একের পর এক বসতঘরে আগুন, নিরাপত্তাহীনতায় পরিবার
চাঁদপুরের কচুয়ার মালিগাঁও গ্রামে ঘর থেকে টাকা চুরির ঘটনায় থানায় মামলা দেয়ায় বাদীকে নিঃস্ব করতে বসত ঘর আগুনে পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা ও হুমকি-দমকির অভিযোগ উঠেছে। প্রতিপতক্ষদের ভয়ে মামলার বাদী ও তার পরিবার এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
মামলা সুত্রে এবং স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানাযায়, উপজেলার মালিগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মোঃ মিজানুর রহমানের মেয়ে ফেরদৌসী আক্তার মধুপুর বাজার সংলগ্ন জাহাঙ্গীরের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। ওই বাসা থেকে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারী ২ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা চুরি হয়। এতে সন্দেহ ভাজন হিসেবে একই এলাকার যুবক সোহাগ ও মিরাজকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর প্রাথমিকভাবে তারা চুরির সত্যতা শিকার করে।
খবর পেয়ে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মো. ছিদ্দিকুর রহমান, অভিযুক্ত সোহাগের স্ত্রী তাসলিমা আক্তার ও মিরাজের বাবা জাহাঙ্গীর আলম ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান করবে বলে সোহাগ ও মিরাজকে মুক্ত করে নিয়ে যায়। সমাধানের আশ্বাসের পর, বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় ঘটনার কয়েক দিন পর ক্ষতিগ্রস্থ ফেরদৌসী বেগম বাদী হয়ে অভিযুক্ত সোহাগ,মিরাজ সহ ৫ জনকে আসামি করে কচুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ১১, তারিখ : ০৬/০৪/২০২৫ খ্রি.। মামলার পর পুলিশ মিরাজ কে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরন করে। ১ মাস ৭ দিন পর সে জামিনে বের হয়ে আসে।
এ ছাড়া পুলিশ মামলার ২ আসামি সাবেক ইউপি সদস্য সিদ্দিকুর রহমান ও জাহাঙ্গীর আলমকে মামলার চার্জশিট থেকে নাম বাদ দিয়ে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। অন্যদিকে মিরাজ জামিনে এসে বাদী ও তার পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি-দমকি দেয়। ১ ডিসেম্বর দুপুরে বাদীর বাবা মিজানুর রহমান এর বসত ঘরে আগুন দেওয়া হয় । স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে এসে আগুন নিভাতে সক্ষম হয়।
মামলার বাদী ফেরদৌসীর বাবা মিজানুর রহমান জানান, আমি একজন অটো চালক আমি প্রতিদিনের মতো সকালে অটো নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যাই বিকালে বাড়িতে এসে জানতে পারি আমার বসত ঘরে আগুন লেগেছে। আমি একজন নিরীহ মানুষ আমার মেয়ের ঘরে টাকা চুরির ঘটনায় কচুয়া থানায় মামলা করার পর থেকে একেরপর ৪ বার আমার মেয়ের ও আমার বসতঘর জ্বালিয়ে দিতে আগুন দেয়া হয়। আমি এখন নিরুপায়। তারা আমাদেরকে নিঃস্ব করে দিবে বলে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন।
ফেরদৌসী বেগম জানায়, আমার স্বামী সাইদুর রহমান প্রবাসে থাকে। বর্তমানে আমি আমার নিজ গ্রামের পাশের বাড়িতে ভাড়া থাকি। আমার দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী সাবেক মেম্বার সিদ্দিকুর রহমান ও জাহাঙ্গীর আলমকে মামলার চার্জশিট থেকে বাদ দেয়ায় ৩০ ডিসেম্বর আমি আদালতে নারাজি দেই। কেন নারাজি দিলাম সে কারণে প্রতিপক্ষরা আমার বাবার গৃহে ১ ডিসেম্বর দিন দুপুরে ঘর পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। তারা পরপর ৪ বার আমার ও আমার বাবার গৃহে আগুন দেয়।
ফেরদৌসী আক্তার আরো বলেন, আমার ছেলে নাই, বাবা নিরীহ। স্বামী প্রবাসে থাকে। বর্তমানে অবুঝ দুই মেয়ে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
প্রতিপক্ষদের শত্রুতা আমার সাথে। আমার বাবা- মা কি করেছে। তারাা আমার ও বাবা-মায়ের ঘরে আগুন দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি চুরি হওয়া টাকা উদ্ধারে প্রশাসনসহ সকলের কাছে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সাবেক ইউপি সদস্য ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমি টানা ৬ বার ইউপি সদস্য ছিলাম। ফেরদৌসী বেগমের গৃহে টাকা চুরি হয়েছে বলে শুনেছি। কতিপয় লোকজনের কু-পরামর্শে আমার মান-সম্মান ক্ষুন্ন করতে আমাকে অহেতুক মামলায় জড়িয়েছেন। পুলিশ চার্জশিটে আমার নাম বাদ দিয়ে চার্জশিট দাখিল করেছেন। বিজ্ঞ আদালত মামলার চার্জশিট থেকে আমাকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
কচুয়া প্রতিনিধি/
৬ ডিসেম্বর ২০২৫