Home / জাতীয় / রাজনীতি / বিএনপি নেতারা জামিন চাইলেই রিমান্ড আবেদন

বিএনপি নেতারা জামিন চাইলেই রিমান্ড আবেদন

‎Tuesday, ‎02 ‎June, ‎2015   7:54:14 PM

শাহজাহান শাওন :

কারাগারে আটক বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা জামিনের আবেদন করলেই নতুন করে রিমান্ড আবেদন করছে পুলিশ। মামলার ৫-৬ মাস পর হঠাৎ করে নতুন মামলায় রিমান্ড আবেদনকে অযৌক্তিক বলে দাবি করছেন বিএনপির আইনজীবীরা।

আইনজীবীদের মতে, কোনো মামলার তদন্তকাজ তিন মাসের মধ্যে শেষ করতে হয়। কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তারা অযৌক্তিকভাবে ৫-৬ মাস পর রিমান্ড আবেদন করছেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর দাবি, যৌক্তিক কারণেই তাদের বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করা হচ্ছে।

ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, বিএনপির নেতাদের নিয়ে পুলিশ চোর-পুলিশের খেলা খেলছে। মামলা দায়ের হওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে কোনো রিমান্ড আবেদন করা হয়নি। ৫-৬ মাস পর আমরা যখন তাদের জামিনের আবেদন করছি ঠিক তখনই তাদের বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করছে পুলিশ, যা অযৌক্তিক।

মাসুদ আরও বলেন, ঘটনার ৫/৬ মাস পর রিমান্ড আবেদন করায় বোঝা যায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মামলার সাথে জড়িত না। তারা নিরপরাধী।

অবশ্য বিএনপির আইনজীবীদের এসব অভিযোগ মানতে নারাজ ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর(পিপি) আব্দুল্লাহ আবু।

তিনি বলেন, যৌক্তিক কারণেই তাদের বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করা হচ্ছে।

গত পয়লা জুন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর খিলগাঁও থানার নাশকতার মামলায় জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবী সানা উল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার ও সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবা। অন্যদিকে মামলার পাঁচ মাস পর সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন পুলিশ। ঢাকা মহানগর হাকিম শামছুল আরেফীর উভয় পক্ষের শুনানি শেষে তার জামিন ও রিমান্ড নামঞ্জুর করেন।

২৮ মে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদুর ছয় মামলায় ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর তিন মামলায় জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবীরা।

অপর দিকে নাশকতার মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদুর বিরুদ্ধে পল্টন থানায় দায়ের করা পৃথক ছয় মামলায় ৬০ ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর পল্টনের দুই ও মতিঝিলের এক মামলায় ২৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ ।

ঢাকা মহানগর হাকিম এমদাদুল হক উভয় পক্ষের শুনানি শেষে তাদের রিমান্ড ও জামিন নামঞ্জুর করেন।

২০ মে পল্টন থানায় নাশকতার তিন মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানা উল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার ও সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবা। তার জামিন আবেদনের পরে পুলিশ ৩০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। ঢাকা মহানগর হাকিম অশোক কুমার দে তার রিমান্ড ও জামিন নামঞ্জুর করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর : ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আটক করে পুলিশ। আটকের পর তাকে দুই মামলায় আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। ২৭ জানুয়ারি পল্টন থানার গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় করা মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম আলী মাসুদ সেখ তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ৩ ফেব্রুয়ারি মতিঝিল থানার বিস্ফোরক মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম এমদাদুল হক পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রুহুল কবির রিজভী : রিজভীকে চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি রাত পৌনে ৩টার দিকে রাজধানীর গুলশানের পার্ক রোডের একটি বাসা থেকে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদস্যরা গ্রেফতার করে। আটকের পর নাশকতার বিভিন্ন মামলায় ৩০ দিনের রিমান্ড দেন আদালত।

শামসুজ্জামান দুদু : ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি মিরপুর এলাকা থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদুকে আটক করে পুলিশ। আটকের পর তাকে চার মামলায় ১৫ দিনের রিমান্ড দেন আদালত। বর্তমানে তিনি কারাগারে আটক আছেন।

চাঁদপুর টাইমস : এসএস/ এমআরআর/২০১৫

চাঁদপুর টাইমস’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।