বিদেশ গমনাগমনে থাকছে না করোনা পরীক্ষার বাধ্যবাধকতা

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) পূর্ণাঙ্গ ডোজ টিকা সনদ থাকলেই পিসিআর পরীক্ষা ছাড়াই বিমানবন্দর হয়ে বিদেশে যাওয়া যাবে। একই সঙ্গে দেশের বাইরে থেকে কেউ দেশে প্রবেশ করতে চাইলে করোনাভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ ডোজ টিকা নেওয়া থাকলে আর পিসিআর পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে না। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড রেগুলেশনস বিভাগের সদস্য চৌধুরী এম জিয়াউল কবির স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকেই এ নির্দেশনা কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত যে কোনো টিকার পূর্ণ ডোজ যারা নিয়েছেন তাঁদের বাংলাদেশ আসতে করোনা পরীক্ষা করতে হবে না। তবে যাত্রীদের ভ্যাকসিন গ্রহণের প্রমাণ সঙ্গে রাখতে হবে। অপরদিকে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে যেতেও করোনা পরীক্ষার বাধ্যবাধকতা থাকছে না। যাত্রীরা যে দেশে যাবেন, সে দেশের নির্দেশনা অনুসরণ করবেন।

তবে যাদের করোনার টিকা সনদ থাকবে না, তাঁদের যাত্রার ৭২ ঘণ্টা আগে পরীক্ষা করে নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে বিমানবন্দরে আসতে হবে। ১২ বছরের নিচে শিশুদের কোনো ধরনের পরীক্ষা করাতে হবে না। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অন্যান্য নির্দেশনাগুলো মানতে হবে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, টিকা নেওয়া বা না নেওয়া কোনো যাত্রীর মধ্যে করোনা উপসর্গ দেখা গেলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে করোনা পরীক্ষা করাবে। পরীক্ষায় কারও রিপোর্ট করোনা পজিটিভ আসলে তাকে নিজ খরচে সরকার নির্ধারিত হোটেলের সাত দিন আইসোলেশনে থাকতে হবে।

এ ছাড়া কোনো ফ্লাইটে করোনা আক্রান্ত যাত্রী শনাক্ত হলে তাঁর জন্য উড়োজাহাজে শেষের সারির সব সিট খালি রাখতে হবে। ফলে ৩০০ বা এর কম যাত্রী ধারণে সক্ষম উড়োজাহাজগুলোতে ৯৫ শতাংশের বেশি যাত্রী নেওয়া যাবে না। যে সব উড়োজাহাজে ৩০০ জনের বেশি যাত্রী ধারণে সক্ষম, সেগুলোতে ৯০ শতাংশের বেশি যাত্রী নেওয়া যাবে না বলে এয়ারলাইনসগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয় প্রজ্ঞাপনে।

এর আগে, গত রোববার রাতে করোনা বিধি-নিষেধ পর্যালোচনা নিয়ে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বেবিচকসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের প্রতিনিধিরা ছিলেন। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে দেশের করোনার বর্তমান পরিস্থিতি ও বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশ বিধি-নিষেধ যে তুলে নিচ্ছে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সার্বিক দিক বিবেচনায় বাংলাদেশে প্রবেশ ও বহির্গমনে করোনার নেগেটিভ সনদের বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহারের প্রস্তাব আসে। বৈঠকে সবাই এতে সম্মতি জানান।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বেবিচকের সর্বশেষ সার্কুলারে আরটি পিসিআর টেস্ট বাধ্যতামূলক ছিল। বেবিচকের সেই সার্কুলারে বাংলাদেশে প্রবেশ করা যেকোনো যাত্রীকে প্রবেশের ৪৮ ঘণ্টা আগে করোনা টেস্ট করিয়ে নেগেটিভ সনদ নিতে বলা হয়েছিল।

Share