বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নারীদের কীর্তি, সংগ্রাম ও সাধনাকে অনুপ্রেরণার বিষয় বানিয়ে ২০১৩ সাল থেকে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি বিশেষ আয়োজনের মাধ্যমে ১০০ নারীর কথা তুলে আনছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার একশ নারীর চতুর্থ মৌসুমে বিবিসি প্রচার করছে নারীদের নিয়ে নানা প্রতিবেদন।
শত নারীর তালিকায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের কম জনপ্রিয় কিন্তু অনুপ্রেরণাদায়ী নারীদের জীবনের গল্প স্থান পায়। এবারের আয়োজনে ওই প্রতিবেদনে মেয়েদের হিজাব প্রসঙ্গে কথা বলেছেন বিবিসির আরবি সার্ভিসের কর্মী হালা হিন্দাওয়ি।
লন্ডনে বসবাসকারী হালা হিন্দাওয়ি বলেন, যারা হিজাব পরেন- তারা প্রায়ই কিছু প্রশ্নের মুখোমুখি হন। তিনি হিজাব নিয়ে সচরাচর ওঠা সেসব প্রশ্নেরই উত্তর দিয়েছেন অনুষ্ঠানে।
তিনি বলেন, এবার আমি হিজাব পরার ১৮ বছর পূর্তি উদযাপন করছি। এই দীর্ঘ সময়ে আমার কাছে মোটামুটি ৫টি বিষয় সম্পর্কে মানুষ জানতে চেয়েছেন।
কখন আপনি হিজাব পরেন? আমি তাদের বলে থাকি, আমি পর-পুরুষের সামনে গেলে হিজাব পরি। অর্থাৎ যাদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক হতে পারে তাদের সামনে গেলে হিজাব পরতে হবে কিংবা নিজেকে আবৃত করতে হয়। এটাই ইসলামের রীতি। কিন্তু বাবা, ভাই, চাচা, ছেলে ও স্বামীর সামনে হিজাব পরতে হয় না।
হিজাব কী স্টাইলে পরতে হয়? এর অনেক স্টাইল আছে। মূল কথা- নিজেকে ঢেকে রাখা। আপনি এর যেকোনো একটি অনুসরণ করতে পারেন।
আর হ্যাঁ, যে কোনো ধরনের কাপড় দিয়েই হিজাব বানানো যায়। আমি অনেক ধরনের কাপড় দিয়ে হিজাব বানিয়ে পরেছি। এটা ব্যক্তিগত রুচির বিষয়।
এতে খরচ কেমন? ধরুন, একটা হিজাব ৫ ডলার। অানুষঙ্গিক খরচ আড়াই ডলার। মোট সাড়ে সাত ডলার। মাসে ৮টা হিজাব কিনলে ৬০ ডলার। এক বছরে ৭২০ ডলার। অর্থাৎ আমি বিগত ১৮ বছরে প্রায় ১৩ হাজার ডলার খরচ করেছি হিজাবের জন্য। যা দিয়ে ছোট একটি গাড়ি কেনা যেত!
অনেকে বলেন, আপনি কেন হিজাব পরেন? আমি বলি, আমি হিজাব পরি এ কারণে যে, আমি একজন মুসলিম। কেউ আমাকে বলে এটা তো তোমার ধর্মের অংশ নয়। কিন্তু আমি বলি, এটা আমার ধর্মীয় সংস্কৃতির অংশবিশেষ। হিজাব পরেই আমি নিজেকে নিরাপদ ও স্বাধীন মনে করি। (ইসলাম অনলাইন ও BBC অবলম্বনে)