বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পাঁচ জেলায় ভয়াবহ বন্যায় ১৫ লাখের বেশি শিশু নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি এবং শিক্ষাঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ। বন্যার মতো জরুরি পরিস্থিতিতে শিশুরা সবচেয়ে অসহায়—এমন মত প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
তারা জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত শিশু ও পরিবারগুলোর জরুরি নিরাপত্তা,স্বাস্থ্য,পুষ্টি এবং নিরাপদ পানির প্রয়োজনে সাড়া দিতে সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারদের সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে ইউনিসেফ।
গতকাল সোমবার ২৩ মে এক লিখিত বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলা হয়,বাংলাদেশের পাঁচ জেলা সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা ও মৌলভীবাজারের ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জ এলাকার মানুষ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে । কারণ সেখানে পানি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং কৃষিজমি, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও স্কুলসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো বন্যায় তলিয়ে গেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়,ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোতে ইতিমধ্যেই ডায়রিয়া, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ও চর্মরোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে অন্তত তিন জন শিশু বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছে। জেলাগুলোতে বন্যার প্রভাবে শতাধিক স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে শিশুদের পড়াশোনাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিগত দুবছরে ১৮ মাস মহামারিতে স্কুল বন্ধ থাকার পর,আবারও এ ধরনের পরিস্তিতি শিশুদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করছে।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন,‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আমরা সমবেদনা প্রকাশ করছি। অন্য যে কোনো জরুরি পরিস্থিতির মতোই এক্ষেত্রেও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ শিশুদের সুরক্ষা ও তাদের তাৎক্ষণিক চাহিদাগুলো নিশ্চিত করতে ইউনিসেফ সরকার এবং অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ’
ইউনিসেফ বিশুদ্ধ পানি, হাইজিন উপকরণ, থেরাপিউটিক দুধ ও শিক্ষা উপকরণ সরবরাহের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত কমিউনিটিগুলোর মধ্যে পানিতে ডুবে যাওয়া ও জরুরি প্রস্তুতি মোকাবিলায় সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সহায়তা দিচ্ছে। শিশুদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমাজকর্মীরা যাতে প্রস্তুত থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য ইউনিসেফ সমাজসেবা অধিদপ্তরের (ডিএসএস) সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
২৪ মে ২০২২
এজি