ছাত্রদলের কমিটিতে প্রত্যাশীত পদ না পাওয়াসহ নানা অভিযোগে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
এমনকি দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছবিতে আগুন ও ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করেছে তারা। আর এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খালেদা জিয়া। জানা গেছে, নজীরবিহীন এ হামলায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেবেন তিনি। বিএনপি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর, বেগম খালেদা জিয়ার ছবি ও ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন খালেদা জিয়া। একইসঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তদের দ্রুত চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির নির্দেশও দিয়েছেন। তবে আসন্ন কাউন্সিল যাতে বাধাগ্রস্থ না হয় সে দিকেও সজাগ দৃষ্টি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। এ সময় কার্যালয়ের সামনে থাকা তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এছাড়া জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর, খালেদা জিয়ার ছবি ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় আগুন দেয়। ‘এলাকা প্রীতি, পদ-বাণিজ্য ও পকেট কমিটি মানি না মানবো না’ লেখা ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের নামের ব্যানার নিয়ে ভাঙচুর চালায় তারা।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির এক নেতা (নাম প্রকাশ না করার শর্তে) গণমাধ্যমকে বলেন, “বিদ্রোহ করলেই ভালো পদ পাওয়া যায়। গত বছর যারা কার্যালয়ে তালা লাগিছিল, বিশৃঙ্খলা করেছিল তাদেরকেও গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়া হয়েছে। এতে অবাধ্য নেতারা বিদ্রোহ করতে আরো উৎসাহী হন।”
তবে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঘটনায় ভিন্ন কথা বলছেন দলটির দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রিজভী আহমেদ। তিনি বলছেন, “ছাত্রদলের কেউ ভাঙচুর করেনি, এটি সরকারের চক্রান্ত।”
রিজভী বলেন, “বিএনপির কাউন্সিলকে বাধাগ্রস্ত করতে সরকার নানাভাবে চক্রান্ত চালাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে সরকারের প্রশ্রয়ে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা বিএনপি অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে।”
রিজভী আরো বলেন, “পল্টন থানা থেকে পার্টি অফিস মাত্র একশ’ কিংবা দেড়শ গজ দূরে। তাছাড়া কার্যালয়ের আশপাশে থাকা সাদা পোশাকে এবং পোশাকধারী পুলিশ থাকেলও তারা পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় ছিল। পুলিশের এ নিরবতা থেকেই বোঝা যায় এটি সরকারের মদতে হয়েছে।”
এ প্রসঙ্গে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান জানান, “দলীয় কার্যালয়ে যারা হামলা চালিয়েছে তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার চিন্তা করছে বিএনপির হাইকমান্ড।”
নেক্কারজনক এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে চিহ্নিত করতে তদন্ত চলছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, ভেঙে ফেলা জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল সংস্কার করা হচ্ছে।
কার্যালয়ের নিচে ভাঙচুর করা দোকানটি মেরামত করা হয়েছে। তবে ৪র্থ তলায় জ্বালিয়ে দেয়া ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়টি রয়েছে তালাবদ্ধ অবস্থায়।
নিউজ ডেস্ক : আপডেট ২:০৬পিএম, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, সোমবার
ডিএইচ