বরিশালে সবগুলো কেন্দ্র এখন আওয়ামী লীগের দখলে চলে গেছে। সেখানে কাউন্সিলর পদে কিছু ভোট হলেও মেয়র পদের ব্যালট দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জাল ভোটের প্রতিবাদ করায় বাসদ মনোনীত মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলা করা হয়েছে।
জেলা বাসদ সভাপতি ইমরুল হাকিম রুমন বলেন, সকাল পৌনে ১০টার দিকে মেয়র প্রার্থী ডা. মনীষা চক্রবর্তীসহ সদর গার্লস কেন্দ্রে যান। সেখানে তারা জানতে পারেন মেয়র ব্যালট বাদে অন্য ব্যালট দেওয়া হচ্ছে। প্রার্থী ভেতরে গিয়ে দেখেন মেয়র ব্যালটে আওয়ামী লীগের কর্মীরা সিল দিচ্ছেন। তিনি সাথে সাথে রিটার্নিং অফিসারকে জানান। রিটার্নিং অফিসার দ্রুত চলে আসেন। এ সময় তাঁর সামনেই বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের দুই কর্মী চড় থাপ্পর মারেন মনিষাকে। বাসদ সভাপতি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে বরিশাল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন তিনি।
এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে নগরীর ৮০টির বেশি কেন্দ্র দখলে নিয়ে নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা। তারা সেখানে প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে নৌকা প্রতীকে সিল মেরে বাক্সে ফেলছে।
এছাড়াও তিনি ভোট কারচুপি, এজেন্টদের মারধর ও কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ তোলেন।
উল্লেখ্য সোমবার সকাল ৮টা থেকে বরিশালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ৬ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৯৪ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এবার ২ লাখ ৪২ হাজার ১৬৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২১ হাজার ৪৩৬ জন এবং নারী ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার ৭৩০ জন।
নগরীতে ১২৩টি কেন্দ্রের ৭৫০টি বুথে বিরামহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে। এরমধ্যে ৪টি ওয়ার্ডের ১টি কেন্দ্রে ৭৮টি বুথে ভোট গ্রহণ করা হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম পদ্ধতিতে।
২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, সোয়া ৮টার মধ্যে তার কেন্দ্রগুলো থেকে বিএনপি এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। এখন ২৪, ২৫ ২৬ নম্বর ওয়ার্ড পুরোপুরি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দখলে। এখানে স্থানীয় পত্রিকার এক সাংবাদিক ভোট দিতে এসে পড়েন বিড়ম্বনায়। তাঁকে শুধু কাউন্সিল প্রার্থীর ব্যালট দেওয়া হয়।
৪ নম্বর ওয়ার্ডের মহাবাজ কেন্দ্রে কোনো ব্যালটই দেওয়া হচ্ছে না বলে ভোটারদের অভিযোগ। পুরো কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের কর্মীরা সিল মারছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রিসাইডিং অফিসার তানভির হাসান মিডিয়ার কাছে বলেন, ‘বিষয়টি আমি ওপরের মহলকে অবহিত করেছি।’
মাহামুদিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে মেয়র পদে ব্যালট দেওয়া বন্ধ করা নিয়ে ইসলামী আন্দোলন কর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ কর্মীদের হাতাহাতি হয়। খবর পেয়ে ছুটে যান মেয়র প্রার্থী মাও. ওবাইদুর রহমান মাহাবুব। তাঁর সঙ্গে বাদানুবাদের একপর্যায়ে কিছু ভোটার ভোট দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
কালের কন্ঠ