বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করতে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয় : নাছির উদ্দিন আহমেদ

চাঁদপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেছেন জাতীয় ৪ নেতাসহ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে আমরা সকল সময় স্মরণ করবো। তাদের আদর্শকে লালন করে আমরা আমাদের রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করবো। অসাম্প্রদায়িক ভাবে সকলে এক সাথে বসবাস করবে সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। কিন্তু আজ আবারও সেই সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথাচারা দিয়ে ওঠেছে। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রতিহত করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে থাকতে হবে।

৩ নভেম্বর শুক্রবার বিকেলে দলীয় কার্যালয়ে জেল হত্যা দিবস পালনকল্পে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, এ হত্যাকাণ্ড স্মরণে প্রতি বছর ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি চক্র বর্বরোচিতভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। এর কিছুদিন পরই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ইতিহাসের আরেকটি বর্বর হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করতে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোদ্ধা জাতীয় চার নেতাকে। স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্র ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর বঙ্গবন্ধুর আজীবন রাজনৈতিক সহকর্মী, তার অবর্তমানে যারা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেন সেই জাতীয় চার নেতা।

নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার আসল নায়ক হচ্ছে জিয়াউর রহমান। সাম্প্রদায়িক পরাশক্তিকে আশ্রয় দিয়েছেন জিয়াউর রহমান। একটি জঙ্গী রাষ্ট্রে পরিনত করেছেন। আজকে এদেশ উন্নয়নের শিখরে পৌঁছে দিচ্ছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমরা সমস্ত বাঁধাকে অতিক্রম করে এদেশকে উন্নয়নের শিখরে নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করবো।

আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল।

তিনি বলেন, জাতির পিতার আজীবন রাজনৈতিক সহচর জাতীয় ৪ নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন (অব.) মুনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামানকে এই দিনে জেলখানার অভ্যন্তরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। মানবতাবোধের চরম নির্মমতা ও নিষ্ঠুর সাক্ষী হচ্ছে ৩ রা নভেম্বর জেলহত্যা দিবস। দেশের আপামর জনতা যাদের নেতৃত্বে ও নির্দেশে এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে মাত্র ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে এদেশেকে স্বাধীন করেছিল। যারা মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিব নগর সরকারের বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করে এদেশের জনগণকে একত্রিত করে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে বেগবান করে বিজয়ের পতাকা উঠিয়ে ধরেছে সেই চার নেতাকে চরম নির্মমতার স্বাক্ষর রেখে ৩ নভেম্বরে হত্যা করা হয়।

আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল বলেন, শুধু মুক্তিযুদ্ধ নয়, সকল আন্দোলন-সংগ্রামে এই চার নেতা বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোদ্ধা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকেছেন। বিভিন্ন সময় বঙ্গবন্ধুকে যখন কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে তখন আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়ে এই চার নেতা আন্দোলন-সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়েছেন। ঘাতক চক্রের লক্ষ্য ছিল বাঙালিকে নেতৃত্বশূন্য করে বাংলাদেশকে পুনরায় পাকিস্তানের পদানত করে মুক্তিযুদ্ধের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়া। তাই মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানে আটক করে রাখার পর যে চার নেতা বঙ্গবন্ধুর হয়ে যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনেন, সেই জাতীয় চার নেতাকেও বঙ্গবন্ধুর মতো নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। বাঙালি জাতির ইতিহাসে জাতীয় চার নেতার অবদান চির ভাস্বর হয়ে থাকবে।

জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য অ্যাড. বদিউজ্জামান কিরণের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সন্তোষ দাস, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাড. বিনয় ভূষণ মজুমদার, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির হোসেন মন্টু দেওয়ান, সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মঞ্জু মাঝি, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান কালু ভূইয়া, জেলা মৎস্যজীবি লীগ সভাপতি মালেক দেওয়ান,শ্রমিক লীগের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান, জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি নূর মোহাম্মদ পাটোয়ারী, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী আমেনা বেগম, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক সফিক গাজী, জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ইকবাল হোসেন লিটন, যুগ্ম সম্পাদক কাজী নাসিমসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

প্রতিবেদক: মাজহারুল ইসলাম অনিক, ৩ নভেম্বর ২০২৩

Share