খেলাধুলা

রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে তামিম-ইমরুল কায়েসদের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের জয়

আগেরবার ঘুরে দাঁড়াতে সময়ই লাগেনি ঢাকা ডায়নামাইটসের। পঞ্চম ম্যাচে গিয়ে প্রথম হারের স্বাদ পাওয়া সাকিব আল হাসানের দল পরের ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়ায়।

ষষ্ঠ ম্যাচে গিয়ে আবারও হার। চলতি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) আরেকটি ফেরার মিশন ছিল তাদের। কিন্তু এবারের মিশনটা আর আগের মতো হলো না। টানা দুই ম্যাচে হেরে গেলেন সাকিব-রাসেলরা। সপ্তম ম্যাচে চিটাগং ভাইকিংসের কাছে হার মানা ঢাকা মঙ্গলবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষেও হার নিয়ে মাঠ ছাড়লো।

মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রুদ্ধশ্বাস এক লড়াইয়ে ঢাকা ডায়নামাইটসকে ৭ রানে হারিয়েছে তামিম ইকবাল-ইমরুল কায়েসদের দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স দাপুটে ব্যাটিং করতে পারেনি। শামসুর রহমান শুভর ৪৫, তামিম ইকবালের ৩৪ ও থিসারা পেরেরার ঝড়ো গতির ২৬ রানের ‍সুবাদে ৮ উইকেটে ১৫৩ রান তোলে কুমিল্লা।

জবাবে আন্দ্রে রাসেলের জড়ো ব্যাটিংয়ের পরও ৯ উইকেটে ১৪৬ রানে শেষ হয় ঢাকার ইনিংস। এই জয়ে ঢাকার সমান ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিন নম্বরে উঠে এলো কুমিল্লা।

জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে কুমিল্লার বোলারদের তোপের মুখে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি ঢাকা ডায়নামাইটসের। দলীয় ২ রানেই ওপেনার হজরতউল্লাহ জাজাইকে ফিরিয়ে দেন নিজের প্রথম দুই ওভারে দারুণ বোলিং করা কুমিল্লার পেসার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। শুরুতেই উইকেট হারানোয় রান তোলার গতির দিকে মন দিতে পারেনি ঢাকা। ৪.৩ ওভারে মাত্র ২১ রান জমা করে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দলটি।

এই সুযোগটা কাজে লাগান কুমিল্লার আরেক পেসার ওয়াহাব রিয়াজ। ঢাকার ব্যাটসম্যানদের চেপে ধরেন পাকিস্তানি এই বাঁহাতি পেসার। সাফল্য পেতে দেরি হয়নি। নিজের করা প্রথম ওভারে মাত্র এক রান খরচা করা ওয়াহাব ফিরিয়ে দেন রনি তালুকদারকে।

কিছুক্ষণ পর কপাল পোড়ে ঢাকার। দেখেশুনে খেলতে থাকা সুনীল নারিন রান আউট হয়ে বিদায় নেন। ফেরার আগে ১৮ বলে ৩টি চারে ২০ রান করেন ক্যারিবীয় এই অলরাউন্ডার।

দলীয় ৫০ রানে আরও বিপদ বাড়ে ঢাকার। ১৫ বলে ২টি ছক্কায় ১৯ রান করা দারউইস রসুলিকে ফিরিয়ে ঢাকাকে দিশেহারা করে তোলেন কুমিল্লার লেগ স্পিনার শহীদ আফ্রিদি। তবে এই বিপদ দলকে বুঝতে দেননি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও আন্দ্রে রাসেল। চতুর্থ উইকেটে ৬২ রানের জুটি গড়ে তোলেন এ দুজন।

এ সময় সাকিবকে এক পাশে রেখে কুমিল্লার বোলারদের ওপর দিয়ে তাণ্ডব চালিয়ে যান রাসেল। তার বিশাল বিশাল ছক্কায় জয় দেখতে শুরু করেছিল ঢাকা। কিন্তু রাসেল পারেননি জয়ের পথে এগিয়ে যেতে। ২৪ বলে ২টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৪৬ রান করা রাসেলকে ফিরিয়ে কুমিল্লা শিবিরে স্বস্তি ফেরান ম্যাচসেরা থিসারা পেরেরা। ২০ রান করে সাকিবও ফিরে যান। এরপর শুভাগত হোম, ‍নুরুল হাসান সোহান, নাইম শেখরা পারেননি দলকে জয় এনে দিতে। পেরেরা ১৪ রানে ৩ উইকেট নেন। আফ্রিদি পান ২ উইকেট।

এরআগে ব্যাটিংয়ে নামা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স শুরুটা ভালো করতে পারেনি। দলীয় ২৭ রানের মধ্যেই ফিরে যান ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। এর মাঝেও অবশ্য আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল তার স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলে গেছেন। চার নম্বরে ব্যাটিং করতে নামা শামসুর রহমানের সঙ্গে তামিমের গড়া জুটিতে কিছুটা স্বস্তি পায় কুমিল্লা।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৫১ রান যোগ করেন এই দুই ব্যাটসম্যান। তবে টি-টোয়েন্টির গতিতে ব্যাট চালাতে পারেননি তারা। শামসুর রহমান কিছুটা হাত খুলে খেললেও তামিম ছিলেন ওয়ানডে স্টাইলে। তবু রানের চাকা ঘুরছিল কুমিল্লার।

কিন্তু দলীয় ৭৮ রানে থামতে হয় তামিমকে। ঢাকার অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ২৯ বলে একটি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৪ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

তামিম ফেরার পর শামসুরই যা লড়াই করেছেন। শহীদ আফ্রিদি ও থিসারা পেরেরা ভালো শুরু করেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৩৫ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ইনিংস সেরা ৪৮ রান করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান শামসুর।

দাপুটে শুরু করা ম্যাচসেরা পেরেরা ১২ বলে ৩টি ছক্কায় ২৬ রান করেন। ৮ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ১৬ রান করেন আফ্রিদি। সাকিব ৩টি এবং আন্দ্রে রাসেল ও রুবেল হোসেন ২টি করে উইকেট নেন।

বার্তা কক্ষ
২২ জানুয়ারি, ২০১৯

Share