কথাটা শুনতে আবাক লাগলেও সত্যি।বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে বাসমতি চালের ভাত খাওয়া শুরু করলে শরীরে ক্যালরির প্রবেশের মাত্রা কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে এমন অনেক উপকারি উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যার প্রভাবে ওজন হ্রাসের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। ফলে অল্প সময়ই ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না। তবে এই বিশেষ ধরনের চাল দিয়ে তৈরি ভাত খাওয়া শুরু করলে যে কেবল ওজনই কমে, এমন নয়। সেই সঙ্গে ক্যান্সারের মতো দুরাগ্য ব্যাধীর ঝুঁকি কমায়। এছাড়া বাসমতি চালে উপস্থিত ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, মিনারেল এবং নানাবিধ ভিটামিন শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে একাধিক শারীরিক সমস্যা ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। এগুলো সম্পর্কে জানিয়েছে জীবনধারা বিষয়ক সাময়িকী বোল্ডস্কাই।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার সুযোগই পায় না
বাসমতি চালে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম শরীরে প্রবেশের পর ব্লাড ভেসেলের দেওয়ালের উপর চাপ কমতে শুরু করে। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না।ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে বাসমতি চালে “থিয়ামিন” নামক একটি ভিটামিন থাকে, যাকে চিকিৎসা শাস্ত্রে ব্রেন ভিটামিন নামেও ডাকা হয়। কারণ এই বিশেষ ভিটামিনটি শরীরে প্রবেশ করার পর নার্ভাস সিস্টেমের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না। ফলে মনোযোগ ক্ষমতা তো বাড়েই, সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তিরও উন্নতি ঘটে চোখে পরার মতো। শুধু তাই নয়, অ্যালঝাইমার্সের মতো ব্রেন ডিজিজকে দূরে রাখতেও এই ভিটামিনটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
এনার্জির ঘাটতি দূর হয়
শরীরকে চাঙ্গা রাখতে বাস্তবেই বাসমতি চাল বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে এই চাল দিয়ে তৈরি ভাত খাওয়া মাত্র শরীরে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেটের ঘাটতি দূর হয়। সেই সঙ্গে প্রতিটি কোষ চাঙ্গা হয়ে উঠতেও সময় লাগে না। ফলে সার্বিকভাবে শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায় চোখের পলকে। সেই সঙ্গে ক্লান্তিও দূর হয়।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
সেইসব খাবারই খাওয়া উচিত যা রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করবে না। আর ব্রাউন বাসমতি চালের গ্লাইকেমিক ইনডেক্স সাধারণ চালের থেকে অনেক কম। তাই যাদের ডায়াবেটিক তারাও ইচ্ছা হলে বাসমতি চাল খেতে পারেন। তাতে তাদের কোনো ধরনের শারীরিক ক্ষতি হবে না। তবে প্রয়াজনে একবার চিকিৎসকের সঙ্গে এ বিষয়ে পরামর্শ করে নিতে ভুলবেন না।
হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে এবং হার্টের ক্ষমতা বাড়ে
বাসনমতি চালে রয়েছে থিয়ামাইন এবং নায়াসিনের মতো ভিটামিন, যা হজম শক্তির উন্নতি ঘটায়। সেই সঙ্গে নার্ভাস সিস্টেম এবং হার্টকেও ভালো রাখে। শুধু তাই নয়, নিয়মিত এই চালের ভাত খাওয়া শুরু করলে সার্বিকভাবে শরীর চাঙ্গা হয়ে উটতেও সময় লাগে না।
খিদে মিটে যায় নিমেষে
সাধারণ চালের থেকে বাসমতি চাল হজম হতে বেশি সময় লাগে। ফলে অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভার থাকে। তাই আপনি যদি চান আপনার ক্ষিদেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে, তাহলে আবশ্যই খাওয়া শুরু করতে পারেন এই চালটি।
ক্যান্সারের মতো মারণ ব্যাধি দূরে থাকে
যত বেশি ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাবেন, তত কোলন ক্য়ানসার হওয়ার আশঙ্কা কমবে। আর বাসমতি চালে তো প্রচুর মাত্রায় ফাইবার রয়েছে। বিশেষত ব্রাউন বাসমতি চালে।এক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, প্রতিদিন ৩০ গ্রাম করে ফাইবার খেলে কোলন ক্য়ানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যায়।
হরমোনের ক্ষরণ ঠিক মতো হয়
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে বাসমতি চালে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর হরমোনের ক্ষরণ যাতে ঠিক মতো হয় সেদিকে খেয়াল রাখে। ফলে মন-মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমে। সেই সঙ্গে নানাবিধ রোগভোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও হ্রাস পায়।
নানাবিধ পেটের রোগের প্রকোপ কমে
ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে কনস্টিপেশন সহ নানা ধরনের পেটের রোগ সারাতে বাসমতি চাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।