ওয়ানডেতে নিজস্ব গণ্ডি ছাড়িয়ে এখন রাজ্যপাট কিছুটা বিস্তৃত করা যাচ্ছে দেশের বাইরেও।
তবে টেস্টে ব্যাপারটি তা নয়। মাত্রই নিজেদের মাঠে পায়ের নিচে শক্ত মাটি খুঁজে পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। এই সময়েই যদি অস্ট্রেলিয়া শেষ পর্যন্ত দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে এখানে আসে, তাহলে মুশফিকুর রহিমদের লক্ষ্যটা কী হবে? গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বড় কিছু করার লক্ষ্যের কথাই শোনালেন বাংলাদেশের হেড কোচ চন্দিকা হাতুরাসিংহে
অনুশীলন শিবিরে মনোযোগটা যেখানে…
শুরুতে ফিটনেসেই জোরটা দেওয়া হয়েছিল বেশি। কারণ সেই আফগানিস্তান সিরিজ থেকে আমরা নন-স্টপ ক্রিকেট খেলে আসছিলাম। ছেলেদের তাই ফিটনেস নিয়ে কাজ করার সুযোগই ছিল না। একটা লম্বা বিরতি পাওয়ায় সেই সুযোগটা হলো। শুরুটা ফিটনেস দিয়ে হলেও এখন আমরা স্কিলেই সর্বোচ্চ মনোযোগ দিচ্ছি। মার্ক (ব্যাটিং উপদেষ্টা মার্ক ও’নিল) ব্যাটসম্যানদের টেকনিক নিয়ে কাজ করছেন, কাজ করছেন টেল এন্ডারদের নিয়ে।
নতুন মৌসুমটা যেভাবে শুরু করার ইচ্ছে…
টেস্টে আমরা কিছুদূর এগিয়েছি। তা ছাড়া ভারতীয় উপমহাদেশে টেস্ট ম্যাচ জেতার মতো গেম প্ল্যান যে আমরা করতে পারি, সেই বিশ্বাসও আছে আমাদের।
আর আমরা জিতে দেখিয়েছিও। নিজেদের কন্ডিশনে আমাদের হারানো কঠিনও। কাজেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুটি টেস্টেই আমরা জিততে চাইব।
আসন্ন চ্যালেঞ্জ নিয়ে…
অস্ট্রেলিয়া সিরিজ শেষ হতে না হতেই আমরা চলে যাচ্ছি দক্ষিণ আফ্রিকায়। ওখানে গিয়ে মানিয়ে নেওয়াটা হবে আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ওদের বিপক্ষে গেম প্ল্যান করাও তো সহজ নয়। জানা-বোঝা এবং মানিয়ে নেওয়ার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম টেস্টের আগের দুটি সপ্তাহ তাই আমাদের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। ওই জায়গাটা আমাদের কাছে অপরিচিতও। যদিও শুধু আমাদের নয়, সব দলের জন্যই ওখানে গিয়ে খেলা কঠিন। টেস্টের এক নম্বর দলও ওরা যৌক্তিক কারণেই হয়েছে। আমি বলব, আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করে আছে।
২০১৯ বিশ্বকাপ সামনে রেখে…
আমরা বৃহত্তর পরিসরে ভাবছি বলেই এই অনুশীলন শিবিরের সঙ্গে আরো অনেক খেলোয়াড়কে যুক্ত করেছি। আমাদের আসল মনোযোগটা কিন্তু ওই ২০১৯ বিশ্বকাপেই। অন্তত আমার তো বটেই (দ্বিতীয় মেয়াদে তাঁর চুক্তি ওই সময় পর্যন্তই বর্ধিত করেছে বিসিবি)। শ্রম নিংড়ানো অনুশীলন এবং প্রাণশক্তি শুষে নেওয়া অনুশীলনের সঙ্গে এই ছেলেদের অভ্যস্ত হতে হবে। এই ছেলেরাই যখন স্থানীয় ক্রিকেটে অনুশীলন করে, তখন তীব্রতাটা অত থাকে না। অনুশীলনের মানও সুবিধার হয় না। জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে অনুশীলন করে ওরা জানতে পারছে, দলে ঢুকতে হলে কোন কোন চ্যালেঞ্জগুলো ওদের উতরে আসতে হবে।
তরুণ ক্রিকেটারদের কাছে প্রত্যাশা…
আমরা চাই জাতীয় দলের জন্য খেলোয়াড়ের মজুদটা বাড়ুক। যাতে প্রয়োজনে সেখান থেকেই কাউকে বেছে নিতে পারি। আমি চাই কেউ হাত তুলে বলুক, ‘আমাকে নিন, দলে নেওয়ার পক্ষে আমি যথেষ্ট ভালো খেলোয়াড়। ’ দলের জন্য নিজেকে অবধারিত ভেবে বসে থাকার সুযোগটাই আমরা কাউকে দিতে চাই না।
কোচিং স্টাফের সম্ভাব্য নতুন সদস্যদের ভূমিকা প্রসঙ্গে…
ভূমিকা তো আলাদা করাই আছে। চম্পাকা (রামানায়েকে) ফাস্ট বোলিং কোচ, আর ম্যাকগিল দেখবে স্পিনারদের। মার্ক তো ব্যাটিং বিশেষজ্ঞ। ম্যাকগিল আসবে তিন মাসের জন্য। সে নিজে সন্তুষ্ট হলে এবং খেলোয়াড়রাও উপকৃত হলে চুক্তি দীর্ঘমেয়াদি হবে। সব কোচের ক্ষেত্রেই ব্যাপারটি তাই। ভালো কাজ করলে চুক্তি বাড়ে। কালপাগের পর কোনো স্পিন বোলিং কোচই আমাদের ছিল না। অথচ বিশেষজ্ঞতার জায়গাটিতেই কারো সাহায্য প্রয়োজন আমাদের। এঁদের কারণে আমার কাজও আরো সহজ হয়ে যাবে।
নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে…
কোচদের চাকরিই তো নির্ভর করে সাফল্যের ওপর। যদি শীর্ষকর্তারা মনে করেন যে এই দলকে আমি আরো এগিয়ে নিতে পারব, তাহলেই আমার থাকা হবে। ছেলেরা কতটা উন্নতি করছে, সেটিই আসল। দলের মান বাড়ানোর কাজটিই তো আমার চাকরি।
নিউজ ডেস্ক:
আপডেট, বাংলাদেশ ৬ :০০ পি.এম, ৩ আগস্ট ২০১৭,বৃহস্পতিবার
এ.এস