বরিশাল নগরী ঘেঁষা কীর্তনখোলা নদীসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১০ নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় জানায়,সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার ২.৫৫ সে.মি হলেও বর্তমানে প্রবাহিত হচ্ছে ২.৭২ সে.মি দিয়ে।
এ ছাড়াও, ভোলার খেয়াঘাট সংলগ্ন তেতুলিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ২.৯০ হলেও বর্তমানে ৩. ১০ সে.মি , ভোলার দৌলতখান সংলগ্ন সুরমা ও মেঘনা নদীর পানি বিপদসীমার ৩.৪১ হলেও বর্তমানে প্রবাহিত হচ্ছে ৪.১৫ সে.মি. ওপর দিয়ে। তজুমদ্দিন এলাকার সুরমা ও মেঘনা নদীর পানি বিপদসীমার ২.৮৩ সে.মি ,বর্তমানে প্রবাহিত হচ্ছে ৩.৮০ সে.মি ওপর দিয়ে। ঝালকাঠী বিষখালী নদীর পানি বিপদসীমার ২.৮ সে.মি হলেও বর্তমানে ২.১৫ সে.মি , ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পটুয়াখালী মির্জাগঞ্জের পায়রা ও বুড়িশ্বর নদীর পানি বিপৎসীমার ২.৮১ বর্তমানে ৩.৮ সে.মি, ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বরগুনার বিষখালী নদীর পানি বিপদসীমার ২.৮৫ বর্তমানে ৩.২৩ সে.মি,ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাথরঘাটা বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ২.৮৫ বর্তমানে ৩.৫৫ সে.মি ,ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পিরোজপুরের বলেশ্বর নদীর পানি বিপদসীমার ২.৬৮ বর্তমানে ২.৭৭ সে.মি, ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উমেদপুর কচা নদীর পানি বিপদসীমার ২.৬৫ বর্তমানে ২.৮৭ সে.মি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো.মাসুম বলেন,‘ বর্ষা মৌসুমে বিভাগের মোট ২৩টি নদীর পানি প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করা হয়। তবে বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ ১০টি নদীর পানি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ নদীর পানিই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।’
এদিকে, দক্ষিণাঞ্চলের সব নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে নদীর তীরের জনপদ, চরাঞ্চল দুই থেকে তিন ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় অধিকাংশ স্থানের গ্রামবাসী পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। হাজার হাজার একর ফসলী জমিও পানির নিচে রয়েছে। এ ছাড়াও, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জোয়ারের পানির স্রোতে পটুয়াখালীর কলাপাড়া সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে লালুয়া, চম্পাপুর ও মহিপুর ইউনিয়নের ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালের পর বরিশাল নগরীর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কীর্তনখোলা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নগরীর নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি নগরীর ড্রেনগুলোতে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে বিভিন্ন সড়ক ডুবে পার্শ্ববর্তী বাসা-বাড়িতে পানি প্রবেশ করে।
কীর্তনখোলা নদীর সঙ্গে এসব ড্রেনের সংযোগ থাকায় জোয়ারের সময় নগরবাসীকে এ ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তবে নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় এবং রাত ৯ টা পর্যন্ত এ পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নগরবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে দেখা গেছে।
নগরী ঘুরে দেখা গেছে,আমানতগঞ্জ,সাগরদী,ধান গবেষণা,জিয়ানগর,ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোড, স্টেডিয়াম কলোনী, রসুলপুর গুচ্ছগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় সেখানকার বাসিন্দারা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
১৫ জুলাই ২০২২
এজি