চাঁদপুর

বিজয় মেলায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণে যা বললেন ডা. দেলোয়ার

চাঁদপুর মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার মঞ্চে ১৭তম দিন শনিবার সন্ধ্যায় স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠিত হয়।

স্মৃতিচারণ পরিষদের আহ্বায়ক মহসিন পাঠানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মুক্তিযোদ্ধা ইয়াকুব আলী মাস্টারে পরিচালনায় প্রধান স্মৃতিচারকের বক্তব্য রাখেন, ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, ‘হিমালয় পাহাড়ের মতোই ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান। যুদ্ধের কথা বলতে গেলেই তার কথা সর্বপ্রথম মনে পড়ে যায়। চাঁদপুরে যারা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন মরহুম মিজানুর রহমান চৌধুরী।’

তিনি আরো বলেন, ‘আজকে অনেকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেতে গিয়ে মিথ্যে ঘটনা সাজিয়ে বলেন। কলিম উল্লা ভূইয়ার নেতৃত্বে আমরা মুক্তিযুদ্ধাদের জন্য অর্থ সংগ্রহ শুরু করি। তার নেতৃত্বে আবু তাহের পাটওয়ারী, আমিনুল্ল্যাহ মাস্টারসহ আমি মুক্তিযুদদ্ধাদের জন্য খাবার সংগ্রহ করে নৌকায় উঠতে গেলে গ্রামবাসী পাক সেনা ভেবে কোচ, টেটা নিয়ে আমাদের উপর হামলার চেষ্টা করে। তখন জহিরুল হক পাঠান তাদেরকে গুলি করে মারার জন্য নির্দেশ দিলে তখন তারা বুঝতে পারে আমরা মুক্তিবাহিনী। তখন তারা আমাদের সহযোগিতা করে নির্দিষ্ট স্থানে যাওয়ার জন্য।’

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফরিদগঞ্জ গিয়ে আমরা জানতে পারি পাকিস্তানিরা জাহাজ নিয়ে প্রবেশ করছে। গাজীপুর এলাকায় আমরা তাদের উপর হামলা চালিয়ে প্রথম যুদ্ধ শুরু করি। তখন ঐ পাকিস্তানিরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। আমরা জানতে পারি রামগঞ্জে পাকিস্তানিরা আক্রমণ করেছে। আমরা খবর পেয়ে ওই স্থান রেড করে শত্রুদের উপর আক্রমণ করি আর তখন পাকিস্তানি শত্রুরা আমাদের গুলির তোপে দাঁড়ানো পেরে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।’

‘আমরা মুক্তিযুদ্ধারা ফরিদগঞ্জের পাইকপাড়ায় যুদ্ধকরে প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে অন্তি নগর ক্যাস্পে চলে যাই। সেখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে চলে আসি মেলাঘর নিঘুর ক্যাম্পে। শরীরে লতা পাতা বেধে বন জঙ্গল পাড়ি দিয়ে আবার বাংলাদেশে প্রবেশ করি। নোয়াখালির পাকবাহিনী আমাদের আগমনের কথা জেনে যায়। তারা আমাদের আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিলে আমরা পাল্টা আক্রমণ করি।’

তিনি আরো বলেন, ‘সুচিপাড়াতে এক মেলিটারির মাথা কেটে আমরা ঝুলিয়ে রেখেছিলাম। সে দৃশ্য হাজার হাজার মানুষ দেখেছে। কলিম উল্ল্যা, মন্নান বিএসসিসহ আমরা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে নরিংপুর ও উগারিয়া জয় বাংলা বলে শত্রু মোকাবেলায় শুরু করি গুলি বর্ষণ। নরিংপুর থেকে বড় নৌকা যোগে পাক সেনারা আমাদের দিকে আসলে আমরা তাদের প্রতিরোধ করে স্বাধীনতার পতাকা উড়াই। এভাবে ৯মাস যুদ্ধ করে এদেশ স্বাধীন করতে পেরেছি।’

শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী কমান্ডার আবুল হাসিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা অজিত সাহা।

প্রতিবেদক- শরীফুল ইসলাম
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১১ : ৪০ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬, শনিবার
ডিএইচ

Share