সারাদেশ

বসুন্ধরায় হাসপাতাল নির্মাণ চার দিনের মধ্যেই সম্পন্ন হচ্ছে

বসুন্ধরায় হাসপাতাল নির্মাণ চার দিনের মধ্যেই সম্পন্ন হচ্ছে । আগামি ২৩ এপ্রিলের মধ্যেই করোনা আক্রান্তের চিকিৎসায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) হাসপাতালটির নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।

১৮ এপ্রিল আইসিসিবির এক্সপো ট্রেড সেন্টারে নির্মাণাধীন হাসপাতাল প্রাঙ্গনে দাঁড়িয়ে অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.মাসুদুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাসপাতাল নির্মাণে আমাদের সময়সীমা ১৫ দিন। দিনরাত কাজ হচ্ছে। অনেক কাজ দ্রুত শেষ হওয়ায় ১৫ দিন হয়তো লাগবেও না। ২৩ এপ্রিলের মধ্যেই আমরা হাসপাতালটি তৈরি করে ফেলতে পারব বলে আশা করছি।’

প্রসঙ্গত , কভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যত দিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে তত দিন আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেয়া হয়েছে। আর ১৫ দিনের মধ্যে আইসিসিবিকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রূপ দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ১২ এপ্রিল কাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।

প্রকৌশলী মাসুদুল আলম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়ই পিকআপ ভরে চেয়ার এসে পৌঁছায়। সেগুলোকে কনভেনশন হলে পাঠিয়ে দিয়ে তিনি বলেন,‘সব বেডের অর্ডার দেয়া হয়ে গেছে। পর্যাক্রমে এগুলো চলে আসছে। ২ নম্বর হলে ১০০ বেড সংরক্ষণ করা আছে। এখানে রাখলে ধুলোয় নোংরা হবে। তাই অনেক ফার্নিচার আমরা এনে কনভেনশন হলের মধ্যে রেখেছি। অবকাঠামোর কাজ শেষ হলেই পর্যায়ক্রমে সব মাল নিয়ে আসব। প্রস্তুতির দিক দিয়ে আমরা সন্তোষজনক পর্যায়ে আছি। দিনরাত কাজ করায় অনেক কাজ নির্ধারিত সময়ের আগেই হয়ে গেছে। এখন আমাদের লক্ষ্য ২৩ এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ করা। তার পরও নানা কারণে দু-এক দিন অতিরিক্ত সময় লাগতে পারে।’

হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব হাসপাতালটি তৈরি করে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে হস্তান্তর করা। এরপর হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রম চালু, চিকিৎসক, নার্স, অন্যান্য সহায়ক কর্মী নিয়োগ-এগুলো স্বাস্থ্য অধিদফতর করবে। আমরা আমাদের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই করতে পারব বলে আশাবাদী।’

তিনি জানান, হাসপাতালে আইসোলেশন বেড হবে ২ হাজার ১৩ টি। ট্রেড সেন্টারে ছয় ক্লাস্টারে ১ হাজার ৪৮৮টি বেড বসবে। এ ছাড়া তিনটি কনভেনশন হলে থাকবে আরও ৫২৫টি বেড। এর বাইরে ৪ নম্বর হলে হবে ৭১ বেডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)।

বিদেশ থেকে আইসিইউর মালামাল এসে পৌঁছেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনো পৌঁছায়নি। এসে গেলে আমরা দ্রুত সেগুলো স্থাপন করে ফেলব।’

দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ের আগেই হাসপাতালটি দৃশ্যমান করতে চলছে নিরলস পরিশ্রম। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে নিয়মিত নির্মাণকাজ তদারকি করছেন অধিদফতরের একাধিক প্রকৌশলী। সঙ্গে থেকে সহযোগিতা করছেন বসুন্ধরার প্রকৌশলীরা।

প্রসঙ্গত , করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকারকে আইসিসিবিতে ৫ হাজার শয্যার একটি সমন্বিত অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতি দিলে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল পরিদর্শন করে হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। নানা হিসাব-নিকাশ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেখানে ২ হাজার ১৩ শয্যার হাসপাতাল ও ৭১ শয্যার আইসিইউ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর।

আইসিসিবির সুবিশাল চারটি কনভেনশন হল ও একটি এক্সপো ট্রেড সেন্টারে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ হাসপাতালটির নির্মাণর কাজ বাকি ।

ঢাকা ব্যুরো চীফ , ১৯ এপ্রিল ২০২০
এজি

Share