বাংলার নবাব সিরাজ উদ দৌলা। শুধুমাত্র নামটাই যথেষ্ট তাঁর পরিচয়ের জন্য। মুর্শিদাবাদের এই নবাবকে পলাশির যুদ্ধে পরাস্ত করেই ভারতে উপনিবেশ গড়ার কাজে বিশেষ সফল হয়েছিল ইংরেজ বাহিনী।
একইসঙ্গে পলাশির যুদ্ধের কারণেই ভারতে ২০০ বছর জারি ছিল ব্রিটিশ রাজ। চলতি মাসেই পূর্ণ ২৬০ বছর হতে চলেছে ঐতিহাসিক সেই যুদ্ধের।
পলাশির যুদ্ধের পর ইংরেজরা ভারত শাশন করেছে সেকথা সকলেই জানে। সিরাজ বা তাঁর পরিবারের পরিণতি স্বাভাবিকভাবেই ভালো হয়নি। সিরাজের কোনও চিহ্নের অস্তিত্ব রাখতে চায়নি মীর জাফর।
এই বিষয়ে মীর জাফরকে সঙ্গ দিয়েছিল ইংরেজরাও। মীর জাফরের পুত্র মিরণের উদ্যোগে হত্যা করা হয় নবাব সিরাজ উদ দৌলাকে। তাঁর স্ত্রী লুৎফুন্নেসা এবং চার বছরের কন্যা উম্মে জোহরাকে বন্দী করা হয়। এই বিষয়গুলি ইন্টারনেটে থাকা তথ্যের দৌলতে সকলেরই জানা। কিন্তু, এত কিছুর মাঝেও রয়েছে অনেক অজানা কাহিনী। যেগুলি পলাশির যুদ্ধের ২৬০ বছর পরেও অজানা রয়ে গিয়েছে।
পলাশির যুদ্ধ এবং নবাবের হত্যার মাধ্যমেই থেমে যায়নি সিরাজের বংশের গতি। স্বাধীন ভারতের মাটিতেই এখনও বিরাজমান নবাবের উত্তরসূরীরা। যদিও তাঁরা সকলেই এই মুহূর্তে ধর্মান্তরিত।
এদের মধ্যে একজন প্রত্যক্ষভাবে লড়াই করেছেন ব্রিটিশেদের বিরুদ্ধে। মহাত্মা গান্ধী পরিচালিত অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন সিরাজের উত্তরসূরী। একইসঙ্গে আইন অমান্য আন্দোলনেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর। পরে কমিউনিস্ট আন্দোলনেও জড়িয়েছিলেন নবাব সিরাজ উদ দৌলার ওই বংশধর। শুধু ভারতেই নয় আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনেও ছড়িয়ে রয়েছেন বংলার নবাব সিরাজ উদ দৌলার বংশধরেরা।
বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পুরনো জমিদার বাড়ির কাগজপত্র এবং প্রাচীন বাংলার বিভিন্ন ঐতিহাসিক পুঁথি ঘেঁটে গবেষণা চালান ইতিহাসবিদ অমলেন্দু দে। ২০১২ সালে তিনি নবাব সিরাজ উদ দৌলার বংশধরদের নিয়ে একটি বই লেখেন।
সেই বই থেকেই জানা গিয়েছে নবাব সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর নানাবিধ তথ্য। ২০১৪ সালের মে মাসে মৃত্যু হয় অমুলেন্দু বাবুর। তাঁর লেখা বই থেকে সিরাজ উদ দৌলার মৃত্যুর পর বাংলার সামাজিক অবস্থা এবং সিরাজের বংশধরদের অবস্থা সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদ অমলেন্দু দে-র গবেষণা এবং লেখায় উঠে এসেছে অবাক করা নানাবিধ তথ্য। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নবাব সিরাজ উদ দৌলার পুত্রের সন্ধান।