ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ২০ হাজার মানুষের জন্যে একজন করে বিচারক থাকলেও আমাদের দেশে প্রতি ১ লাখে একজন। তাই মামলার চাপও বেশি। আর এ সমস্যা নিয়েই তারা কাজ করছেন। তাই তাদের সমালোচনার সময় এ বিষয়েও ভাবতে বলেছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এবিএম খায়রুল হক ।
শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট মিলনায়তনে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবুল বারকাতের লেখা ‘বঙ্গবন্ধু-সমতা-সাম্রাজ্যবাদ’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মুক্তবুদ্ধি প্রকাশনা কর্তৃক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমাদের ১ হাজার ১শ জন বিচারক আছেন। সবাই তাদের সমালোচনা করতে পারেন কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, ৩০ লাখ মামলার বোঝা নিয়েই কিন্তু তারা কাজ করছেন।’
এবিএম খায়রুল হক বলেন, ‘আমরা প্রায়ই বলি সংবিধান আমাদের এই অধিকার দিয়েছে, সেই অধিকার দিয়েছে। কথাটা আংশিক সত্য, পুরোপুরি সত্য নয়। কারণ অধিকার নিয়েই প্রতিটি মানুষ জন্মগ্রহণ করে, সংবিধান অধিকার দেয়ার কেউ নয়।’
বর্তমানে আমাদের নৈতিক অবক্ষয় নিয়ে আফসোস করে বলেন, ‘বিসিএস পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন এমন একজন একটি জাতীয় পত্রিকায় ২৫টি টিপস দিয়েছেন। এরমধ্যে ১০ নাম্বার টিপসটি ছিল এমন ‘বাংলাদেশ ও আর্ন্তজাতিক কম করে পড়লেও হবে’। আমাদের দেশপ্রেম কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে দেখেন। বিসিএস-পিএসসি কর্মকর্তাদেরকে অবশ্যই আমাদের ৩০ লাখ শহীদের ত্যাগের বিষয়ে জানতে হবে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে। কারণ তারাই পরবর্তী বাংলাদেশের শাসক বা সেবক বলেন, সবই।’
তিনি আবুল বারকাতের লেখা ‘বঙ্গবন্ধু-সমতা-সাম্রাজ্যবাদ’ বইটি বাঙ্গালির অর্থনৈতিক মুক্তির সূচনা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে শোক দিবসে ধানমণ্ডিতে বিরিয়ানির প্যাকেটে বঙ্গবন্ধুর ছবি দেয়ার সমালোচনা করেছেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। এসময় একটি কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘এই দেখেই এক কবি বলেছিলেন, শুধুই শোকসভা, তারই নাম আজ বাংলাদেশ।’
ড. মিজান আরো বলেন, ‘ …, যারা বলেছিল ‘বঙ্গবন্ধুর চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বানাবো’ তারা আজকে কোথায় পৌঁছেছে আর যে গরীব-দুঃখী মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধু জীবন দিয়েছিলেন সেই সোনার বাংলা আজও গড়ে ওঠেনি।’ আজকের বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এ্যামিরেটাস অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধুকে মেরেছে তারাই আজকে দেশের সমস্ত সম্পত্তির মালিক। ওই ১% মানুষ আজকে পুরো দেশকে করায়ত্ত্ব করে রেখেছে।’ বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে আজ বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতো বলেও যোগ করেন তিনি।
‘বঙ্গবন্ধু-সমতা-সাম্রাজ্যবাদ’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠান সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আশরাফউদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, মেজর জেনারেল (অব.) কে এম শফিউল্লাহ বীর উত্তম, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম ও অধ্যাপক মাহফুজা খানম প্রমুখ।
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur