জেলার মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার মেঘনা- ধনাগোদা নদীর ওপর নির্মিত মতলব সেতুর কাজ ৮০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। বাকী কাজ আগামী ফেব্রুয়ারি – মার্চ মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে চাঁদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগ সূত্রে জানাযায়।
চাঁদপুরের সঙ্গে ঢাকার দূরত্ব কমাতে, সময় বাঁচাতে ও মতলববাসীর স্বপ্নপূরণে নির্মাণ করা হচ্ছে মতলব সেতু। এ পর্যন্ত প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় ও নির্দিষ্ট ব্যয়ে শেষ হচ্ছে না এ সেতুর নির্মাণ কাজ। ফলে গত জুন মাসে সময় আরও এক বছর বাড়িয়ে এবং ব্যয় ও ৮ কোটি টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে মেঘনা-ধনাগোদা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয় চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ। মোট ৮৪ কোটি টাকার মধ্যে মূল সেতুর ব্যয় ৫৬ কোটি টাকা ও জমি অধিগ্রহণ বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮ কোটি টাকা। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে
স্থানীয় এমপি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর কাজ শুরু হয়। সেতুর কাজ শেষ হওয়ার নির্ধারিত সময় ছিল ২০১৭ সালের ৩০ জুন।
সেতুর কাজ দ্রুত শুরু হলেও এ্যাপ্রোচ সড়কের প্রোটেক্টিভ ওয়ার্কের জন্য নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যার কারণে সময় ও অর্থ ব্যয় দুটিই বেশি লাগছে।
প্রকল্পের আওতায় রয়েছে ৩০৪ দশমিক ৫১ মিটার দৈর্ঘ্যরে আরসিসি সেতু, এ্যাপ্রোচ সড়কের ওপর ৩০.৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি সেতু, ১২ মিটার দৈর্ঘ্যরে দুটি আরসিসি কালভার্ট, ১০ মিটার দৈর্ঘ্যরে দুটি আরসিসি আন্ডারপাশ, ১.৮৬ কিলোমিটার সার্ফেসিং এবং নতুন পেভমেন্ট তৈরি, ৯ দশমিক ৩৪ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ, ৩.২৩ লাখ ঘন মিটার সড়ক বাঁধ, জিও টেক্সটাইল, টো-ওয়াল, সার্ফেস ড্রেন, দুটি ইন্টারসেকশন আইল্যান্ড এবং সাইন, সিগন্যাল ইউটিলিটি সিফটিংসহ আনুষঙ্গিক কাজ। সেতুতে ১০. ২৫ মিটার প্রস্থের ৭টি স্প্যান থাকবে। সেতুর দুপাশে এ্যাপ্রোচ সড়কটি থাকবে ১.৮৬ কিলোমিটার।
চাঁদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের মতলব শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাজহারুল হক জানান, মূলত এ্যাপ্রোচ সড়কের প্রোটেক্টিভ ওয়ার্কের জন্যই এক বছর সময় বাড়ানো হয়েছে। এ্যাপ্রোচ সড়ক ছিল ৯ হাজার স্কয়ার মিটার। এখন তা বাড়িয়ে করা হচ্ছে ৬২ হাজার স্কয়ার মিটার। এ কারণেই সময় বেশি লাগছে ও ৮ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। আশা করছি আগামী ২০১৮ সালের জুন মাসেই সেতুর কাজ শতভাগ শেষ হবে।
চাঁদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ওচমান গনি পাটওয়ারী জানান, এ সেতুটি মন্ত্রীর নির্বাচনী ওয়াদা যা সরকার দ্রুত বাস্তবায়ন করছে। মতলব উত্তর-দক্ষিণ উপজেলাকে ধনাগোদা ও মেঘনা নদী বিভাজন করেছে। দুটি উপজেলার প্রায় ৮ লাখ মানুষের চলাচল ও দক্ষিণাঞ্চলের নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, বরিশাল ও চাঁদপুরের হাইমচর, শাহারাস্তি, ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর সদর ও হাজীগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকার মানুষের ঢাকা যাতায়াতের করার সহজ পথ এটি।
এ ছাড়া এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষিপণ্য পরিবহন, চাঁদপুর থেকে ইলিশসহ দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর মাছ ঢাকায় দ্রুত পৌঁছানো ও পণ্য আনা-নেয়া সহজ হবে।
চাঁদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সূব্রত দত্ত জানান, সেতু নির্মিত হলে এ অঞ্চলের মানুষের ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত সহজ হবে।এ কাজটি দ্রুত শেষ করার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি, আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের আগেই সেতুটি উদ্বোধনের উপযোগী হবে বলে আমি আশাবাদী। আমরা ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছি বাকীটা ও সঠিক সময়ে সম্পন্ন হয়ে যাবে। (বাসস )
করেসপন্ডেন্ট
আপডেট,বাংলাদেশ সময় ১১:১০ পিএম, ১ নভেম্বর ২০১৭,বুধবার
এজি