বিয়ের ৮ বছর পর একে একে পাঁচ সন্তান জন্ম দিয়েছেন চাঁদপুরের সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী রুমা আক্তার (২৬)।
সোমবার সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২১২ নম্বর গাইনী ওয়ার্ডে নরমাল ভাবেই পাঁচ নবজাতক প্রসব করেন ওই নারী। এরমধ্যে তিনটি ছেলে ও দুইটি মেয়ে নবজতক। একটি মেয়ে নবজাতক মৃত অবস্থায় প্রসব হয়েছে। চার নবজাতকের পরিপক্ক অবস্থা না থাকায় তাদেরকে নবজাতক আইসিইউতে রাখা হয়েছে। এর তত্ত্বাবধানে ছিলেন গাইনি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নাজমা হকের নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক।
চার নবজাতকের পরিপক্ক অবস্থা না থাকায় তাদেরকে নবজাতক আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
হাসপাতালের গাইনী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নাজমা হক বলেন, ‘ভোরে চাঁদপুর থেকে রুমা আক্তার (২৬) নামে ওই নারী হাসপাতালের গাইনী বিভাগে ভর্তি হয়। তার প্রসব বেদনা বেশি থাকায় সকাল ৯টার দিকে লেবার কক্ষে নেওয়া হয়। ৯টা ৪০ মিনিট থেকে ১১টার মধ্যে একে একে পাঁচটি নবজাতক প্রসব করে। এর মধ্যে তিনটি ছেলে ও দুইটি মেয়ে। তবে একটি মেয়ে নবজাতক মৃত অবস্থায় প্রসব হয়। এ সময় আমার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অধ্যাপক ডা. রুমানা, সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. তাহমিনা, রেজিস্ট্রার ডা. সেতুসহ পাঁচজন চিকিৎসক।
ডা. নাজমা আরও বলেন, প্রথম একটি মেয়ে সন্তান প্রসব হয়। যার ওজন ছিল ১.৩ কেজি, দ্বিতীয়টা ছেলে সন্তান যার ওজন ১ কেজি, তৃতীয় ছেলে সন্তান যার ওজন ১.২ কেজি, চতুর্থ মেয়ে সন্তান ১.২ কেজি তাকে মৃত অবস্থায় পাই। এবং সর্বশেষ পঞ্চম ছেলে সন্তান যার ওজন ১.৩ কেজি। বাচ্চারা পরিপক্ক হয়নি ও ওজন কম থাকায় দ্রুত চার সন্তানকে নবজাতক আইসিইউতে পাঠানো হয়। তবে এদের চারজনেরই ঝুঁকি রয়েছে। তবে আমরা আশাবাদি উপরওয়লার ইচ্ছায় ও চিকিৎসকদের প্রচেষ্টায় বাচ্চারা সুস্থ হয়ে উঠবে।
ঢামেকের এই গাইনী বিশেষজ্ঞ বলেন, আমার কাছে নরমালে এক সঙ্গে পাঁচ বাচ্চার প্রসব ঘটনা এই প্রথম। তবে বাচ্চার মা খুবই ঝুঁকিতে ছিল। এক ফুলের মধ্যে পাঁচটি বাচ্চা ছিল। বাচ্চার মা বর্তমানে অবজারভেশনে আছে।
রুমা আক্তারের বোন আয়েশা আক্তার মুক্তা বলেন, তাদের বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার দাসাদি গ্রামে। রুমার স্বামী মো. শহিদুল্লাহ সৌদিআরব প্রবাসী। আট বছর বিয়ে হলেও কোনো সন্তান হচ্ছিল না। অনেক জায়গায় চিকিৎসা করার পর বাচ্চা কনসেপট করে। তবে তিন মাসের মাথায় পরীক্ষা করে জানা যায় রুমার পেটে চার সন্তান রয়েছে। ভোরে ব্যাথা অনুভব হওয়ায় দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসি। পরে সকালে ঢাকা মেডিকেলে নরমাল ভাবেই পাঁচ বাচ্চা প্রসব করে। এরমধ্যে এক বাচ্চা মারা যায়।
মুক্তা আরও বলেন, সবার কাছে দোয়া চাই যেন চার বাচ্চাকে হাসপাতাল থেকে সুস্থ অবস্থায় বাড়ি নিয়ে যেতে পরি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেন, ‘হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে এক নারী পাঁচটি সন্তান জন্ম দিয়েছেন। এদের এর মধ্যে একজন মারা গেছেন। বাকি চার নবজাতককে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’
চাঁদপুর টাইমস ডেস্ক,৯ জানুয়ারি ২০২৪