মানুষের জীবনে নাকি মনে রাখার স্মৃাতিগুলো স্কুল লাইফেই হয়। তবে কলেজ লাইফেও কিছু স্মৃতি মনকে নাড়া দেয়। অবাক হচ্ছেন, অবাক হওয়ার মত কিছু বলিনি। আমার কাছে অবাক হওয়াটা এখন স্বাভাবিক হয়ে গেছে। আপনি কি নিজেকে নিয়ে ভেবেছন? নাকি এখনো ভাবছেন বা ভাববেন। যাই করুন না কেনো সময় কিন্তু খুবই কম।
খুব কম মানুষেই আছে যারা নিজেকে নিয়ে ভাবে। আর নিজের মধ্যে একটা প্রশ্নই বার বার কড়া নারে “জীবনটা এম কেন? পক্ষান্তরেই অন্ধকার থেকে কেউ একজন বলে উঠলো, আমি তোমার বন্ধু হতে চাই। হঠাৎ জীবনটা যেন ব্রেকফেল করা গাড়ির মতো ছুটতে শুরু করলো। যাই হোক দুর্ঘটনা তো আর হয়নি। আছে না আমার কতগুলো বন্ধু। তারাই আমাকে নতুন করে স্বপ্ন দেখার সুযোগ করে দিয়েছে।
এইতো কিছুদিন আগের কথা মাত্র স্কুল জীবন শষ করে কলেজে পা রাখলাম। ও……হে আপনাদের বলা হয়নি। কলেজে পা রাখার আগে থেকেই আমি সাংবাদিকতায় জড়িত হই। এতে করে আমার অনেক বন্ধুই আমাকে সাংবাদিক কিংবা রিপোর্টার বলে ডাকে। শুরু করা যাক বাকি কথা।
অনেক কৌতুহল, স্বপ্ন আর আশা নিয়ে শুরু হয়েছিলো কলেজ জীবনের পথচলা। কলেজের প্রথম দিনটা কার না মনে আছে। কিছু স্মৃতি একদম ভুলার নয়। আজও যেন ভাসছে সোনালী সেই দিনগুলো। নিজেরে ডায়েরিতে কোন কথা না লিখলেও অন্তরে খোদাই করে লিখে নিয়েছি পুরোটাই।
জীবনের রঙ্গিন পাতায় লিখা হয়েছে অতীত হয়ে যাওয়া সেই সময়ের স্মৃতিগুলো। কলেজ জীবনে কিছু নতুন বই যা মাথা নস্ট করে দিতো প্রতিনিয়ত। মাঝে মধ্যে যখই ক্লাসে যেতাম চুপ করে বসে থাকতাম ট্যাবিলে। পাশের বন্ধুরা কথা বলতো, আর দোষ এসে আমার ঘারে পড়তো। যাই হোক সেই দাঁড় করিয়ে রাখা ম্যাডাম আজ আমাকে বাবা বলে ডাকে। এর চাইতে বড় কিছু অর্জন করা আমার জন্য অন্য কিছু আর হতে পারে না। এরপর স্যারদের দেখানো পথেই ছিলো জীবনের লক্ষ্য।
আশা যাক বন্ধুদের কাছে…. কিছু অপরিচিত নতুন বন্ধু আর কিছু পুরনো বন্ধুদের সাথে নতুন করে বন্ধুত্ব যাদের ভালোবাসায় আজ সিক্ত কিন্তু কথার ফুলঝুরিতে বিরক্ত প্রথমে তো ভালই লাগত কলেজ যেতে কিন্তু দিন যতই যায় আগ্রহ ততই কমে, কিন্তু সেই সময়ের স্মৃতি তো একদম ভোলার নয়।
মাঝে মধ্যে কলেজ যাওয়া, বসে বসে স্যারের লেকচার শোনা, আবার কিছু দুস্ট ফ্যান্ডের মেয়েদের বিরক্ত করার দৃশ্য, কোথাও কোন রোমিও জুলিয়েটের দৃশ্য, বিরক্ত হয়ে মেয়েদের চলে যাওয়ার দৃশ্য। আর আলপিন দিয়ে.. তো মারার মজাই আদালা। তমে ছেলেদেরে জন্য প্রযোজ্য নয়। এটি হলো মেয়েদের অ¯্র। ছেলেরা যখনই কিছু করেতো, আর মেয়েরা তখনই বোরকার মধ্য থেকে আলফিন খুলে গুতো মারতো। দেখে মনে হবে মেয়েদের সেটাই রক্ষা কবজ।
চলেন এবার ক্লাসে যাই, কোনদিন সামনে বেঞ্চে বসে অতি মনোযোগ সহকারে ক্লাস করা, কখনো পিছনে বসে বন্ধুদের সাথে গল্পে গল্পে সময় কাটানো নরম সরম স্যারের ক্লাসের মধ্যে ডিস্টার্ব করা, কখনো স্যারের ঝাড়ি খাওয়া, কখনো স্যারের উপদেশ বাণী শোনা, ক্লাস বাদ দিয়ে মাঠে আড্ডা, তা যেনো ভুলার নয়। কিংবা ফুসকার দোকানে বা চায়ের দোকানে একটু ঘুরে আসা। সব মিলিয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের সময় গুলো ছিলো দেখার মত।
স্যারদের চোখ ফাঁকি দিয়ে পিছন দিয়ে ক্লাস পালানো, কলেজ-দুষ্টমি-পড়ালেখা-আড্ডা একই মালায় গাথা এরকম আরো কিছু ছোটখাটো স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই স্বল্প সময়ে। কলেজ জীবন জুড়ে ভালই তো চলছিল কিন্তু পরীক্ষা নামক ব্রেকে এসে থামিয়ে দেয় সেই কলেজ জীবনে সমাপ্ত পরীক্ষা। অপেক্ষা করছে দরজার অপর পাশে, অবাক হচ্ছি এইতো সেদিন নতুন ভাবে উদ্দীপ্ত হয়ে পথ চলা শুরু করলাম এই কলেজ জীবনের, এর মধ্যেই শেষ হয়ে গেল আজ সেই পথের চতুর্থবর্ষ।
একদম শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে কেবল এটাই ভাবছি পথ টা কি ছোট ছিল? নাকি সময় সঙ্কীর্ণ জীবন আলোর গতিতে ছুটে চলেছে হয়ত দুটোই। যাই হোক আর মাত্র কয়েকদিন পর চতুর্থবর্ষ সমাপনী পরীক্ষা। কিন্তু এই পরীক্ষায় মনে হয়, একটুও পড়ালেখা করেনি।
জীবনের কষ্টপ্রাণে এসে অনেক বড় পরীক্ষা দিয়েছি কিন্তু কখনো ভয় লাগেনি, তবে কেনো এই পরীক্ষায় ভয় পাবো। আসলে ভয়না একটু টেনশন হচ্ছে। টেনশন তো শুধু আমার একার নয়, কলেজের সকল বন্ধুদের একই রকম অনুভূতি হয়।
আমি নিজের জন্য একা কিছু চাই না, আমি আমার সকল বন্ধুদের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, যাতে আমরা এক একজন ভালো কিছু অর্জন করে পিতামাতা, শিক্ষক, আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধব সবাইকে খুশি করতে পারি। আর চাই না কোন কারণে ব্রেকফেল করা গাড়ির মতো থমকে যাক জীবনের গতিপথ।
লেখক পরিচিতি : শরীফুল ইসলাম
অনার্স ৪র্থ বর্ষ, সমাজকর্ম বিভাগ।
চাঁদপুর সরকারি কলেজে।