জাতীয়

অগ্নিকাণ্ড রোধে প্রধানমন্ত্রীর একগুচ্ছ নির্দেশনা

অগ্নিকাণ্ড ও ক্ষয়ক্ষতি রোধে বহুতল ভবনের ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিস পরিদর্শন করে ভবনটি উপযুক্ত কি না, তা নিশ্চিত হয়ে ছাড়পত্র দেওয়া, নিয়মিত পরিদর্শন করে প্রতিবছর নবায়নের ব্যবস্থা রাখাসহ একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন।

একই সঙ্গে মন্ত্রিসভা বনানীর এফ আর টাওয়ারের আগুনে হতাহত হওয়ার ঘটনায় শোক প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সংবাদ সম্মেলন করে সভার সিদ্ধান্ত জানান। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার মধ্যে আরও রয়েছে নির্মাণের ক্ষেত্রে বিল্ডিং কোড অনুসরণ করা, সচেতনতার জন্য ধারাবাহিকভাবে (এক থেকে তিন মাসের মধ্যে) অগ্নিনির্বাপণ মহড়া দেওয়া।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অনেক সময় আগুনের চেয়েও ধোঁয়ার কারণে শ্বাস বন্ধ হয়ে অনেকে মারা যান। তাই ধোঁয়া যাতে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, তার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। আগুন লাগার পর অনেক সময় পানির অভাবে ফায়ার সার্ভিস কাজ করতে পারে না। এ জন্য যেখানে সম্ভব, সেখানে জলাধার বা জলাশয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। ঢাকার লেকগুলোকে ভালোভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা আরও বাড়ানো এবং ভবনের প্ল্যান যেন বাস্তবতা চিন্তা করে করা হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার মধ্যে আরও রয়েছে সব ভবনেই শতভাগ জরুরি নির্গমনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। অনেক জায়গায় ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে দরজা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ফায়ার এক্সিট যেন সব সময় খোলা থাকে, অর্থাৎ ম্যানুয়ালি যেন তা খোলা যায়, তার ব্যবস্থা রাখা। জরুরি নির্গমনের জন্য অন্তত দুটি সিঁড়ি রাখা। হাসপাতাল ও বিদ্যালয়গুলোয় বারান্দা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী সচেতনতা বৃদ্ধির ওপরও গুরুত্বারোপ করেছেন।

মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সাংবাদিকেরা গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সচিবালয়ের কার্যালয়ে গিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা তাঁদের কাজকে আরও উজ্জীবিত করবে।

রেজাউল করিম বলেন, বনানীর এই আগুনের ঘটনার পর দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া ঢাকার বহুতল ভবনগুলো নির্মাণে কোনো অনিয়ম আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে ২৪টি উপদল (টিম) গঠন করা হয়েছে। তারা আজ থেকে কাজ শুরু করেছে। তাদের আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কোন কোন ভবনে অনিয়ম রয়েছে বা ভবনগুলো কী অবস্থায় আছে, তার তথ্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে জানানো হবে। এরপর মালিককে একটা সংক্ষিপ্ত সময় দিয়ে বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ভবন আছে কি না, তা নিশ্চিত করতে বলা হবে। এরপরও নিয়ম না মানলে ফৌজদারি ব্যবস্থাসহ যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১৯ এবং গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৯-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
(প্রথম আলো)

বার্তা কক্ষ
১ এপ্রিল,২০১৯

Share