বিশেষ সংবাদ

লক্ষ্মীপুরে মেয়ের চেষ্টায় ২২ বছর পর বাবা-মায়ের সংসার জোড়া

মেয়েরাও পারে, মেয়েরাও মানুষ, সদিচ্ছা, উৎসাহ আর সাহস থাকলে পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য অনেক কিছু করতে পারে। এমন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন আয়েশা সিদ্দিকা।

অবিশ্বাস আর অভিমানে, বাবা-মা দু’জন দুই প্রান্তে। একজন লক্ষ্মীপুরে অপরজন কক্সবাজার। এভাবে কেটে গেছে ২২ বছর। তাদের এ দূরত্বে এক বছর বয়স থেকেই বাবার আদর-স্নেহ থেকে বঞ্চিত হয় মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা (২৩)।

অবশেষে কলেজ পড়ুয়া মেয়ে আয়েশার প্রচেষ্টায় বুধবার সন্ধ্যায় তার বাবা-মায়ের অভিমানের দেয়াল ভাঙ্গে। আয়েশা ফিরে পায় বাবা সিদ্দিক উল্লাকে (৫০)।

জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চর জাঙ্গালিয়া গ্রামের সিদ্দিক উল্লাহ ১৯৯৩ সালে কক্সবাজারের বাসিন্দা রহিমা খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের এক বছর পর তাদের ঘরে আসে কন্যা সন্তান আয়েশা। দু’ বছরের মাথায় তাদের মধ্যে অবিশ্বাস আর অভিমানের দেয়াল তৈরি হয়।

একপর্যায়ে সিদ্দিক মেয়ে ও স্ত্রীকে রেখে লক্ষ্মীপুরে চলে আসেন। বিয়ে করে সংসার করেন। কিন্তু রহিমা খাতুন মেয়ে আয়েশাকে বুকে নিয়ে স্বামীর অপেক্ষায় ২২ বছর কাটিয়ে দেন।

সম্প্রতি মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা তার বাবাকে ফিরে পেতে কক্সবাজার আইন সহায়তা কেন্দ্রের আশ্রয় নেন। এরই প্রেক্ষিতে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম মজুমদার ও হাজিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিনের মাধ্যমে মেয়ে আয়েশা ফিরে পেয়েছে বাবাকে; স্ত্রী রহিমা খাতুন পেয়েছেন স্বামী। বুধবার রাতে সিদ্দিক তার মেয়ে আয়েশা ও স্ত্রী রহিমাকে লক্ষ্মীপুরের ঘরে তুলেছেন।

আয়েশা বলেন, ‘২২ বছর পর বাবাকে ফিরে পেয়েছি; আমি বাবা-মাকে সব সময় এক সঙ্গে চাই; কাউকে হারাতে চাই না। এসময় রহিমা খাতুন কিছু বলতে চেয়ে আনন্দের কান্নায় বলতে পারছিলেন না।’

সিদ্দিক উল্যাহ বলেন, আমার বিশ্বাস ছিলো একদিন আমার মেয়েকে আমি কাছে পাবো।

হাজিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন, ২২ বছর স্বামী-স্ত্রী অভিমানের দেয়াল ছিলো। এতে আদর থেকে বঞ্চিত হয়েছে মেয়ে। সেই মেয়েই তাদের একত্রিত করেছে। তাদের জন্য অনেক শুভ কামনা।

কুমিল্লা করেসপন্ডেন্ট : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৭:৫০ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ

Share