নিউজ ডেস্ক, চাঁদপুর টাইমস :
এনালগের সীমানা পেরিয়ে এখন ডিজিটাল যুগে বসবাস করছি আমরা। সময়ের সাথে সাথে বদলে গেছে আমাদের আবেগ অনুভুতি আর ভালোবাসা প্রকাশের রীতিও। এক সময় রমজান এলেই নতুন জামা-জুতার পাশাপাশি জমে উঠতো ঈদকার্ডে বাজার। বন্ধু-বান্ধব, প্রেমিক- প্রেমিকা কিংবা সুসম্পর্ক আছে এমন মানুষদের কাছে ঈদ কার্ড পাঠিয়ে উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানাত অনেকেই। কিন্তু কালক্রমে এই রীতি কিছুটা কমে গেছে। এখন মোবাইলে এসএমএস ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ঈদ শুভেচ্ছা জানান অনেকে। কিন্তু এই রীতিতে যারা বিশ্বাসী নয় তারা এখনও ছুটছেন ঈদ কার্ড কিনতে। ব্যতিক্রমী শুভেচ্ছা বার্তা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ঈদ কার্ড।
পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে বিভিন্ন শপিংমল মার্কেটসহ পাড়া-মহল্লার কোথাও কোথাও মনোরম ও চোখ জুড়ানো ঈদ কার্ডের সমারোহ ঘটেছে। শুধু বন্ধু-বান্ধবীর মধ্যেই এখন আর এই ঈদ কার্ড বা ঈদ উপহার সীমাবদ্ধ নেই। বরং গোষ্ঠি ভিক্তিক ঈদ শুভেচ্ছা জানানোর এই পুরোনো পদ্ধতি আগের তুলনায় এখন আরো বাড়ছে। বিভিন্ন অফিস-আদালত, সংগঠন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তার গ্রাহক ও শুভাকাঙ্খীদের ঈদ কার্ড পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। ইদানিং বিষয়টি অনেকটা রেওয়াজেই পরিণত হয়েছে। তাই প্রতিদিনই লাখ লাখ ঈদ কার্ড পাইকারি হারে বিক্রি হচ্ছে।
প্রতিবছর ঈদ উপলক্ষে বের হয় নান্দনিক সব ঈদ কার্ড। এবারো এর ব্যতিক্রম হয়নি। এরই মধ্যে বাজারে এসেছে হরেক রকম কার্ড। মঙ্গলবার দিনভর বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতা কম হলেও কার্ডের নান্দনিকতা বেড়েছে। পল্টনের আজাদ প্রডাক্টস, আউডিয়াল প্রডাক্টস, ওরিয়েন্টাল ও মদিনা প্রডাক্টস ঘুরে পাওয়া গেছে নিত্য নতুন নকশার সব ঈদ কার্ড।
শিশুদের জন্য সর্বনিম্ন ৫০ টাকা দামের মিউজিক্যাল ঈদ কার্ডও রয়েছে আজাদ প্রডাক্টসে। আজাদ প্রডাক্টসের কার্ডগুলো সাধারণত সুইডেন পেপার, আর্ট পেপার, অ্যামবোস পেপার, সলিড বোর্ড এই চার ধরনের কাগজে ডিজাইন হয়। সেখানকার সেলস ম্যানেজার আদনান আহমেদ জাগো নিউজকে জানান, ১০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা মূল্যের শতাধিক ডিজাইনের ঈদ কার্ড এনেছেন তারা। শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য ই-মেইল, ফেসবুক আর এসএমএসের দিকে ঝুঁকে পড়ায় ঈদ কার্ডের প্রচলনও কমে এসেছে। তবে ঈদ কার্ডের আবেদন এখনো ফুরিয়ে যায়নি।
আইডিয়াল প্রডাক্টসের কার্ডে বিভিন্ন আলোকচিত্র ব্যবহার করা হয়েছে। দাম তুলনামূলক কম। ১০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায় কার্ড। নিউ মার্কেট ও বনানীসহ রাজধানীর বিভিন্ন বিপণিবিতানে রয়েছে তাদের বিক্রয় কেন্দ্র। এছাড়া এবার পাওয়া যাচ্ছে শিশুদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা ঈদ কার্ডও।
দোকানিরা জানান, স্কুলের ছেলে-মেয়েদের কাছে এখনো ঈদ কার্ডের আবেদন রয়েছে। তাদের পছন্দ দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় সব কার্ড।
এছাড়া আইডিয়াল প্রডাক্টসের কার্টুন ছবির ঈদ কার্ডগুলো আকর্ষণীয়। আইডিয়াল প্রডাক্টসের কার্ডগুলো অ্যামবোস পেপার, সলিট আর্ট, বোর্ড হ্যান্ডিক্রাফট ও হ্যান্ডবোর্ডে তৈরি হয়। মদিনা প্রডাক্টসের কার্ডগুলো তৈরি হয় অ্যামবোস ও আর্ট কার্ডে। এর মধ্যে আইডিয়ালের মিনি কার্ড ও মাঝারি কার্ড আছে ২০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। বড় কার্ড ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
ওরিয়েন্টাল প্রডাক্টসের কার্ডগুলো কাটিং কার্ড, অ্যামবোস, আর্টিজ কার্ড ও চায়না কার্ডে তৈরি। ফয়সাল প্রডাক্টসের কার্ডগুলো সাধারণত অ্যামবোস পেপার, কাটিং কার্ড ও আর্ট কার্ডে তৈরি হয়। মদিনার মিনি কার্ড এক টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত, বড় সাইজ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়াও কার্টন প্রডাক্টসের কার্ডগুলো ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
‘হলমার্ক’ ও ‘আর্চিজ’ দুটি কার্ডের দোকান রয়েছে নিউ মার্কেটে। মেশিনে তৈরি কার্ড ছাড়াও হাতে তৈরি কার্ডও রয়েছে। হলমার্কের দোকান থেকে কিছু কার্ড কেনেন সংস্কৃতিকর্মী সাদিয়া মালিক। তিনি বলেন, ব্যতিক্রমী শুভেচ্ছা হিসেবে এখনও ঈদকার্ড ব্যবহার করেন তিনি। ঈদকার্ডের মাধ্যমে যেভাবে শুভেচ্ছা জানানো যায় সেই আন্তরিকতা অন্য কোনো মাধ্যমে পাওয়া যায় না -দাবি করেন তিনি।
এছাড়াও ধানমন্ডির রাপা প্লাজা, পান্থপথের বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের কার্ডের দোকানগুলোতেও ভিড় রয়েছে ঈদ কার্ড কেনার।
আপডেট : বাংলাদেশ সময় : ১০:৫৭ অপরাহ্ন, ২৯ আষাঢ় ১৪২২ বঙ্গাব্দ, মঙ্গলবার ১৪ জুলাই ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস ডট কম–এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি