ঢালিউডে আপনার প্রিয় নায়ক কে? ‘শাকিব খান।’ গত মঙ্গলবার বললেন চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস।
গত বছর ১০ এপ্রিল বিকেলে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে ছেলে আব্রাম খান জয়কে সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত হন অপু বিশ্বাস। সেদিন প্রথম সবাইকে জানান, তিনি বিবাহিত, তাঁর স্বামী শাকিব খান আর তাঁদের ছেলে আব্রাম খান জয়ের বয়স ছয় মাস। স্ত্রীর এভাবে জনসমক্ষে সবকিছু প্রকাশ করার ব্যাপারটি সেদিন মেনে নিতে পারেননি দেশের চলচ্চিত্রের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান। ফলে তাঁদের দাম্পত্য সম্পর্কে তিক্ততা বেড়ে যায়। একসময় তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে।
এরপর গত ১৩ ডিসেম্বর শাকিব খান, অপু বিশ্বাস আর জয়কে আবার একসঙ্গে দেখা গেল। ছবিতে দেখা যায়, সেদিন তাঁরা একই ডিজাইনের ম্যাচিং করা পোশাক পরেছেন। আবার একসঙ্গে ছবিও তুলেছেন। পরে জানা গেছে, ছবিটি জয়ের স্কুলে তোলা। দুই ঘণ্টারও বেশি সময় স্কুলে জয়ের বন্ধুদের সঙ্গে খেলায় মেতে ছিলেন শাকিব আর অপু।
আব্রাম খান জয়ের বয়স দুই বছর সাড়ে তিন মাস। অপু বিশ্বাস জানিয়েছেন, ছেলেকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার আইএসডি স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রি-স্কুল শাখায় নিয়মিত যাচ্ছে জয়। সন্তান স্কুলে যাচ্ছে, তাই বাবা শাকিব খান আর মা অপু বিশ্বাস ভীষণ উচ্ছ্বসিত।
১৩ ডিসেম্বর জয়ের স্কুলে একটি অনুষ্ঠান ছিল। সেদিন থেকে স্কুল এক মাসের ছুটি হয়েছে। ওই ছুটি উপলক্ষে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মা-বাবাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেই আমন্ত্রণেই গিয়েছিলেন তাঁরা। স্কুল কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী সন্তানের সঙ্গে বাবা-মাকেও ম্যাচিং করা পোশাক পরে আসতে হবে। প্রি-স্কুলের শিক্ষার্থীদের বাবা-মায়ের সেই ছবি দেওয়ালে টাঙিয়ে রাখা হবে। শিক্ষার্থীরা যখন ক্লাসে ঢুকবে, তখন তারা বাবা-মায়ের হাসিমুখের সেই ছবিটা দেখবে। তা থেকে বাচ্চারা উৎসাহিত হবে। শিশুদের ‘হ্যাপি মোমেন্ট’ উপহার দেওয়ার জন্যই স্কুল কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিবাহবিচ্ছেদ হলেও সন্তানের কারণে মা-বাবার কাছাকাছি থাকাটা কতটুকু জরুরি? অপু বিশ্বাস বলেন, ‘বিবাহবিচ্ছেদ হলে সন্তান মা-বাবাকে একসঙ্গে পায় না। এতে সন্তানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। কিন্তু আমি সেই কাজ করতে চাই না। সন্তানের ওপর এ ধরনের প্রভাব পড়ুক, আমি চাইনি। আমার আর শাকিবের মধ্যে টানাপোড়েন থাকতেই পারে। তাই বলে তা সন্তানকে বুঝতে দেওয়া যাবে না। তা আমরা দুজন কেউই করি না। সন্তানের বিকাশের জন্য যেকোনো কাজে আমরা দুজন একসঙ্গে উপস্থিত হই। আর এটা জরুরিও। এ বিষয়ে আমি শাকিবের ওপর খুশি।’
অপু বিশ্বাস আরও বললেন, ‘এর আগে যা-ই হোক, এখন শাকিবকে তার সন্তানের জন্য উপযুক্ত বাবা মনে হয়। সন্তানের জন্য সে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে। শাকিব বলে, আমার সন্তানের মানুষ হওয়ার জন্য যা দরকার, তা-ই করব।’
এবার অপু বিশ্বাসকে জিজ্ঞেস করা হয়, দেশের বাইরে গেলে কার কথা বেশি মনে পড়ে? তিনি বললেন, ‘আমার ছেলে আব্রামের কথা বেশি মনে পড়ে।’ গত ৭ ডিসেম্বর হায়দরাবাদের প্রসাদ ল্যাব বানজারা হিলসে ‘তেলেঙ্গানা বাংলা চলচ্চিত্র উৎসব-আয়না ২০১৮’ আয়োজনে ‘দুই বাংলা মৈত্রী পুরস্কার’ পেয়েছেন বাংলাদেশের অপু বিশ্বাস আর ভারতের দেব। সেখানে থেকে ফিরে আসার পর ছেলের স্কুলের অনুষ্ঠান উপলক্ষে শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসকে অনেক দিন পর আবার একসঙ্গে দেখা যায়।
তাঁদের এই ছবি দেখে অন্য কিছু ভাবার কোনো অবকাশ আছে? অপু বিশ্বাস বলেছেন, ‘জয়ের বাবা সন্তানের সুখের ব্যাপারে সবকিছুই করতে পারে। সব সময়ই সন্তানের সুখের বিষয়কে প্রাধান্য দেয়। শাকিব যখন স্কুলে ঢুকেছে, তখন তার মধ্যে নায়কোচিত কোনো ব্যাপার ছিল না। জয়ের বন্ধুদের সঙ্গে খেলায় মেতে ছিল। পুরো সময়টা খুব আনন্দের মধ্যে কাটিয়েছে। আমার ছেলে তার বাবাকে কাছে পেলে আর সব ভুলে যায়। সন্তান আমার কাছে সব সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
স্কুলে একই ডিজাইনের পোশাক পরার ব্যাপারে অপু বিশ্বাস জানান, ভাবনাটি তাঁরই। তাঁরা একই ডিজাইনের বাঙালি পোশাক পরেছিলেন। তাতে লেখা ছিল ‘বাংলাদেশ’। এ ধরনের পোশাক পরার জন্য তিনি শাকিবকে বলেছিলেন। যেহেতু এটি ডিসেম্বর মাস। বিজয়ের মাস। এ কারণেই অপু চেয়েছিলেন, পোশাকেও থাকুক বিজয়ের আবহ। শাকিবও অপুর কথা রেখেছেন।
অপু বিশ্বাস সর্বশেষ কাজ করেছেন ‘শর্টকাট’ আর ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২’ ছবিতে। জানালেন, ছবি দুটির কাজ প্রায় শেষ। ‘শর্টকাট’ কলকাতার ছবি। এর শুটিং শেষ। কিছু ডাবিং বাকি আছে। ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২’ ছবির শুধু গান বাকি। আর নতুন ছবির জন্য নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করছেন? অপু জানালেন, ‘একটি নতুন ছবিতে কাজের প্রস্তুতি চলছে। এ জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছি। সাঁতার কাটছি, নিয়মিত ব্যায়ামাগারে যাচ্ছি। আরও ওজন কমাতে হবে।’ (প্রথম আলো)
বার্তা কক্ষ
১৯ ডিসেম্বর,২০১৮