বাংলাদেশের পণ্য হিসেবে ভৌগোলিক নির্দেশন তথা আন্তর্জাতিক জিআই (Geographical indication) স্বীকৃতি পেয়েছে ইলিশ। এর আগে বাংলাদেশের জিআই হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলো জামদানি।
পেটেন্ট ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর বলছে, ‘পণ্য হিসেবে ইলিশের নিবন্ধন শেষ। এক সপ্তাহের মধ্যে মৎস্য অধিদপ্তরের হাতে ইলিশের জিআই নিবন্ধন সনদ তুলে দেয়া হবে।’
ওয়ার্ল্ড ফিশের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী বিশ্বের ৬৫ শতাংশ ইলিশ মাছ উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে। বাংলাদেশে এর উৎপাদন ক্রমাগত বাড়ছে।
পেটেন্ট ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) সূত্রে জানা গেছে, ভৌগোলিক নির্দেশন (জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন) পণ্য হিসেবে ইলিশ নিবন্ধনের সব প্রক্রিয়া শেষ। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে মৎস্য অধিদপ্তরের হাতে ইলিশের জিআই নিবন্ধনের সনদ তুলে দেওয়া হবে।
এর আগে মৎস্য অধিদপ্তর ডিপিডিটি’র কাছে রূপালি ইলিশের ভৌগোলিক নির্দেশন বা জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে। ওই আবেদনের পর তা প্রক্রিয়াকরণ শেষে এ বছরের ১ জুন গেজেট প্রকাশ করা হয়। আইন অনুযায়ী গেজেট প্রকাশিত হওয়ার দুই মাসের মধ্যে দেশে বা বিদেশ থেকে এ বিষয় নিয়ে আপত্তি জানাতে হয়। কিন্তু কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে কোনো আপত্তি জানায়নি।
তাই আইন অনুযায়ী ইলিশ এখন বাংলাদেশের স্বত্ব। এখন বিষয়টি সংশ্লিষ্ট চূড়ান্ত রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধনের প্রক্রিয়াধীন আছে। এক সপ্তাহের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে এর স্বত্ব মৎস্য অধিদপ্তরের কাছে তুলে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ আরিফ আজাদ বলেন, এই ইলিশ বাংলাদেশের সম্পদ, আমাদের জাতীয় মাছ। এ বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে পেতে আবেদন করি। এই ইলিশ আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে। এটি আমাদের একার অর্জন নয়, গোটা জাতির অর্জন।

জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিকভাবে ইলিশের একক মালিকানা পাওয়ার লক্ষ্যে জিআই নিবন্ধনের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করে মৎস্য অধিদপ্তর।
ওই আবেদনের পর তা পরীক্ষা-যাচাইয়ের পরে এ বছরের ১ জুন গেজেট প্রকাশ করা হয়। স্বস্ত আইন অনুসারে, আবেদন করা পণ্য বা সেবার উপরে কারো কোনো আপত্তি বা দাবি থাকলে গেজেট প্রকাশিত হওয়ার দুই মাসের মধ্যে তা জানাতে হয়।
ইলিশ একইসঙ্গে ভারত ও মিয়ানমারে পাওয়া যাওয়ার কারণে আশঙ্কা ছিলো তারাও হয়তো দাবি নয়তো আপত্তি তুলবে। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে কেউ আবেদন/আপত্তি না করাতে ইলিশের স্বত্ব এখন শুধুই বাংলাদেশের। বিষয়টি নি:সন্দেহে আনন্দের, জামদানির স্বত্ব লাভের পরে ইলিশ এখন আমাদের একান্তই নিজস্ব খাদ্যপণ্য।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাটকা মাছ শিকার নিষিদ্ধ ও নির্দিষ্ট সময় ধরে ইলিশ শিকারের বাধ্যবাধকতা দেওয়াতে দেশে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। বিদেশে রপ্তানি করেও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক এ স্বীকৃতি পাওয়ায় ইলিশ বিপণনের ক্ষেত্রে স্বত্ব দিতে হবে বাংলাদেশকে। এর ফলে বর্তমান বাজার দরের চেয়ে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বেশি দাম পাবেন জেলে ও ইলিশ রপ্তানিকারকরা।

স্বত্ব লাভের এ সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে দেশের প্রান্তিক জেলেদের সামর্থ্য ও জীবন মানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে দেশের ইলিশের আবাসস্থল নদীর স্বাভাবিক নাব্যতা নিশ্চিত করতে হবে, দূষণও রোধ করতে হবে। তাহলেই ফিরে আসবে রূপালি ইলিশের হারানো গৌরব। (চ্যানেল আই)
ইলিশ বাংলাদেশের, মিলল জিআই স্বীকৃতি
আজ (৮ আগস্ট) চ্যানেল আইতে প্রচারিত ইলিশের জিআই স্বীকৃতি নিয়ে প্রচারিত সংবাদ প্রতিবেদন দেখুন ভিডিওতে। বিস্তারিত পড়ুন www.channelionline.com -এ। সাবস্ক্রাইব করুন ইউটিউব চ্যানেলে: youtube.com/shykhseraj
Posted by Shykh Seraj on Tuesday, August 8, 2017
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ ১১: ৫০ পিএম, ৮ আগস্ট ২০১৭, সোমবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur