বিভিন্ন ধরনের রঙ্গিন খেলনা দিয়ে শিশুদের মুখে যে কিনা সবসময় হাসি ফুটিয়ে থাকেন। অথচ সেই খেলনা বিক্রেতা বাদল আহমেদ পাটওয়ারীর মুখেই এক টুকরো হাসি নেই। কারন বেচা বিক্রির আয় রোজগার আর বর্তমান দ্রব্যমুল্যের সাথে তার উর্পাজনের কোন মিল নেই।
প্রায় সময়ই চাঁদপুরের একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র বড় স্টেশন মোলহেড এলাকায় নানা রঙ্গের খেলনা হাতে সাজিয়ে যার দেখা মিলে। বড়দের বিনোদনের পাশি পাশি, শিশুদের বিনোদন দিতে, তাদের মুখে হাসি ফুটাতে বাদল পাটওয়ারী পসরা সাজিয়ে বিক্রি করেন, প্লাস্টিকের চায়না খেলনা, বাঁশি, বেলুন, ঘোড়া, ব্যাঙ,বিমান, টিয়া, পাখি, পুতুল, হাঁস, মোড়গ, ডায়নাসার, জেব্রা সহ নানা রকমের খেলনা।
এইসব খেলনা বিক্রি করে যা আয় হয়,তা দিয়ে মোটামুটি ভাবে চলে তার সংসার। কারন তিনি এসব খেলনা বিক্রি করে যা পান তার আয় দিয়ে ঠিকমতো সংসার খরচ চলেনা। তার ওপর আবার ছেলে মেয়েদের পড়ার খরচ। সংসার এবং সন্তানদের পড়ালেখার খরচ যোগাতে মাঝে,মাঝে চরম হিমশিম খেতে হয় বাদল মিয়াকে।
চাঁদপুর শহরের উত্তর শ্ররামদী, কবরস্থান রোডের মৃত আলী আহম্মদ পাটওয়ারীর ছেলে,মোঃ বাদল আহমদ পাটওয়ারী (৪২)। জীবন,জীবিকার তাগিদে ১২ বছর বয়স থেকেই বাঁশি, বেলুন এবং কাগজের ফুল বিক্রি শুরু করেন। যুগের পরিবর্তনে সেইসব খেলনা থেকে ব্যবসাটাকে বড় করে গত আট বছর ধরে এইসব চায়না খেলনা বিক্রি শুরু করেন। এক একটি খেলনা ৫০ টাকা অথবা ৮০ টাকা থেকে ১’শ টাকা মূল্যে বিক্রি করে থাকেন। তার কাছে সর্বনিন্ম ৫০ থেকে সর্ব্বোচ বাচ্চাদের সোফা ৪’শ টাকা মূল্যের খেলনা পাওয়া যায় বলে তিনি জানান। এতে যদি দৈনিক এক হাজার টাকা বিক্রি হয়ে থাকে সেখানে লাভ থাকে ৩ থেকে ৪’শ টাকা।
শিশুদের মুখে হাসি ফুটানো এই খেলনা বিক্রেতা বাদল আহমদ জানান, সবসময় তেমন বেচা বিক্রি হয়না। শুক্রবার ছুটির দিন হয়তো হাজার ১২’শ টাকা বিক্রি হয়ে থাকে। এছাড়াও যেকোন উৎসব এলে একটু ভালো বেচা বিক্রি হয়। তার মধ্যে পহৈলা বৈশাখ, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা,১৬ ডিসেম্বর,একুশে ফেব্রুয়ারি, ২৬ শেমার্চ, মেলা এবং ওরশ সহ বিভিন্ন বিশেষ দিনে তার এসব খেলনা একটু বেশি বেচা বিক্রি হয়ে থাকে।
বাদল আহমেদ বলেন, এখন যদি প্রতিদিন এক হাজার টাকাও কামাই তাতেও পোষেনা। কারন আগের তুলনায় এখন জিনিস পত্রের দাম বেশি। এক কেজি চাউলের দাম ৫০ টাকা, পেয়াজের কেজি দুই টাকা। এত দাম দিয়ে জিনিস পত্র কিনে সংসার চালাতে আমাদের মতো গরীব লোকদের অনেক হিমশিম খেতে হয়।
এর বাইরে ছেলে মেয়েদের পড়ার খরচ। তারপরেও আমি বাঁশি বেলুন বিক্রি করে অনেক কষ্টে আমার দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। কষ্ট হলেও এসব খেলনা বিক্রি করে শিশুদের মুখে হাসি ফুটিয়ে আমাকে বাঁচতে হবে।
প্রতিবেদক:কবির হোসেন মিজি