Home / খেলাধুলা / যতবার আমি বাংলাদেশে আসি, অসাধারণ লাগে: সৌরভ
বাংলাদেশে

যতবার আমি বাংলাদেশে আসি, অসাধারণ লাগে: সৌরভ

শুরুতেই আলোর খেলা। সৌরভ গাঙ্গুলিকে ঘিরে ভিড়ের কমতি নেই।

ফ্লাইট বিলম্বে নির্ধারিত সময়ের পরে এসেছেন, তবুও কমেনি আগ্রহ। প্রায় ১৫ বছর আগে ক্রিকেট ছাড়া সৌরভকে ঘিরে থাকা ভিড় সামলে বেশ কিছুক্ষণ লাগলো অনুষ্ঠান শুরু করতে। এরপর একে একে হলো নানা আয়োজন।
কথাও বললেন বেশ কয়েকজন। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে মেয়র কাপের গ্র্যান্ড লাউঞ্চিংয়ের শেষে এসে কথা বললেন সৌরভ গাঙ্গুলি। ভারতীয় ক্রিকেটের বড় তারকা এরপর জানালেন, বাংলাদেশের প্রতি তার মুগ্ধতার কথা। বললেন, এখানে এলে সবসময়ই তার অসাধারণ লাগে।

ঢাকার এক হোটেলে বৃহস্পতিবার সৌরভ গাঙ্গুলি যা বলেছেন…

যতবারই আমি এখানে আসি, এত মানুষের ভালোবাসা পাই আমি বুঝতে পারি না এটা ভারত না বাংলাদেশ। আমাকে এত ভালোবাসা, এত নিজের মনে করার জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা। মেয়র কাপ যেটি দ্বিতীয় সিজনের উদ্বোধন হলো, এটি কিন্তু পশ্চিম বাংলাতেও হয়। কলকাতায় আমরা ফুটবল করি, ক্রিকেট করি। এখানে ভলিবল, বাস্কেটবল, ক্রিকেট, ফুটবল বিভিন্ন ধরনের খেলা হয়।

বাংলাদেশে আমি প্রথম আসি ১৯৮৯ সালে। আমি অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে এশিয়া কাপ খেলতে। সেই থেকে বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে আমার সম্পর্ক। প্রচুর মানুষ বন্ধু আমার। ইফতেখার রহমান মিঠু (বিসিবি পরিচালক) সেই থেকে আমার বন্ধু। হয়ত গেল দশ বছর আমি আসিনি। কিন্তু তার সাথে তার পরিবারের সাথে বাকি বন্ধুদের সাথে আমার দেখা হতো পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায়। আমার প্রথম টেস্ট অধিনায়কত্ব বাংলাদেশে। বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সঙ্গে আমার নাম জড়িয়ে থাকবে। কারণ ওটা ছিল বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ম্যাচ। আমার মনে আছে তখন নতুন স্টেডিয়াম হয়নি, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ সম্ভবত প্রথম ইনিংসে লিড নিয়েছিল। ড্রেসিংরুমে গিয়ে ভাবলাম, জীবনের প্রথম টেস্ট নেতৃত্বে হেরে যাব! পরে আমরা ম্যাচে ফিরে আসি এবং জিতি। আমার জীবনের বহু মূল্যবান মুহুর্ত বাংলাদেশে।

আমার স্পষ্ট মনে আছে ইন্ডিপেন্ডেন্স কাপের ফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে আমরা ৩১৫ রান তাড়া করে জিতি। তখনকার দিনে ৩১৫ রান চেজ করা খুব কঠিন ছিল। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে তখন এত সুন্দর আলো ছিল না। ফুটবলের আলোয় খেলা হয়েছে এবং সে ম্যাচটা আমরা জিতি। বাংলাদেশের মানুষ, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে চেষ্টা করছে সেটা সত্যিই প্রয়োজনীয়। সারা বিশ্বেই এই ক্যাম্পেইন দেখেছি। কারণ ড্রাগস কম বয়সী ছেলে-মেয়েদের কাছে একটি আতঙ্কের কারণ। আমি মাননীয় মেয়র সাহেবকে ধন্যবাদ জানাই। উনি খেলার মাধ্যমে বাংলাদেশের যুব সমাজকে ব্যস্ত রেখেছেন। আমি মনে করি মাদকের সমাধান একমাত্র স্পোর্টস। বাংলাদশের সংস্কৃতি সম্পর্কে আমি ওয়াকিবহাল। মিউজিক হলো বাংলাদেশের মানুষের হার্টবিট।

এখান থেকে বহু গায়ক-গায়িকা ভারতবর্ষে গেছে, তাদের গান শুনেছি। আমার এখনও মনে আছে যখন প্রথম পিঙ্ক টেস্ট হয় ভারতীয় ক্রিকেটের প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম পিঙ্ক টেস্ট আয়োজন করেছিলাম তা বাংলাদেশের বিপক্ষে। আপনাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গিয়েছিলেন কলকাতায় আমার আমন্ত্রণে, ওই টেস্ট ম্যাচ দেখতে। প্রচুর মধুর সময় কেটেছে বাংলাদেশের মানুষের সাথে। তাই আমি সবার কাছে অনুরোধ করবো ছোট ছোট ছেলেমেয়ে ও মাঝবয়সীদের, মাদক জীবনের সমাধান নয়। কঠোর পরিশ্রমই একমাত্র সমাধান। তাই খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত থাকো, গান-বাজনার সঙ্গে যুক্ত থাকো, শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত থাকো। এগুলো তোমাদের এগিয়ে যেতে সাহাজ্য করবে। যতবার ঢাকা আসি, এই শহরের মধ্যে দিয়ে যখন আসি আমি প্রচুর পরিবর্তন দেখতে পাই। আমি ৯ বছর পর এসে দেখি রাস্তা কত চওড়া হয়েছে, বিভিন্ন ফ্লাইওভার হয়েছে। গুলশান দিয়ে যখন এলাম দেখলাম এখানেও কত পরিবর্তন এসেছে। এই উন্নয়ন কাদের জন্য? যুব সমাজের জন্য। তাই এই উন্নয়নের সঙ্গে তোমরা এগোও, উন্নয়নের অংশ হও।

বার্তা কক্ষ, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩