উপজেলা সংবাদ

বর্জন ও বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্যে নৌকার জয়জয়কার

সারাদেশে তৃতীয় এবং চাঁদপুরে দ্বিতীয় ধাপে সহিংসতা, বোমাবাজি, গুলি, কেন্দ্র দখল ও ভোট ডাকাতি ও প্রার্থীদের নির্বাচন বর্জনসহ নানা অনিয়মের অভিযোগের মধ্যে দিয়ে ফরিদগঞ্জ ও হাজীগঞ্জ উপজেলার ২৫ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ২৩ এপ্রিল শনিবার সম্পন্ন হয়েছে।

এ নির্বাচনে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৪টির মধ্যে ১০টিতে আওয়ামীলীগ এবং ২টিতে বিএনপির ও ১টিতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী বিজয়ী হন।

আর হাজীগঞ্জের ১১টি ইউনিয়নের ৯টিতে আওয়ামীলীগ প্রার্থী এবং ২টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১১নং চরদু:খিয়া পূর্ব ইউনিয়নে সংঘর্ষের কারণে ৩টি কেন্দ্রর ভোট স্থগিত থাকায় ১টি ইউনিয়নে ফলাফল ঘোষণা স্থগিত রয়েছে।

শনিবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এ দু’উপজেলায় ব্যাপক সহিংসতার মধ্যে দিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের জয় হয়েছে।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার বিজয়ী প্রার্থীরা হচ্ছেন ১নং ইউনিয়নে মো: সফিকুর রহমান পাটওয়ারী(নৌকা), ২নং ইউনিয়নে মো: হারুন-অর রশিদ(আনারস), ৩নং ইউনিয়নে মাও. শারাফাত উল্ল্যাহ (নৌকা), ৪নং ইউনিয়নের মো: মহসিন (ধানের শীষ), ৫ নং মো: ওসমান গণি বাবুল পাটওয়ারী(নৌকা), ৬ নং কালাম ভুঁইয়া(নৌকা), ৭ নং আলী আক্কাস ভুঁইয়া (নৌকা), ৮নং শওকত বিএসসি(নৌকা), ৯নং মোঃ সোহেল চৌধুরী(নৌকা), ১০ নং আব্দুল হান্নান (ধানের শীষ), ১২ নং হাসান আব্দুল হাই (নৌকা), ১৫ নং ওমর ফারুক ফারুকী(নৌকা) ও ১৬নং মোঃ ইস্কান্দার মিয়া (নৌকা)।

হাজীগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে বিএনপির কোন প্রার্থী বিজয় লাভ করেনি। তবে উপজেলার ৪নং কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নে বিএনপির বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) গোলাম মোস্তফা স্বপন ঘোড়া প্রতিকে বিপুল ভোট পেয়ে বিজয় হয়েছে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ছিল আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. আবু নছর পাটওয়ারী মিন্টু।

৮নং হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মির্জা জলিলুর রহমান দুলাল বিপুল ভোটে বিজয়ী লাভ করেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন মিয়াজী।

আওয়ামীলীগ মনোনীত বিজয়ী ৯ চেয়ারম্যান হলেন, ১নং রাজারগাঁও ইউনিয়নে আঃ হাদী (নৌকা), ২নং বাকিলা ইউনিয়নে মাহফুজুর রহমান ইউসুফ পাটোয়ারী (নৌকা), ৩নং কালোচোঁ ইউনিয়নে মানিক হোসেন প্রধানিয়া (নৌকা), ৫নং সদর ইউনিয়নে সফিকুর রহমা ন(নৌকা), ৬নং বড়কুল ইউনিয়নে কবির হোসেন (নৌকা), ৭ নং বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নে মনির হোসেন গাজী (নৌকা), ৯নং গর্ন্ধবপুর ইউনিয়নে রফিকুল ইসলাম(নৌকা), ১০নং গর্ন্ধব্যপুর দক্ষিন ইউনিয়নে গিয়াস উদ্দিন (নৌকা), ১১ নং হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী জাকির হোসেন লিটু (নৌকা)।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফরিদগঞ্জে কর্তব্যরত একজন প্রিজাইডিং অফিসার বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের আশ্বাস পেয়ে আমরা মনে করেছিলাম- ব্যালট পেপার ছিনতাই, সংঘর্ষ কিছুটা কম হবে। তাদের নেতাকর্মীরা অনিয়মে জড়াবে না। আমরাও সতর্ক করেছিলাম। কিন্তু দেখছি- উল্টো। ঝামেলা তো করেই যাচ্ছে। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা ভয়ে থাকলে কিংবা অনিয়মের প্রকৃত চিত্র না পাঠালে আমরা কি করি! প্রশাসন সহায়তা না করলে স্বাধীন সংস্থা কাগজে-কলমে থাকে। এক্ষেত্রে সবার আন্তরিক সহযোগিতাও দরকার।’

অপরদিকে সকাল থেকে ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে ভোটারদের মধ্যে কিছুটা আগ্রহ দেখা গেছে। তারা উৎসাহ-উদ্দীপনায় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে লাইন ধরেছে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাল্টে যেতে শুরু করে ভোটের চিত্র। একের পর এক কেন্দ্র দখলের ঘটনা ঘটতে থাকে।

কোথাও কোথাও ভোটাররা দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও ভোট দিতে না পেরে ফিরে ব্যর্থ মনোরথে বাড়ি ফিরে যান।

তাদের অভিযোগ, তাদের ভোট আগেই দেয়া হয়ে গেছে। দু’উপজেলাতেই বিভিন্ন প্রার্থীর কর্মীদের ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ব্যালট পেপারে অবাধে সিল মারতেও দেখা গেছে।

ফরিদগঞ্জের ১৪ ইউনিয়নে মোট প্রার্থী ছিলো ৬শ’ ৫০ জন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬৩, সাধারণ সদস্য পদে ৪শ’ ৮০ এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১শ’ ৭ জন প্রার্থী। এই ১৪ ইউনিয়নে মোট ভোটার হচ্ছে ২ লাখ ৪৯ হাজার ৮শ’ ৪৯। কেন্দ্র ১শ’ ৩১টি।

হাজীগঞ্জের ১১টি ইউনিয়নে মোট প্রার্থী হচ্ছে ৪শ’ ৯২ জন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৪০, সাধারণ সদস্য পদে ৩শ’ ৭৩ এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৭৯ জন প্রার্থী। এ ১১ ইউনিয়নে মোট ভোটার ১ লাখ ৭৭ হাজার ৯শ’ ৭৪। ভোট কেন্দ্র হচ্ছে ১শ’ ৮টি।

মাজহারুল ইসলাম অনিক[/author]

: আপডেট ১২:৩০ এএম, ২৪ এপ্রিল ২০১৬, রোববার
ডিএইচ

Share