দেশের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি

কিছু অঞ্চলে অবনতির পূর্বাভাস থাকলেও এখন দেশে বন্যা পরিস্থিতির প্রতিনিয়ত উন্নতি হচ্ছে।

শুক্রবার দেশে বন্যাকবলিত জেলা ছিল ১২টি, আজও রোববার তাই রয়েছে। তবে শুক্রবার ১২টি নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে থাকলেও আজ আটটি নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পাশাপাশি ওইদিন ১৬টি স্টেশনে পানি বিপৎসীমার উপরে থাকলেও এখন ১১টি স্টেশনের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অর্থাৎ দুই দিনের ব্যবধানে চারটি নদী ও পাঁচটি স্টেশনের পানি বিপৎসীমার নিচে নেমেছে। স্বাভাবিকভাবে সেসব অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতিরও উন্নতি হয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের ৭ ও ৯ আগস্টের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া যায়।

রোববারের পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি কমছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি কমছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উজান মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি কমছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ঢাকার আশপাশের নদীগুলোর পানি কমছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

এর প্রভাবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নাটোর, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, চাঁদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। এ সময়ে ঢাকা সিটি করপোরেশন সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

শনিবার (৮ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত সময়ে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত হয়েছে মহেশখোলায় ৭৯ ও সুনামগঞ্জে ৪২ মিলিমিটার। একই সময়ে বাংলাদেশের উজানে অর্থাৎ ভারতের জলপাইগুড়িতে ৯৬ ও দার্জিলিংয়ে ৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

দেশের ৩৩টি বন্যাউপদ্রুত এলাকায় ৪০ দিনে ডায়রিয়া, পানিতে ডুবে, বজ্রপাতে, সাপের কামড়ে ও অন্যান্য কারণে ১৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ৩০ জুন থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত এসব মৃত্যুর ৮৪ শতাংশই অর্থাৎ ১৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, বন্যাকালীন মৃত ১৭৪ জনের মধ্যে পানিতে ডুবে ১৪৬ জন, বজ্রপাতে ১৩ জন এবং সাপের কামড়ে ১৫ জনের মৃত্যু হয়।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় পানিতে ডুবে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে লালমনিরহাটে একজন, কুড়িগ্রামে একজন, জামালপুরে একজন, কিশোরগঞ্জে একজন ও গাজীপুরে একজনের মৃত্যু হয়।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, বন্যায় পানিতে ডুবে এবং সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকে। বাড়িঘরে পানিতে ডুবে যাওয়ায় ছোটশিশুদের নিয়ে মানুষ আতঙ্কে থাকে। পানিতে ডুবে যাদের মৃত্যু হয় তাদের অধিকাংশই শিশু।

এদিকে বন্যাকালীন মৃত ১৭৪ জনের মধ্যে লালমনিরহাটে ১৬ জন, কুড়িগ্রামে ২৩ জন, গাইবান্ধায় ১৫ জন, নীলফামারীতে দুইজন, রংপুরে তিনজন, সুনামগঞ্জে তিনজন, সিরাজগঞ্জে ১৪ জন, জামালপুরে ২৯ জন, টাঙ্গাইলে ২৮ জন, রাজবাড়ীতে একজন, মানিকগঞ্জে ১৭ জন, নেত্রকোনায় পাঁচজন, নওগাঁয় দুইজন, কিশোরগঞ্জে চারজন, ঢাকায় পাঁচজন, শরীয়তপুরে একজন, মুন্সিগঞ্জে তিনজন, গাজীপুরে একজন ও গোপালগঞ্জে দুইজনের মৃত্যু হয়।

বার্তা কক্ষ ৯ আগস্ট ২০২০

Share