জাতীয়

’বাংলাদেশ বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপনে সফল’

বেগম রোকেয়া পর্দার আড়ালে থেকে শিক্ষাগ্রহণ করেছেন। সেসময় এমন অবস্থা ছিল কোনো নারী পড়ালেখা করছে এটা জানাজানি হলে বাবা-মাকে হেয় প্রতিপন্নও হতে হতো। তিনি (রোকেয়া) স্বপ্ন দেখেছিলেন মেয়েরা জজ, ব্যারিস্টার হবেন। আজ তার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে।

বুধবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া দিবস ও পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, ‘আজ বাংলাদেশ বিশ্বে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সফল হয়েছে। আজ নারীরা তাদের অবস্থান করে নিতে পেরেছে। যা ছিল বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘তৃণমূল থেকে নারী নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য প্রথমে আমি কাজ শুরু করেছিলাম। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মেয়েদের অংশগ্রহণ শুরু করেছিলাম ৯৬ সালে। যখন অনেকে এটার বিরোধিতা করেছিল।’

তিনি বলেন, ‘৯৬ সালের আগে কোনো মেয়ে সচিব, এসপি, ইউএনও ছিল না। তখন আমি মেয়ে প্রথম সচিব নিয়োগ দিই, প্রথম এসপি বানাই, প্রথম ইউএনও বানাই। বুয়েটে প্রথম নারী ভিসি বানাই আমি। এ কাজটা করা খুব সহজ ছিল না। আমাদের ভিতর থেকে অনেকে এটার বিপক্ষে ছিল। আমিও জিদ ধরে বসে ছিলাম, কীভাবে প্রথম মেয়ে ভিসি দেয়া যায়। শেষ পর্যন্ত মেয়ে ভিসি দিয়েছিলাম আমি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা আমাদের পথ দেখিয়ে গেছেন। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা করেন। চাকরির ক্ষেত্রে তিনি মেয়েদের জন্য কোটার ব্যবস্থা করেছিলেন। সব সময় তিনি একটি কথা বলতেন একটা মেয়ে যখন টাকা আয় করে বাড়িতে ফেরে তখন তার কথার একটা দাম থাকে। সমাজ তাকে সম্মান করে। আজ সেই অবস্থা সৃষ্টি করার সুযোগ এসেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্যাতিত অনেক মেয়ের পরিচয় দিতে চাইতেন না পরিবার। প্রশ্ন যখন উঠলো এদের বাবার নাম কী হবে। তখন জাতির জনক বলেছিলেন, লিখে দাও এদের পিতার নাম শেখ মুজিবুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক নির্যাতিতা নারীর বিয়ের সময় তাদের কাবিননামায় পিতার নাম লেখার সময় জাতির পিতা বলেছিলেন- লেখ, এদের পিতার নাম শেখ মুজিবুর রহমান।’

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক নারী শাড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে তাদের শাড়ি পড়তে দেয়া হতো না। দিনের পর দিন তাদের উপর নির্যাতন চালানো হত। পরবর্তীতে বোর্ড করে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দায়িত্ব নিয়েছিলেন জাতির পিতা। তাদের চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড থেকে ডাক্তার আনা হয়েছিল।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত নারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনার যারা এখানে উপস্থিত আছেন তারাও নিজেরা নিজেদের অবস্থান থেকে নারীদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করুন। আগামীতে যেন আমি আরো পুরস্কার দিতে পারি।’

নিউজ ডেস্ক  ।। আপডেট : ০১:৩ পিএম, ০৯ ডিসেম্বর ২০১৫, বুধবার

ডিএইচ

Share