একজন দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রধান ও নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। আরেকজন জাতি গড়ার কারিগর শিক্ষক। হঠাৎ একে অন্যকে জড়িয়ে ধরার দৃশ্য কেড়ে নিল উপস্থিত সবার দৃষ্টি। এ চিত্র প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে।
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বন্ধনের চিত্র ধারণ করতে সবকটি ক্যামেরার ফ্লাশ এক সঙ্গেই জ্বলে ওঠে।
পর মুহূর্তে জানা যায়, এ বন্ধন সাধারণ কোনো বন্ধন নয়। এ বন্ধন সংগ্রামের, ইতিহাসের। অনেক দিন আগের কথা। দু’জনেই তখন ঢাকার ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী। পরাধীন দেশের মাটিতে দুই মতাদর্শ ধারণ করেও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংগ্রাম করেছিলেন তারা।
ইডেন কলেজ শাখায় নির্বাচিত হয়েছিলেন একজন ভিপি, অপরজন জিএস। দেখেই একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরেন।
উত্তাল দিনগুলোতে রাজপথে ছিলেন একসঙ্গে। রাজনীতির আদর্শের মতভিন্নতা ছিল। দেশের প্রশ্নে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাক দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রাজপথ কাঁপিয়েছেন। সেই সম্পর্ক এখনও অটুট। শত ব্যস্ততার মাঝেও দেখা হলেই স্মৃতিচারণে মেতে ওঠেন। কৈশোরের সেই দিনগুলোতে বারবার ফিরে যান। কি রকম ছিল সেই আন্দোলনের দিনগুলো, সেই সময়ের ছাত্র রাজনীতিসহ নানা খুনসুটি।
তাদের একজন বাংলাদেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হ্যাটট্রিক জয়ে দেশের চতুর্থবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শিগগিরই শপথ নেবেন। শেখ হাসিনা এখন শুধু বঙ্গবন্ধু কন্যা বা দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভাপতি কিংবা দেশের প্রধানমন্ত্রীই নন। তিনি এখন পুরো বিশ্বের বিস্ময়।
যিনি গতিশীল ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে তৃতীয় বিশ্বের ভঙ্গুর অর্থনীতির একটি দেশকে নিয়ে যাচ্ছেন উন্নতির শিখরে। বিশ্ব মোড়লরা এখন বাংলাদেশের দিকে অবাক হয়ে তাকায়। বাংলাদেশকে সম্মানের চোখে দেখে, সমীহ করে চলে। তা সম্ভব হয়েছে শুধু শেখ হাসিনার ক্যারিশমেটিক নেতৃত্বের কারণেই।
আরেকজন হলেন প্রফেসর নাজমা শামস। বর্তমানে বাংলাদেশ স্কাউট গার্লস ইন স্কাউটিং ফোরাম জাতীয় কমিটির সভাপতি। ছাত্রজীবনের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে অভিনন্দন জানাতে এসেছিলেন। দেখেই একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরেন। তাদের মধ্যে সম্পর্কের এ উষ্ণতা দেখে অভিনন্দন জানাতে আসা সব উৎসুক দৃষ্টি কিছুক্ষণ আটকে যায় সেদিকে। একে একে ক্যামেরাগুলোর ফ্লশলাইট জ্বলে উঠল। তখন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীই মুখ খুললেন।
জানালেন, তিনি যখন ইডেন কলেজের ছাত্রসংসদের ভিপি ছিলেন তখন প্রফেসর নাজমা শামস ছিলেন জিএস। শেখ হাসিনা নির্বাচিত হয়েছিলেন ছাত্রলীগ থেকে, আর নাজমা শামস ছিলেন ছাত্র ইউনিয়ন থেকে। কিন্তু সম্পর্কটা ছিল খুবই আন্তরিকতায় ভরপুর। সেই সম্পর্ক এখনও আছে।
বার্তা কক্ষ
২ জানুয়ারি, ২০১৯