আন্তর্জাতিক

রোহিঙ্গা নির্যাতনের ছবি দিলেই ফেসবুক আইডি বন্ধ

মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ‘জাতিগত নির্মূলের বা গণহত্যার’ তথ্য প্রকাশকারীদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিচ্ছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশে কয়েকজন সাংবাদিকও এ ঘটনার শিকার হয়েছেন। বিষয়টি স্বীকারও করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

বুধবার(২১ সেপ্টেম্বর) আমেরিকা ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা ডেইলি বিস্টের বরাতে দ্য গার্ডিয়ানে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

রোহিঙ্গাদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কাজ করেন এমন কয়েকজন এ দাবি করেছেন। তারা জানান, মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের ওপর যে পাশবিক নির্যাতন চালাচ্ছে সে ছবি ও ভিডিওগুলো ফেসবুক থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে।

শুধু তাই নয়, অ্যাকাউন্টগুলো সাময়িক স্থগিত করা হচ্ছে। এরই মধ্যে অনেক অ্যাকাউন্ট বন্ধও করা হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারে বসবাসকারী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি নিজেদের আত্মপরিচয় নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। দেশটির কতৃপক্ষ তাদের ‘রোহিঙ্গা’ হিসেবে পরিচয় দিতে নারাজ । সরকারের দাবি এরা অবৈধ নাগরিক। অন্যদিকে, রোহিঙ্গারা নিজেদেরকে মিয়ানমারের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য লড়ছিলো।

গত ২৫ আগস্ট কিছু দুর্বৃত্ত মিয়ানমারের পুলিশ চৌকিতে হামলা চালায়। এর জের ধরে সরকারি বাহিনী রাখাইনের গ্রামগুলোতে সেনা অভিযান শুরু করে। এতে নারী, শিশুসহ নির্দোষ হাজারের বেশি মানুষ নিহত ও হাজার হাজার মানুষ হতাহত হন। গ্রামের পর গ্রাম আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়। জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নিতে থাকেন।

কজাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) মতে এ পর্যন্ত ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরনার্থী বাংলাদেশের উপকূলে অবস্থান নিয়েছে।

মিয়ানমার সরকারের দাবি, রাখাইনে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করা হচ্ছে’। যদিও বিশ্বের কোন সংবাদ সংস্থা বা মানবাধিকার সংগঠনকে সেখানে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না তারা। তাই সেখানে ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যম কেন্দ্র করেই তথ্য আদান প্রদান করা হচ্ছে।

মোহাম্মদ রহিম নামে আয়ারল্যান্ডে বসবাসকারী এক রোহিঙ্গা নেতা জানান, গেলো ২৮ আগস্ট রাখাইনে নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও পোস্ট করার দায়ে তার অ্যাকাউন্ট সাময়িক বন্ধ করা হয়। এখনো তার কাছে নির্যাতনের অনেক তথ্য প্রমাণ থাকলেও অ্যাকাউন্ট হারানোর ভয়ে এখন এসব পোস্ট করা থেকে বিরত রয়েছেন।

এ বিষয়ে ফেসবুকের মুখপাত্র রুচিকা বুধরাজা বলেন, আমরা একটি নিরাপদ ও সম্মানসূচক জায়গা নিয়ে কাজ করছি, যেখানে মানুষ দায়িত্বের সঙ্গে সব ভাগাভাগি করে নিবে।

তিনি বলেন, আমরা চেস্টা করছি ফেসবুকের নিজস্ব কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড রক্ষা করার। এসব ছবি ও ভিডিও মুছে ফেলার বিষয়ে রুচিকা বুধরাজা বলেন, কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডের বাইরে থাকার কারণেই সেগুলো মুছে ফেলা হয়েছে।

নিউজ ডেস্ক
: : আপডেট, বাংলাদেশ ১২ : ০৩ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ শুক্রবার
এইউ

Share