হাজীগঞ্জে বর্ষায় আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে শিশু মৃত্যু

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় একের পর এক আশঙ্কাজনক হারে পানিতে পড়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। প্রতিবছর বর্ষার সময়ে সব চেয়ে বেশী শিশু পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। পরিবারের সদস্যদের উদাসীনতাকে প্রধান দায়ী করছেন সচেতনমহল।

সর্বশেষ ২৬ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকালে উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের পালিশারা মিজি বাড়ির ইসমাইল মিজির দেড় বছরের মেয়ে তাহিয়া আক্তার পানিতে ডুবে মারা যায়। এর আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে একই ইউনিয়নের গন্ধর্ব্যপুর সাহেব বাড়ির তাজুল ইসলামের দুই বছরের ছেলে রবিন বাড়ির পুকুরের পানিতে পড়ে মারা যায়। ১০ সেপ্টেম্বর বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের দক্ষিন রায়চোঁ গ্রামের দুলাল মিয়া বেপারী বাড়িতে পুকুরের পানিতে ডুবে মো. জাবেদ হোসেন নামের ২ বছর বয়সি এক শিশু মারা যায়।

এছাড়াও গত ৮ সেপ্টেম্বর উপজেলার কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের উড়পুর ভৃঁইয়া বাড়ির জয়নাল আবেদীনের মেয়ে আসমা আক্তার, রান্ধুনীমুড়া গ্রামের মনোয়ার হোসেনের মেয়ে খাদিজা আক্তার পানিতে পড়ে মারা যান। ৭ সেপ্টেম্বর দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নে মাঈশা আক্তার নামে দুই বছরের শিশু এবং উপজেলার মোল্লাডহর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী শিরীন বেগম (৫০) নামে বৃদ্ধ নারী পানিতে ডুবে মারা যান।

এ নিয়ে গত দুই সপ্তাহে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ৮ শিশুসহ ১০ জন পানিতে ডুবে মারা গেছে।

এদের মধ্যে বেশীভাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কাউকে সন্দ্রেহ কিংবা অপমৃত্যু হয়নি বলে জানা যায়।

পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনায় পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও ওইসব বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে।

নিহত এক শিশুর মা কাজল বেগম জানান, তার ছেলে রবিনকে সকাল থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে দেখে বাড়ীর পুকুরে তার মৃত দেহ ভাসমান অবস্থায় পড়ে আছে। এ করুন দৃশ্য তাকে বার বার মনে করিয়ে দেয়।

এদিকে সচেতন মহল মনে করেন, শিশু মৃত্যুর প্রথম কারন হচ্ছে পরিবারের মধ্যে সচেতনতার অভাব। পরিবারের সদস্যরা শিশুদের প্রতি আরো যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন। তা না হলে অল্পবয়সে ঝরে যেতে পারে ঘরের সব চেয়ে আদরের শিশু সন্তান।

হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.হারুনুর রশীদ চাঁদপুর টাইমসকে জানান, পানিতে পড়ে মৃত্যুর ঘটনায় কোন পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ না থাকায় এবং লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফন করতে বলা হয়েছে। তাছাড়া আমি মনে করি পরিবারের উদাসীনতায় শিশু মৃত্যুর হার দিন দিন বাড়ছে। এখন বর্ষার সময়, চার দিকে পানি। এ সময় শিশুদের প্রতি পরিবারের পক্ষ থেকে আরো যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি।

প্রতিবেদক: জহিরুল ইসলাম জয়, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১

Share