চাঁদপুরের বিদায়ী জেলা প্রশাসক (যুগ্ম সচিব) মো. আব্দুস সবুর মন্ডলকে বিদায় ও নবাগত জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমানকে বরণ করা হয়েছে।
৫ মার্চ সোমবার রাতে বাংলাদেশ এ্যাডমিনিষ্ট্রিটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার আয়োজনে চাঁদপুর সার্কিট হাউসে এ বিদায় ও বরণ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নবাগত জেলা প্রশাসকের সহধর্মীনি তুহিনা পারভিন, বিদায়ী জেলা প্রশাসকের সহধর্মীনি আখতারি জামান, চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার পিপিএম, চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী আব্দুল মান্নান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আয়েশা আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজশ্ব) মো. মাসুদ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শওকত ওচমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( শিক্ষা ও আইসিটি) মো. মঈনুল হাসান, শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ মারুফ, মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইয়েদুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা, সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) অভিষেক দাস প্রমুখ।
নবাগত জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, বিদায়ী সুযোগ্য জেলা প্রশাসক চাঁদপুর জেলাকে এমন একটি মান আর উচ্চতায় নিয়ে গেছেন যে, এই মানে কাজ করা অনেক চ্যালেঞ্জের। আমি চেষ্টা করবো চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং এ জেলার গুণিজনসহ সকল ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে কাজ করবো। আমি সকলের সহযোগিতা নিয়ে চাঁদপুরকে একটি নতুন ক্যানভাসে আঁকতে পারবো।
তিনি বলেন, এজন গুণি মানুষ তার কাজকে একটি ধর্ম এবং ইবাদত হিসেবে নেয়। আর তখনই ওই মানুষের কর্ম তাকে অনেক উচ্চতায় তাঁকে পৌছে দেয়। আমাদের বিদায়ী জেলা প্রশাসক তেমনই একনজ গুণি ব্যক্তি, যিনি তার কাজের মাধ্যমে নিজেকে অনেক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। আমি তার আগামী দিনের সাফল্য কামনা করছি। পাশাপাশি চাঁদপুরের দায়িত্বকালিন সময়ে সকলের কাছে সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।
বিদায়ী জেলা প্রশাসক (যুগ্ম সচিব) মো. আব্দুস সবুর মন্ডল বলেন, চাঁদপুরে দায়িত্বকালিন সময়ে আমার কথায় অনেক কর্মকর্তা হয়তো কষ্ট পেয়েছেন। নিজেরা স্বেচ্ছায় বদলী নিয়েছেন, হয়তো লুকিয়ে কান্নাকাটি করেছেন। তবে একজন কর্মকর্তাকেও বিদ্ধেষপূর্ণ মনোভাব নিয়ে কিছু বলেনি। আমি আমার দায়িত্বে থেকে কথা বলেছি, কাজ করেছি। আমি মনে করি এই ক্যাডারের সকল কর্মকর্তা আমার আপন ভাই। এজন্য তাদের ভালোর কথা চিন্তা করেই তাদের পরামর্শ দিয়েছি। আপনাদের মঙ্গলের জন্যই বলেছি।
তিনি আরো বলেন, চাঁদপুর একটি উল্লেখযোগ্য জেলা। এখানে সরকারের অনেক সৎ এবং যোগ্য কর্মকর্তা রয়েছেন। তারা সরকারের নিদের্শ পালনে বদ্ধ পরিকর। আমি দায়িত্বকালিন সময়ে যা কিছু উন্নয়ন হয়েছে অথবা যা কিছু হয়নি তা আগামীতে অবশ্যই হবে। আমি আশা করবো নবাগত জেলা প্রশাসক আরো হাজার হাজারগুণ ইনোভেটিক আইডিয়া নিয়ে কাজ করবো। বর্তমান সরকার সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছেন। সোনার বাংলা মানে একটি উন্নত রাষ্ট্র, গতিশীল রাষ্ট্র। সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় আমরা সরকারের নির্দেশে দায়িত্ব পালন করেছি।
তিনি আরো বলেন, প্রশাসনের যদি লিডারশীপ যদি না থাকে তবে, সে প্রশাসন টিকে না। তাই প্রশাসনের লিডারশীপ প্রয়োজন আছে। প্রশাসনকে মানুষ বটবৃক্ষ হিসেবে দেখতে চায়। প্রশাসনের লোক যদি অহংকার দেখায় তাহলে তাদের ছায়াও কেউ মাড়াবে না। তাই প্রশাসনের সকল কর্মকর্তার দেশপ্রেম, দেশের মানুষের প্রতি মমত্ব ও দায়িত্ববোধ থাকতে হবে। আমরা যখন চাকরিতে এসেছি তখন এতো সুবিধা বা বেতন ছিলো না। এসিল্যান্ড থাকাকালিন একটি খাটও ছিলো না। এখন সরকার অনেক শক্তিশালি। সরকার মোটা অংকের বেতনসহ অনেক সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। তাই দয়া করে আমরা ন্যায়নীতির সাথে দায়িত্ব পালন করবেন।
পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার তার বক্তব্যে বলেন, বিদায়ী জেলা প্রশাসক একজন ভালো মনের মানুষ ও যোগ্য কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি চাঁদপুরের জন্য অনেক কিছুই করেনে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন চাঁদপুরের উন্নয়নে সরকারের নির্দেশ মোতাবেক কাজ করেছে।
তিনি আরো বলেন, যা কিছু চাঁদপুরের জন্য মঙ্গলময় আমরা তাই করবো। নবাগত জেলা প্রশাসকসহ সবাই মিলে চাঁদপুরকে এগিয়ে নিতে হবে। তিনি আমাদের পুলিশ প্রশাসনকে সহযোগিতা করবেন। চাঁদপুরকে যাতে করে আরো বেশী আলোকিত করতে পারি এজন্য আমরা সবাই মিলে কাজ করবো।
এসময় বাংলাদেশ এ্যাডমিনিষ্ট্রিটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
আশিক বিন রহিম