ফেসবুক লাইভে এসে গলায় ফাঁস দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন সবুজ সরকার নামে কুমিল্লার এক যুবক। মঙ্গলবার (০৭ ডিসেম্বর) সৌদি আরবের তায়েফে ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে ‘আত্মহত্যা’ করেন তিনি।
সবুজ সরকার (২৫) মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার এলাকার টনকী ইউনিয়নের মাজুর গ্রামের মৃত জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছেলে।
‘আত্মহত্যার’ চার দিন আগে ফেসবুকে মানসিক বিষণ্নতার কথা জানিয়ে একটি পোস্ট দেন সবুজ। পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘কষ্ট আর মানতে পারি না, এই দুনিয়াতে শুধু কষ্ট পেয়ে আসলাম।’ তার পোস্টে এক মন্তব্যকারীকে তিনি রিপ্লে দিয়েছেন, ‘একটি মেয়ে আমার জীবন শেষ করে দিয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সবুজের চাচা বাবলু সরকার বলেন, ‘আমার বড় ভাই (সবুজের বাবা) বহু আগেই মারা গেছেন। ভাতিজা বিয়ের পর দেশে আসেনি। তার স্ত্রীর সঙ্গে অন্য ছেলের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে ঝামেলা চলছিল। ভাতিজা তার স্ত্রীকে মঙ্গলবার রাত ১০টায় শেষবার কল দিয়ে দেখতে চায়। কিন্তু তার স্ত্রী কোনোভাবেই রাজি হয়নি। স্ত্রী বলেছিল, সবুজ আমার কেউ না। এরপর সবুজ কল কেটে দেয়। কিছুক্ষণ পর তার আত্মহত্যার খবর শুনি। আমার ভাতিজা তার স্ত্রীর কারণেই আত্মহত্যা করেছে।’
সবুজের চাচাতো ভাই আরিফুর রহমান বলেন, ‘একসময় গাড়িচালক ছিলেন সবুজ। সেই সুবাদে বাইড়া গ্রামের এক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পাঁচ বছর আগে সবুজ সৌদি আরবে যান। সেখানে যাওয়ার আট মাসের মাথায় মোবাইলে বিয়ে হয় দুজনের। বিয়ের দুই বছর পর্যন্ত ভালো ছিল সবুজ ও তার স্ত্রীর সম্পর্ক। এরই মধ্যে সবুজ জানতে পারেন তার স্ত্রী অন্য যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। দুবার বাড়ি থেকে পালিয়েও যান। বিষয়টি জানার পরও সবুজ স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করতে রাজি হন। কিছুদিন আগে উপজেলার ত্রিশ গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে যান স্ত্রী। বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি সবুজ। এ কারণে আত্মহত্যা করেছেন।’
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, এ বিষয়ে আমি এখনও বিস্তারিত জানতে পারিনি। তবে প্রেমঘটিত একটি বিষয় আছে বলে শুনেছি। এর আগে ৪ ডিসেম্বর সবুজের স্ত্রী তার শাশুড়িকে নির্যাতন করেছে বলে একটি অভিযোগ পেয়েছি। সেটি তদন্ত করছি আমরা। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে ওই নারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।