আমন্ত্রিত অতিথিরা ভিড় জমিয়েছেন। আর একটু পরেই বিয়ে। বিয়ের আসরে বসে আছেন বর-কনে। ঠিক এমন সময় অগ্নিমূর্তি রূপ নিয়ে আসরে হাজির এক নারী। সঙ্গে আরও জনা কয়েক মানুষ। সেই অগ্নিমূর্তি নারীকে দেখে চিনতে পেরেছিলেন বর। তাই পরিস্থিতি এড়াতে বিয়ের আসর থেকে উঠে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ওই নারী বরের কলার চেপে অতিথি ও হবু বউয়ের সামনেই শুরু করে দিলেন ধুমধাম মার।
ওই নারীর দাবি, তিনি বরের প্রথম স্ত্রী। তাঁর সঙ্গে বিচ্ছেদ না করে এবং অনুমতি না নিয়ে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করতে এসেছেন। নতুন এই বিয়ে তো ভেঙেছেই, তার ওপর এ ঘটনা থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়ে গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের লুধিয়ানা জেলায়।
রোববার হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪২ বছর বয়সী ওই বর বিশাল কুমার সনুকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম রাখি। ঘটনাটি লুধিয়ানা জেলার মল্লার রোডের একটি রেস্তোরাঁয় ঘটেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম স্ত্রী রাখির সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদ না করেই নিজের চেয়ে ১৮ বছরের ছোট এক মেয়েকে বিয়ে করতে যাচ্ছিলেন সনু। সেই হিসেবে অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয় মল্লার রোডের একটি রেস্তোরাঁয়। বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার আগেই সেখানে রাখি ও পরিবারের সদস্যরা গিয়ে হাজির হন। এ সময় রাখিকে চেনেন না বলে সনু দাবি করলে রাখি তাঁকে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে সনু পালানোর চেষ্টা করলে রাখির পরিবারের সদস্যরাও তাঁকে ধরে মারধর করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছায়। পরে ওই রেস্তোরাঁর কর্মীরা সবাইকে রেস্তোরাঁ থেকে বের করে দেন।
রাখির ভাই পবন কুমার বলেন, ১৪ বছর আগে রাখি ও সনুর বিয়ে হয়। তাঁদের ঘরে ১৩ বছর বয়সী একটি ছেলেও আছে। সনু কোনো কাজকর্ম করেন না। টাকার জন্য প্রায়ই তিনি রাখিকে মারধর করতেন। এ কারণে রাখি সম্প্রতি বাবার বাড়িতে চলে যান।
পবন কুমার বলেন, ‘আমরা সনুকে শর্ত দিয়েছিলাম, তিনি রোজগার করতে পারলে রাখিকে আবারও তাঁর বাড়িতে পাঠানো হবে। সনু এই শর্তে রাজি হয়েছিলেন এবং মাঝেমধ্যে রাখির সঙ্গে দেখা করতে আসতেন। আমরা কখনোই ভাবিনি যে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করবেন। দুই দিন আগে একজন তাঁর দ্বিতীয় বিয়ের আমন্ত্রণপত্র দেখানোয় আমরা বিষয়টি জানতে পারি।’
সনুর দ্বিতীয় বিয়ের আসরে থাকা কনের নাম রিতু। রিতুর পরিবার জানায়, সনু তাঁদের জানিয়েছিলেন, তিনি বিবাহিত। সাত বছর সংসার করেছেন। কিন্তু প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বর্তমানে তিনি বিবাহবিচ্ছেদ করেছেন। এমনকি এ কথা প্রমাণের জন্য সনু প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের নথিপত্রও তাঁদের দেখিয়েছেন।
বিয়ের আসর সাজানো ওই রেস্তোরাঁর কর্মীরা বলেন, জন্মদিনের অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা বলে সনু এই ভেন্যু ভাড়া নিয়েছিলেন।
তবে ঘটনাস্থলে থাকা আলোকচিত্রীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, একটি বিবাহবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের ছবি তোলার জন্য তাঁদের এখানে ভাড়া করে আনা হয়েছে।
সারাভা নগর থানার উপপরিদর্শক মোহন লাল বলেন, ঘটনাটির তদন্ত শুরু হয়েছে।
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১১:৫৫,এ.এম ,০৬ মার্চ ২০১৭,সোমবার
ইব্রাহীম জুয়েল