বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন রিয়াদ চেম্বারের ভাইস চেয়ারম্যান
রিয়াদ চেম্বার অফ কমার্সের ভাইস চেয়ারম্যান নায়েফ আবদুল্লাহ আল রাজি বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরব উভয় দেশেরই আরও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সম্পদের বহুমুখী ব্যবহার ও বিনিয়োগের দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, শীঘ্রই বাংলাদেশী বিনিয়োগকারীরা সৌদি আরবের বিনিয়োগের বড় অংশীদার হবেন। তিনি ৩০ অক্টোবর সোমবার রিয়াদে ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এবং রিয়াদ চেম্বার অফ কমার্সের মধ্যে ব্যবসায়িক বৈঠক এবং বিটুবি ম্যাচ মেকিং সেশন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
আগামীতে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসায়িক সহযোগিতাকে আরও দৃঢ় করার লক্ষ্যে রিয়াদ চেম্বার অব কমার্স এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সমঝোতা স্মারকে রিয়াদ চেম্বারের ভাইস চেয়ারম্যান নায়েফ আবদুল্লাহ আল রাজি ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার স্বাক্ষর করেন। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষে ৬১টি বাংলাদেশি কোম্পানির প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত বেসরকারি খাতের বৃহত্তম ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল সৌদি সফর করছেন।
রিয়াদ চেম্বার অব কমার্সের ভাইস চেয়ারম্যান নায়েফ আবদুল্লাহ আল রাজি বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান। বৈঠকে সৌদি বাজার, উপসাগরীয় অঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তম বাজার যা বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় হতে পারে বলে তিনি জানান। তিনি বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাতে সৌদি ও বাংলাদেশের নতুন ও অভিন্ন সুযোগ অন্বেষণের ওপরও জোর দেন। তিনি বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের কোনো সীমা নেই এবং সৌদি উদ্যোক্তারাও তাদের বাংলাদেশি বন্ধুদের সাথে আরও ব্যবসা করতে আগ্রহী।
ঢাকা চেম্বার সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেন, আমরা সৌদি আরবে বাংলাদেশে তৈরি পণ্য দেখে গর্ববোধ করি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি বিগত এক দশকে তার বাজার ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে এবং বিদ্যমান নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে ক্রমবর্ধমান রয়েছে। বাংলাদেশ ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে যাচ্ছে, কাজেই শুধু বাজার বৈচিত্র্য নয়, পণ্য বৈচিত্র্যও প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরবের সাথে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে তবে এই সংখ্যাটি অন্তর্নিহিত অফুরন্ত সম্ভাবনাকে সবটুকু প্রতিফলিত করে না।
তিনি বলেন, ঢাকা চেম্বারের এ ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দলে বাংলাদেশের বিশিষ্ট বড় বিনিয়োগকারীরা বিশেষ করে আইটি, কৃষি পণ্য, অবকাঠামো, নির্মাণ ও রিয়েল এস্টেট, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, গার্মেন্টস পণ্য, সিরামিক পণ্য, পর্যটন ও আতিথেয়তা, ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন এবং তারা সবাই তাদের সৌদি আরবের সাথে ব্যবসা সম্প্রসারণে আগ্রহী। পরে তিনি সৌদি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের অনুকূল বিনিয়োগ পরিবেশের উল্লেখ করে স্মার্ট ফার্মিং, আইটি, ফিনটেক, লজিস্টিকস এবং অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের জন্য আমন্ত্রণ জানান।
ঢাকা চেম্বারের এ প্রতিনিধি দলে চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর (আরমান), সহ-সভাপতি মোঃ জুনায়েদ ইবনে আলী, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দসহ ব্যবসায়ীরা অন্তর্ভুক্ত আছেন। উল্লেখ্য যে, ঢাকা চেম্বারের এ প্রতিনিধি দলের আগামী ০১ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মক্কা চেম্বার অব কমার্স এর সাথে অনুরূপ বৈঠক এবং বিটুবি ম্যাচ মেকিং সেশন নির্ধারিত রয়েছে। এ বৈঠকে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষে ইকনমিক মিনিষ্টার মুর্তুজা জুলকার নাঈন নোমান এবং জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর সৈয়দা নাহিদা হাবিবা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদক: সাগর চৌধুরী, ৩১ অক্টোবর ২০২৩