বাণিজ্যিকভাবে আম চাষ করে সফল সজিব

বাণিজ্যিকভাবে আম্রপলি জাতের আম চাষ করে বিপ্লব ঘটিয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার আমগাঁও ইউনিয়নের শিক্ষিত যুবক মোঃ আল-ওয়াসিফ সজিব।

২০১৩ সালে পরীক্ষামূলকভাবে ৩.৩৩ একর জমিতে আ¤্রপলি জাতের আম চাষ করে বেশ সাফল্য পেয়েছেন তিনি। প্রথমে সে ৩.৩৩ একর জমিতে আম্রপলি জাতের ১২ শত আমের গাছ রোপণ করেন। দুই বছরের ব্যবধানে ২০১৫ সালে ঐ আম বাগান থেকে ৬ লাখ টাকার আম বিক্রি করে। এতে সে বেশ লাভবান হয়। এ বছর ওই বাগান ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার আম বিক্রি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

৩০ মে আমগাঁও গ্রামে শিক্ষিত যুবক আল-ওয়াসিফ সজিবের বাগানে গেলে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

সজিব চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ২০০৫ সালে জেলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০০৭ সালে পীরগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে এইচএসি পাশ করে ২০০৯ সালে ঢাকার একটি স্বনামধন্য বে-সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে ভর্তি হন। ক্লাসের প্রথম দিনই কামরুল হাসান স্যার বলে শিক্ষা জীবন শেষে চাকরীর পেছনে না ঘুরে ব্যবসা বা কৃষি  পেশায় নিজেকে কাজে লাগালে সবচাইতে দ্রুততম উন্নয়ন করা সম্ভব। তাই শিক্ষা জীবন শেষ করে সজিব গ্রামে ফিরে আসেন।

সজিব ব্যবসার বদলে বেছে নেন কৃষি। প্রথমে সে বিভিন্ন প্রজাতির চারা গাছের একটি নার্সারী তৈরি করেন। এতে সে বেশ লাভবান হয়। পরবর্তি সে কৃষি কাজে ব্যাপক প্রসার ঘটার জন্য আম চাষ করার সিদ্ধান্ত নেন।

তাই সজিব নিজ পৈত্রিক জমিতে ২০১৩ সালে পরীক্ষামূলকভাবে ৩.৩৩ একর জমিতে ১২ শত আমের গাছ রোপণ করে আ¤্রপলি জাতের আম চাষ শুরু করেন।

একটি চারা আম গাছে আম ধরা পর্যন্ত তার খরচ হয় প্রায় ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা। প্রথম বছর ২০১৫ সালে গড়ে প্রতিটি গাছ থেকে ১০ থেকে ১২ কেজি আম পেয়েছিল।

প্রতি কেজি আম বিক্রি করেছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। এ বছর একটি আম গাছে পরিচর্যা খরচ হয়েছিল  ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। কিন্তু এবার গড়ে প্রতিটি গাছে ২০ থেকে ২২ কেজি আম পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে যেমন একটি গাছের পরিচর্যা খরচ বাড়বে তেমনি আমের সংখ্যাও বাড়তে থাকবে।

আম চাষ লাভবান হওয়ায় সজিব পর্যায়ক্রমে ৪৪ একর জমিতে প্রায় ১৩ হাজার ৫০০ আ¤্রপলি জাতের আম গাছ রোপণ করে বেশ কয়েকেটি বাগান করে ফেলেছে। সজিবের আম চাষ দেখে আশেপাশের ২০ জন কৃষক ১০০ একর জমিতে আমের চাষ করছে। আগামী আরো বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নঈমুল হুদা সরকার বলেন এই অঞ্চল আম চাষের জন্য আবহাওয়া ও জলাবায়ু উপযোগী। এ অঞ্চলে আম চাষ করে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বাইরে রফতাণী করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। সজিবকে আমাদের দপ্তর থেকে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্য কেউ যদি এ ধরণের বাগান করতে চাই তাকেও আমরা পরামর্শ দেবো।

তবে সজিব বলেন ‘সরকারিভাবে যদি আমাদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ ও সার কীটনাশক সরবরাহ করা হয় তাহলে আরো আম চাষে বিপ্লব ঘটাতে পারব।’

]কবিরুল ইসলাম কবির, ঠাকুরগাঁও করেসপন্ডেন্ট

:  আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৬:০০ পিএম,  ৩১ মে  ২০১৬, মঙ্গলবার

ডিএইচ

Share