বিপৎসীমার ৬০ সেমি ওপরে তিস্তার পানি, পানিবন্দী ১০ হাজার মানুষ

উজানের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ বুধবার সকাল ৯টায় পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে নদীর তীরবর্তী ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ২২টি চরে প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। পানির তোড়ে ভেঙে গেছে ডিমলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের কালিগঞ্জ নামক স্থানের ১০০ মিটার স্পার বাঁধ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী এবং জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ও কৈমারীসহ ১০টি ইউনিয়ন এলাকার ২২টি গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন প্রায় ১০ হাজার পরিবারের ৪০ হাজার মানুষ। চরাঞ্চলের এসব বাড়িঘরে ৫ থেকে ৭ ফুট পানি উঠেছে। পানির নিচে তলিয়ে গেছে এসব এলাকার রাস্তা-ঘাট।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ সূত্রে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বৃদ্ধি শুরু হয়। রাত ১২টার দিকে নদীর পানি বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার অতিক্রম করলে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ পাঠক (পানি পরিমাপক) নুরুল ইসলাম জানান, উজানের ঢল অব্যাহত থাকায় তিস্তার পানি বাড়ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারতের তিস্তার দোমহনী পয়েন্টে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে।

ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুর ইসলাম বলেন, রাত থেকে মাইকিং করে ছাতুনামা, কেল্লাবাড়ী ও ভেন্ডাবাড়ি চরের মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী শাসন বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাঁধে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে।

কালিগঞ্জে স্পার বাঁধ ভাঙনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এটি চরের ভেতরের বাঁধ। তিস্তা নদীর উভয় তীরের বাঁধে কোনো সমস্যা হয়নি। পাউবোর লোকজন সতর্কতার সঙ্গে বাঁধে উপস্থিত থেকে নজরদারি করছেন।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদ দৌলা বলেন, উজানে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যা তিস্তা পয়েন্টে এ মৌসুমের সর্বোচ্চ পানিপ্রবাহ। এ জন্য আমরা তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ গেট খুলে দিয়ে নদীর পানি প্রবাহ অব্যাহত রেখেছি।

Share