‘বিকট শব্দের পর আগুনের হলকা এসে কপালে লাগে’

কাজের ফাঁকে পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছিলেন সাভার পৌর এলাকার ভাগলপুরের বাসিন্দা রওশন আলী। খবর পেয়ে স্বামী-সন্তানকে নিয়ে অসুস্থ বাবাকে দেখতে এসেছিলেন মেয়ে ফাতেমা বেগম।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকালেই তাঁদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভয়ংকর এক দুর্ঘটনা তাঁদের সব লন্ড-ভণ্ড করে দেয়।

রান্না ঘরের বিস্ফোরণ থেকে সৃষ্ট আগুনে পুড়ে মারা যান তাঁর বাবা ও মা। আর তিনিও দগ্ধ হয়ে মৃত্যু-শঙ্কায়। দগ্ধ হয়েছেন তাঁর স্বামীসহ ওই পরিবারের আরও তিনজন।

রওশন আলী সাভারের গেন্ডা এলাকায় একটি পার্কে নৈশ প্রহরীর চাকরি করতেন। স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে থাকতেন ভাগলপুরে ভায়রা ভাইয়ের বাসায়।

গত বৃহস্পতিবার দায়িত্বপালনের সময় জলাধারে পড়ে গিয়ে ব্যথা পান রওশন। চিকিৎসার জন্য শুক্রবার থেকে তিনি দুই দিনের ছুটি নিয়েছিলেন। বাবার অসুস্থতার খবর পেয়ে ফাতেমা (৩২) তাঁর স্বামী খোরশেদ আলম (৪০) ও মেয়ে রিফা মনিকে (৬) নিয়ে শুক্রবার বিকেলে সাভারে বাবার বাসায় আসেন।

শনিবার সকালে তাঁদের সাভার কুন্ডায় বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে তাঁদের ঠাঁই হয়েছে হাসপাতালে।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আগুনে ফাতেমার শরীরের ৯৫ ভাগ পুড়ে গেছে। আর তাঁর স্বামীর পুড়েছে ১০ ভাগ। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মেয়ে রিফা মনি সামান্য দগ্ধ হন।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার গভীর রাতে রান্না ঘরে বিস্ফোরণের পর পুরো বাসায় আগুন ধরে যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়ে বাসার চারপাশেও। আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান রওশন আলী-খায়রুন্নেছা দম্পতি। ফাতেমা ও তাঁর স্বামী ছাড়াও আগুনে দগ্ধ হয়েছেন ফাতেমার ভাই হযরত আলী, বাড়ির মালিক তাজুল ইসলাম (ফাতেমার খালু) ও তাঁর স্ত্রী মেহেরুন্নেছা।

মেহেরুন্নেছা বলেন, ‘শুক্রবার রাতের খাবার খেয়ে বাসার সবাই ঘুমিয়ে পড়ি। গভীর রাতে বিকট শব্দে আমার ঘুম ভেঙে যায়। এরপরই আগুনের হলকা এসে কপালে লাগে। দরজা খুলে বের হওয়ার চেষ্টা করে দেখি প্রায় পুরো বাসায় আগুন। বের হওয়ার কোনো রাস্তাই খুঁজে পাচ্ছিলাম না। এর পর আর কিছু মনে নেই। চেতন ফিরে দেখি আমি হাসপাতালে।’ (প্রথম আলো)

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ২: ০০ এএম, ৭ জানুয়ারি ২০১৭, শনিবার
ডিএইচ

Share