Home / বিনোদন / বর্ণিল আয়োজনে শেষ হলো শচীন মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
বর্ণিল

বর্ণিল আয়োজনে শেষ হলো শচীন মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

বর্ণিল আয়োজনে শেষ হলো উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী শচীন দেব বর্মণের স্মরণে দুই দিন ব্যাপি শচীন মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

শুক্রবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দিনের আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোঃ সাইফুল ইসলাম।

আলোচন পর্বের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়।

এসময় নজরুল গবেষক ড. আলী হোসেন চৌধুরী, গবেষক এডভোকেট গোলাম ফারুকসহ অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা আলোচনায় অংশ নেন।

পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পর্বে নৃত্য ও সংগীত পরিবেশন করেন জেলা শিল্পকলা একাডেমীর শিল্পীসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী।

এসময় জেলা কালচারাল অফিসার এস এম টি কামরান হাসান, সদ্য বিদায়ী জেলা কালচারাল অফিসার মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ, জাসাস কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা শাখার আহবায়ক সিরাজুল ইসলাম মিলন, সস্যসচিব নাসির উদ্দিন, ঐতিহ্য কুমিল্লার সভাপতি ও সচীন গবেষক জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল, আবৃত্তি শিল্পী সুলতানা পারভীন দিপালী, নজরুল ইনস্টিটিউট কুমিল্লা কেন্দ্র এর কর্মকর্তা মো: আল আমীন,জাসাস নেতা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম, জাসাস সদস্য জাহাঙ্গীর আলম (দিলু), সংগীত শিল্পী ইশতেয়াক আহমেদ পল্লব, এনসিপি নেতা কাজী জায়েদ আহমেদ,আবৃতি শিল্পী মাহতাব সোহেল ও রোমানা রুমি, এস এম আল মামুনসহ জেলার কবি সাহিত্যিক সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্টজনদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

৩১ অক্টোবর উপমহদেশের প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী ও সুরকার শচীন দেববর্মণের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী। এদিকে একই মাসের ১ তারিখ তার জন্মবার্ষিকী। দুটি দিবসকে একত্রিত করে অক্টোবর মাসের ৩০ ও ৩১ তারিখ বর্ণিল আয়োজনে উৎযাপন করা হয় শচীনের জন্ম-মৃত্যু বার্ষিকী।

প্রতিবারের মতো শিল্পীর পৈত্রিক বাড়ীর আঙ্গিনায় বৃহষ্পতিবার থেকে শুরু হয়ে দুই দিন ব্যাপি শচীন মেলা-২০২৫।

দুইদিন ব্যাপি আয়োজনের মধ্যে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, শিশুকিশোরদের চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

প্রথম দিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতে ঐতিহ্য কুমিল্লার সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল নির্মিত শচীন দেববর্মণের জীবন ভিত্তিক প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

৩০ অক্টোবর বিকেলে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোঃ আমিরুল কায়ছার প্রধান অতিথি হিসেবে বেলুন উড়িয়ে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

মেলা উদ্বোধন শেষে জেলা প্রশাসক জানান, এ বাড়ীটি ঘিরে একটি আন্তর্জাতিক মানের সংগীত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও মিউজিক্যাল আর্কাইভ গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকে ঘিরে মুখরিত হয়ে উঠে কুমিল্লার শচীণ প্রাঙ্গণ।

প্রথম দিনের আলোচনায় ছিলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জি এম মনিরুজ্জামান, প্রফেসর শান্তিরঞ্জন ভৌমিক ও ঐতিহ্য কুমিল্লার সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ইমরুলসহ অন্যান্যরা।

কুমিল্লা শহরের চর্থার এই বাড়ীতে, ত্রিপুরার রাজ পরিবারে ১৯০৬ সালের পহেলা অক্টোবর জন্ম শচীনের জন্ম। অত:পর শচীন ১৯৪৪ সালে ভারতের বোম্বেতে চলে গেলে আর আসেননি কুমিল্লার পৈত্রিক বাড়িতে।

এরপর বাড়ীটিতে সরকারী হাঁস-মুরগীর খামার বানায় পাকিস্তান সরকার।

শচীন ১৯৭৫ সালের ৩১ অক্টোবর ভারতের মোম্বাইয়ে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

ঐতিহ্য কুমিল্লাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে শচীনের পরিত্যাক্ত বাড়ীটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনে সংস্কার করে জেলা প্রশাসন।

বর্তমানে শচীনের বাড়ীতে সংগীত সংশ্লিষ্ট জাদুঘর স্থাপনেরও দাবি উঠছে।

প্রতিবেদক : জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল,
০১ নভেম্বর ২০২৫