে গুরুত্ব পাবে।

তিনি আরও বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় জাতীয় পার্টি পদত্যাগ করলেও সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি হবে না। তবে রাজনৈতিক সংকট দেখা দেবে। সাবেক এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদের যদি দল থেকে পদত্যাগের বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত হয় এবং ওই সিদ্ধান্ত যদি দলটির কোনো সংসদ সদস্য উপেক্ষা বা অমান্য করেন তাহলে তার ক্ষেত্রে সংবিধানের ৭০ ধারা প্রযোজ্য হওয়ার কথা। তবে এক্ষেত্রে আইনের ব্যাখ্যার প্রয়োজন হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিতে যেমন প্রধান ফ্যাক্টর শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়া, তেমনি জাতীয় পার্টিতেও মূল ফ্যাক্টর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তাকে পাশ কাটিয়ে অন্য কাউকে প্রাধান্য দিলে ফল শুভ হবে না কারও জন্যই। দলীয় গঠনতন্ত্রেই এরশাদকে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা দেয়া আছে।

এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির নবনিযুক্ত মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, এরশাদ মানেই জাতীয় পার্টি। এরশাদ মানেই লাঙ্গল। এরশাদকে বাইরে রেখে জাতীয় পার্টিতে ফ্যাক্টর হওয়ার সুযোগ এ দলে আর কারও নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় পার্টির একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, শাসক দল আওয়ামী লীগকে বুঝতে হবে জাতীয় পার্টি নিয়ে যা করতে হবে সেখানে এরশাদের সমর্থন থাকতে হবে। তার সমর্থন ছাড়া কার্যত কিছু হবে না। কারণ জাতীয় পার্টিতে এরশাদই সবকিছুর ক্রীড়নক। অতীতে যারা তার বাইরে গেছেন তারা ছিটকে পড়েছেন। ভবিষ্যতেও তাই হবে। জাতীয় পার্টির আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, মহাজোট গঠনের সময় জাতীয় পার্টির অনেক শীর্ষ নেতা এতে যোগ দিতে চাননি।

কিন্তু এরশাদ শেষ মুহূর্তে মহাজোটে যোগ দিলে রাজনৈতিক দৃশ্যপট বদলে যায়। একইভাবে ‘৯৬ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে, তখনও জাতীয় পার্টির অনেকে চায়নি আওয়ামী লীগকে সমর্থন জানাতে। জেলে থেকেই এরশাদ সমর্থন জানালে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে নিয়ে ঐকমত্যের সরকার গঠন করে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের সময়ও এরশাদ চেয়েছিলেন সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন। তিনি একা এ নির্বাচনে অংশ নিতে চাননি। পরে ঘটনা যাই ঘটুক সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় তার নেতৃত্বেই জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেয়। অতএব এরশাদই জাতীয় পার্টির প্রথম ও শেষ কথা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, জাতীয় পার্টিতে তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তাকে পাশ কাটিয়ে কিংবা উপেক্ষা করে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ কারও নেই। তিনি আরও বলেন, ‘রওশন এরশাদ যদি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হন, তাহলে তো আমি থাকি না। আমি থাকতে কেউ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে পারেন না।’ সাবেক এ রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘জাতীয় পার্টিতে আমার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। গঠনতন্ত্রেই আমাকে সেই ক্ষমতা দেয়া আছে।’

এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির নবনিযুক্ত কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, ‘এরশাদ জাতীয় পার্টির প্রাণ। এরশাদই জাতীয় পার্টির শক্তি। আমাদের লক্ষ্য কেবল রাজনৈতিক ভূমিকা স্পষ্ট করা। তাহলেই জাতীয় পার্টি ঘুরে দাঁড়াবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এরশাদকে বাদ দিয়ে জাতীয় পার্টি অনেকেই করার চেষ্টা করেছেন, পারেননি। ভবিষ্যতেও পারবেন না।’

‘প্রথম থেকেই এ নির্বাচন এবং সংসদের নৈতিক ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এ অবস্থায় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করলে এই সংসদ এবং সরকারের আর কোনো নৈতিক ভিত্তি থাকবে না। সরকারেরও গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। এতে করে সাংবিধানিক সংকট দেখা না দিলেও সৃষ্টি হবে রাজনৈতিক সংকট’ . . . ড. শাহদীন মালিক

‘বিগত জাতীয় নির্বাচনে যেখানে বিএনপি অংশ নেয়নি সেখানে এখন যদি সংসদ থেকে বিরোধী দলও বেরিয়ে যায় তাহলে সরকার এবং সংসদের বৈধতা, নৈতিকতা, গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সবার মনে প্রশ্ন উঠবে’ . . . .ড. বদিউল আলম মজুমদার
‘যদি সরকারের ওপর অনাস্থার কারণ দেখিয়ে দলটির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করেন তাহলে সরকারের ইমেজ কিছুটা হলেও প্রশ্নের মুখে পড়বে’. . . . ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। (যুগান্তর)

নিউজ ডেস্ক ।।আপডেট : ১০:০০ এএম, ২১জানুয়ারি ২০১৬, বুধবার
ডিএইচ