ফরিদগঞ্জ

ফ‌রিদগ‌ঞ্জে নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ পরিবারকে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ

চাঁদপুর ফরিদগরঞ্জে আপন ভাতিজি কর্তৃক বৃদ্ধ চাচা-চাচিকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, বাড়িতে নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করা ওই বৃদ্ধার সম্পত্তি দখল এবং হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছে অসহায় পরিবারটি।

ফরিদগরঞ্জের ১৫নং রূপসা উত্তর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের জনতা বাজারস্থ ভাটেহৃদ গ্রামে এই অমানবিক ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, ওই গ্রামের ৭০ বছর বয়সী মো. অজি উল্লাহ জীবীকার প্রয়োজরে দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। ইতিমধ্যেই চার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। কোনো পুত্র সন্তান না থাকায় শেষ জীবনে স্ত্রী কোহিনুর বেগম (৬০) সহ নিজের বসত বাড়িতে সুখে-শান্তিতে জীবন-যাপন করছেন।

এদিকে গত কয়েক বছর ধরে তার আপন ভাতিজি তাসলিমা বেগম (৪৩) স্বামীর বাড়ি থেকে বিতারিত হয়ে বাপের বাড়িতে (অজিউ ল্লাদের বসতঘরের পাশে) আলাদা ঘর করে বসবাস করছেন। বাপের বাড়িতে বসবাস করা অবস্থায় তাসলিমা বেগম নিজের আপন ভাই-ভাবিসহ পুরো বাড়ির সবার সাথেই তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঝগড়ায় জড়িয়ে থাকেন। তাসলিমা এবং তার মাদকাসক্ত ছেলে রহমান হোসেনের (২৬) অত্যাচারে পুরো বাড়ির মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।

বৃদ্ধা অজি উল্লাহ জানান, অবসর জীবন, তাই আমি বাড়িতে হাস-মুরগী পেলে সময় কাটাই। গত ১৯ সেপ্টেম্বর আমার দু’টো হাস মেরে ফেলাকে কোন্দ্র করে আমার স্ত্রীর সাথে তাসলিমার কথা কাটাকাটি হয়। সন্ধ্যায় তাসলিমার মাদকাসক্ত ছেলে রহমান হোসেন তার মাকে সাথে নিয়ে অস্ত্র হাতে আমাকে এবং আমার স্ত্রীর উপর হামলা করে। আমাদের ডাক চিৎকার শুনে প্রতিবেশি সিরাজুল ইসলাম মিয়া এগিয়ে এলে তাকেও পিটিয়ে আহত করে।

পরে প্রতিবেশিরা আমাদের উদ্ধার করে ফরিদগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে ভর্তি করায়। এতেই শেষ নয়, মাদকাসক্ত তাসলিমার ছেলে আমাগদের হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে।

তিনি আরো জানান, বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং জনপ্রতিনিধিদের জানালে, তাদের পরামর্শে জীবনের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ফরিদগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।

পুলিশ বিষয়টি মীমাংসা করতে উভয় পক্ষকে থানায় ডাকলেও তাসলিমা ও তার ছেলে তাতে রাজি না হয়ে উল্টে নানান হুমকি-ধমকি দিচ্ছে এবং থানায় অভিযোগ দেয়ায় সে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদারের জয়নাল আবেদিনের পরামর্শ এবং সহযোগিতায় ২২ সেপ্টেম্বর চাঁদপুর আদালতে একটি মিথা মামলা দায়ের করে।

প্রতিবেশি সিরাজুল ইসলাম জানান, অজি উল্লা মিয়া থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগপত্রে আমাকে সাক্ষি রেখেছেন, এজন্যে তাসলিমা বেগম আমাকে ১ নং আসামী করে আদালতে মামলা করেছে। সে এলাকার কাউকেই গণ্য করে না।

এই বিষয়ে প্রতিবেদক অভিযুক্ত তাসলিমার সাথে কথা বলতে গেলে, সে ঘর তালা মেরে পালিয়ে যায়। মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি কারো সাথে কথা বলবো না। যা বুঝার আদালতেই বুঝাবো।

চৌকিদার জয়নাল আবেদিন সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মামলা করতে তাসলিমাকে আমি পরামর্শ এবং সহযোগিতা করি নি। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ঘটনা সম্পর্কে জানতে আমাদের চেয়ারম্যান সাহেব তাসলিমাকে পরিষদে যেতে বলছে, কিন্তু সে কারো কথাই শুনে না।

এ বিষয়ে রূপসা উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান ওমর ফারুক এবং ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার খোর‌শেদ পাটওয়ারীর সাথে কথা হলে তারা জানান, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামলায় যাওয়াটা ঠিক হয়নি। ঘটনাটি মিমাংসা করতে তাদের পরিষদে খবর দিলেও তাসলিমা বেগম কারো কথাই শোনেন নি।

প্রতিবেদক:আশিক বিন রহিম,২১ অক্টোবর ২০২০

Share