Home / জাতীয় / বিদেশফেরতদের ৪৭ শতাংশ এখনো কর্মহীন
বিদেশফেরতদের

বিদেশফেরতদের ৪৭ শতাংশ এখনো কর্মহীন

বৈশ্বিক মহামারি করোনার উদ্ভূত পরিস্থিতির মধ্যে গত বছর থেকে এ পর্যন্ত দেশে ফেরত আসা প্রবাসীদের ৪৭ শতাংশ এখনো আয়ের কোনো ব্যবস্থা করতে পারেননি। কর্মহীন এসব বিদেশফেরত কর্মীরা প্রতিদিনের খরচ চালাতে অনেকেই আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে ধার-দেনা করছেন। এ ছাড়া ৫৩ শতাংশ কৃষিকাজ, ছোট ব্যবসা কিংবা কেউ শ্রমিকের কাজ করে পরিবারের খরচ চালাচ্ছেন। তবে ৯৮ শতাংশ এখনো তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।

বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের ‘বিদেশফেরতদের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি অন্বেষণ এবং বিশ্লেষণ’ শীর্ষক এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

শুক্রবার অনলাইনে এ জরিপের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান।

শরিফুল জানান, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি শুরু হলে ২০২০ সালের মার্চে-এপ্রিলে ফেরত আসা প্রবাসী কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে গত বছর ২২ মে একটি জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল ব্র্যাক। এক বছরে পরিস্থিতির পরিবর্তন জানতে আবার জরিপ করা হয়। দেশের সাতটি বিভাগের অভিবাসনপ্রবণ ৩০ জেলায় এ বছরের মার্চ ও এপ্রিলে জরিপটি পরিচালনা করা হয়।

তিনি জানান, জরিপের জন্য মোট ১৩৬০ জন বিদেশফেরতদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে ব্র্যাক। এর মধ্যে ২০৭ জন ইতোমধ্যে বিদেশে চলে গেছেন। তাদের একটা বড় অংশকে ফোনে পাওয়া যায়নি। অনেকেই তথ্য দিতে রাজি হননি। তবে ৪১৭ জন বিদেশফেরত বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন। তাদের উত্তরের ভিত্তিতে জরিপ প্রতিবেদনটি করা হয়েছে।

শরিফুল জানান, উত্তরদাতাদের বেশিরভাগই সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরেছেন। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের ৯৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ পুরুষ ও ৪ দশমিক ৩২ শতাংশ নারী। তাদের মধ্যে ৮৮ শতাংশ গ্রামে বাস করছেন।

জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, গত বছর বিদেশফেরতদের ৮৭ শতাংশ জানিয়েছিলেন- তাদের কোনো আয়ের উৎস নেই। এবারের জরিপে দেখা গেছে, উত্তরদাতাদের প্রায় ৫৩ শতাংশ কোনো না কোনো কাজে যুক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ২৪ দশমিক ১৯ শতাংশ কৃষি কাজে, ২২ দশমিক ৩৩ শতাংশ দিনমজুরের বা এ ধরনের কোনো কাজে যুক্ত হয়েছেন এবং ৩৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ ছোট ব্যবসা শুরু করেছেন। এ ছাড়া ১৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ অন্য কোনো কাজ করছেন। তবে উত্তরদাতাদের মধ্যে ৪৭ দশমিক ২২ শতাংশ বিদেশফেরত গত এক বছরে কোনো প্রকার কাজ যোগাড় করতে পারেননি। তারা তাদের দৈনন্দিন খরচ চালাতে তাদের পরিবারের আয়ের ওপর নির্ভরশীল কিংবা আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে ধার-দেনা করে চলছেন। উত্তরদাতাদের ২৮ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা ইতোমধ্যে ধার-দেনায় জর্জরিত হয়েছেন এবং ৭২ শতাংশ জানিয়েছেন যে, তারা আবার বিদেশে চলে যেতে চান।

গত বছর জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৭৪ শতাংশ জানিয়েছিলেন, তারা ভবিষ্যত নিয়ে প্রচণ্ড দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও ভীতির মধ্যে আছেন। এবার ৯৮ শতাংশ উত্তরদাতাই জানান- অপর্যাপ্ত আয়, বেকারত্ব, পুনরায় বিদেশ যেতে না পারা, পারিবারিক চাপ ইত্যাদি কারণে চরম উদ্বিগ্নতা এবং মানসিক চাপের মধ্যে আছেন তারা।

ঢাকা ব্যুরো চীফ