চাঁদপুর

বর্জ্য অব্যবস্থাপনার জন্যে চাঁদপুরের বিসিকের নানাবিধ দূষণ বৃদ্ধি

মিজানুর রহমান রানা :  আপডেট: ০৫:০২ অপরাহ্ণ, ৩০ জুলাই ২০১৫, বৃহস্পতিবার

বেসরকারি শিল্প উদ্যোক্তাদেরকে শিল্প স্থাপনে সব ধরনের অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে ১৯৮৭-১৯৮৮ অর্থবছরে চাঁদপুর শহর হতে প্রায় ৬ কিলোমিটার পূর্বে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের দক্ষিণ পার্শ্বে বাবুরহাট এলাকায় ১০ একর জমির উপর উক্ত বিসিক শিল্প নগরী প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে বরাদ্দযোগ্য ৬৮টি প্লট রয়েছে। তন্মধ্যে ৩৬টি শিল্প ইউনিটের অনুকূলে ৬৮টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ২৭টি শিল্প ইউনিট চালু আছে, ৮টি নির্মাণাধীন ও ১টি নির্মাণের অপেক্ষায় রয়েছে। এসব শিল্প কারখানায় বছরে প্রায় ৪৫ কোটি টাকার পণ্য উৎপাদিত হয়। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে প্রায় ১৮২৫ জন লোকের। এই শিল্প নগরী থেকে ভ্যাট, আয়কর ইত্যাদি বাবদ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বৎসরে ১ কোটি ১৫  লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়। তবে এখানে শিল্পকারখানা স্থাপনে রয়েছে নানা সঙ্কট ও সমস্যা।

বাংলাদেশে যে কয়টি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প নগরী (বিসিক) রয়েছে চাঁদপুর তাদের মধ্যে অন্যতম। নদী কেন্দ্রীক ও বিভিন্ন জেলার সাথে স্থল পথে এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিনিয়োগকারীরা এখানে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে। কিন্তু বর্তমানে এখানকার পরিবেশ নানাভাবে দূষিত হচ্ছে। এদের মধ্যে প্লাস্টিক পোড়ানো, কারখানার বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা ড্রেনে নিক্ষেপ, কোল্ড স্টোরেজের পঁচনশীল আলু যেখানে সেখানে ফেলে রাখা এবং পুরাতন যন্ত্রপাতি অরক্ষিত করে রাখা উল্লেখযোগ্য। এসব কারণে দিন দিন বিসিকের পরিবেশ দূষণের মাত্রা বেড়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো মাথা ব্যাথা নেই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শাহাজালাল প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটা প্রতিষ্ঠানের সামনে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক পোড়ানো হচ্ছে। যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। এ ব্যাপারে ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মোরশেদ আলম মানিকের সাথে আলাপ হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে শ্রমিকের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা চালায় এবং নিজের অজান্তে হয়েছে বলে দাবি করে। পরবর্তীতে এধরনের কর্মকান্ড আর ঘটবেনা বলে আশ্বস্ত করেন।

অন্যদিকে অ্যাপোলো কোল্ড স্টোরেজের সহকারি ব্যবস্থাপক তার প্রতিষ্ঠানের দ্বারা বিসিকের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে এরূপ ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করে উল্টো পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ করেন।

তিনি বলেন, আমরা নিয়মিত সার্ভিস চার্জ দিয়ে আসলেও পাচ্ছি না আমাদের প্রাপ্য সেবা। এখানকার রাস্তাগুলো চলাচলের জন্যও অনুপযোগী বলে জানান এই কর্মকর্তা।

অন্যদিকে মুনলাইট প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক ও শিল্প মালিক সমিতির সভপতি আলহাজ্ব আবুল কালাম পাটওয়ারী বিসিক কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন গাফিলতির কথা তুলে ধরেন। বিসিকের বিদ্যুৎ, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও রাস্তাঘাট সংস্কারসহ নানান সমস্যার কথা উল্লেখ করে চাঁদপুরের বিসিক নগরী টিকে রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আরো সু-দৃষ্টি কামনা করেন।

 

চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫

চাঁদপুর টাইমস ডট কমপ্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি

Share