চাঁদপুর ফরিদগঞ্জে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অসহায় দুই পরিবারের ২টি বসত ঘর পুড়ে ছাই। আগুন নিভাতে গিয়ে প্রায় ১০ জন আহত। এতে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে দুই পরিবারের দাবি।
৩১ জানুয়ারি সোমবার রাত ৮ টার দিকে উপজেলার ১৫ নং রূপসা উত্তর ইউনিয়নের পশ্চিম রূপসা হরমুজ আলী দপ্তর বাড়ির মৃত সরাফত আলীর ছেলে হাছান আলীর বসতঘর এবং মৃত আব্দুর রশিদেও ছেলে তাজুল ইসলামের বসঘর আগুন পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এই দুইটি ঘরই টিনের ছিল তাই দ্রুতই আগুন চড়িয়ে পড়ে এবং এই দুটি ঘরেই ছাই হয়ে যায়।
জানা যায়, আগুন লাগার খবর শুনে চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিস ষ্ট্রেশনের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসার আগেই স্থানীয়রা আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। তাই ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ভাটিয়ালপুর এলাকা থেকে ফিরে যান।
প্রত্যক্ষদশী একই বাড়ির আবুল কালামের স্ত্রী আমেনা বেগম চাঁদপুর টাইমসকে জানান, রাত প্রায় আট ঘটিকার সময় প্রথমে হাছান আলীর ঘরের পশ্চিম পাশে আগুন দেখতে পেয়ে তিনি ডাক চিৎকার দিলে বাড়ির লোকজন এসে আগুন নেবানোর চেষ্টা করে, কিন্তু মহুত্তের মধ্যেই আগুন পুরো ঘরে দরে যাওয়ায় কেউই কিছু করতে পারেনি।
আগুন নেবানোর জন্য চেষ্টা করতে গিয়ে সজিব, আব্দুর রেজ্জাক, ফারভেজসহ বেশ কিছু লোক গুরত্বর আহত হয়। এসময় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করান।
আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘরের মালিক হাছান আলী চাঁদপুর টাইমসকে জানান, আমরা দুই ভাই, আমার বাবা গত ৬ মাস পূর্বে মারা যান, এরপর আমরা দুই ভাই লোন করে জরাজীর্ন থাকা বাবার ঘরটি লোন করে মেরামত করি।
এসময় তিনি কান্না করতে করতে বলেন, আমি আর আমার ছোট ভাই মামুন অর-রশিদ ঢাকার একটি গার্মেন্টেসে চাকরি করে কোন রকম দিন এনে দিন খাই। আমার মা অসুস্থ তাই গত ডিসেম্বর মাসে মাকে আমাদের কাছে নিয়ে আসি। গত দুই দিন পূর্বে আমার ছোট ভাই বাড়িতে গিয়ে ঘর-বাড়ি দেখে এসে।
কত টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার মা-বাবার এবং আমার তিল তিল করে গড়ে তোলা এই ঘরটি, কি ছিলনা আমাদের ঘওে, কি বলতাম ভাই, আমাদের প্রায় ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
আগুনে পুড়ে যাওয়া অপর ঘরের মালিক তাজুল ইসলাম চাঁদপুর টাইমসকে জানান, তিনি ও ঢাকার নিউ মার্কেটের একটি দোকানে চাকুরি করেন এবং তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম ও ঘরে তালা দিয়ে পাশ্ববর্তী উপজেলার রামগঞ্জে বাবা বাড়িতে বিড়াতে গিয়ে ছিলেন। কত টাকার ক্ষতি হয়েছে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, প্রায় ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
তাজুই ইসলামে ভাই সাহাবউদ্দিন জানান, তিল তিল করে বহু কষ্টে সংসার গুঁছিয়েছিল আমার ভাই। আমি কোন জিনিস পত্র বের করতে পারিনি। আগুন আমার ভাইয়ে শেষ সম্বলটি কেঁড়ে নিলো। কি অপরাধ করে ছিলাম আমি। এখন আমার ভাই সন্তানদের নিয়ে কোথায় থাকবে, কি খাবে? তাই মানবিক দিক বিবেচনায় সরকারী ও সমাজের ভিত্তবানদের কাছে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেন অসহায় তাজুল ও সরাফত আলি।
কি ভাবে আগুন লেগেছে জানতে চাইলে একই বাড়ির আঃ করিম ও আবুল কাশেম বলেন, আগুন লাগার পূর্বে বিদুৎ তিন চার বার লোড শেডিং করেছে, তাই আমার ধরনা করছি বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি ঘটেছে।
আগুনের লাগার খবর পেয়ে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ ও স্থানীয় সাংসদ মুহাম্মদ শফিকুর রহমান এমপির প্রতিনিধি আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ নজরুল ইসলাম সুমন এবং নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান কাউছার আলম কামরুল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
প্রতিবেদকঃ শিমুল হাছান, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২